Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকার-দৈনিক-সেরা-সম্মাননা

দৈনিক কবিতা প্রতিযোগীতাশিরোনাম-একশো চিঠি শেষে
কলমে-অতনু সেনগুপ্ত
23/09/2020
ছেঁড়া পুঁথির মালা থেকে এক,একটা করে পুঁথির সখ্যতা খুলে খুব যত্নেশুকোতে দিয়েছি রৌদ্যে,সূর্য ডোবার পর ,  যুদ্ধ শেষে  তুমি ক্লান্ত,বিধ্বস্ত হয়ে বাড়ী ফিরলে,তোমায়…

 


দৈনিক কবিতা প্রতিযোগীতা

শিরোনাম-একশো চিঠি শেষে


কলমে-অতনু সেনগুপ্ত


23/09/2020


ছেঁড়া পুঁথির মালা থেকে এক,একটা করে পুঁথির সখ্যতা খুলে খুব যত্নে

শুকোতে দিয়েছি রৌদ্যে,

সূর্য ডোবার পর ,  যুদ্ধ শেষে  তুমি ক্লান্ত,বিধ্বস্ত হয়ে বাড়ী ফিরলে,তোমায় দেবো বলে----------


জানো,গত মাসের ১০-তারিখে ঐ যে সবুজ টিয়াটা  উড়ে গেলো সে আর ফিরে এলো না---


কয়েকটা  ডানা ছেঁড়া পালক দেখি আর 

বহুযত্নে  অ্যালবামে ভরে রাখি।

মা-ও মারা গেলো ঘরটা বড্ড ফাঁকা-ফাঁকা লাগে---

জানো,দক্ষিনের ঐ ঝাউ গাছটা এবছর তুমুল বর্ষায় সেই যে ঝিমিয়ে পড়ল-

আর উঠে দাঁড়াল না--


তুমি যে বছর কার্গিলে পোস্টিং নিলে,সেই বছরই সুদীপ্ত,শিখাকে ভালবেসে বিয়ে করলো।

তারা বেশ সুখী। আমাদের মত,

কথায়-কথায় ঝগড়া করে না। তাদেরএকটা ফুটফুটে সুন্দর বাচ্চা  হয়েছে।

নাম অনিরুদ্ধ। আমার ও খুব সখ ছিল ছেলের নাম রাখব অনিরুদ্ধ।নামটা বেশ মিষ্টি।অর্থটাও ভয়ানক সুন্দর।আর তোমার নামটাও অ-দিয়ে শুরু।

বেশ মানাত।বলো?


জানো,এবছর লাবণ্য চাকরি পেয়েছে।

রমার বিয়ে হলো কলকাতায়।

পাড়ার  পুরনো দুর্গা-মন্দিরটা নতুন করে তৈরী হলো।

সদর-দরজার লোহার কপাটটায়  বড্ড মরচে ধরছে,জানলা গুলোও--------

বাড়ীর ভেতরটা  অনেকদিন হলো রং করা হয়নি।


আমি ভালো আছি।সেলাইয়ের টুকটাক রোজগারে একলা পেট 

দিব্যি চলে যায়।

তুমি ভালো থেকো।শরীরের যত্ন নিও।


এই নিয়ে একশো চিঠি লিখ্লাম।তুমি নিরুত্তর রইলে।জানি খুব ব্যস্ত।

১৩০ কোটি মানুষের রক্ষার দায়িত্ব তোমাদের স্কন্ধে অর্পিত।অপলক রাত্রি-যাপন শেষে আর সময় হয়ে ওঠেনা।


সমগ্র দেশ জুড়ে যুদ্ধের দামামা বাজছে।

কাঁটাতার জুড়ে অতন্দ্র পাহাড়া,সর্বক্ষণ গুলিবর্ষণ।

আজ তোমার কাছে একটা প্রশ্ন করি,এত  যে যুদ্ধ, এত যে রক্তক্ষয়

কি জন্য---!!!

কৈ কখনো তো শুনিনি কোন যুদ্ধে,কোন মন্ত্রি মারা গেছে,তার ছেলে,বৌ মারা গেছে।


তারা তো দিব্যি পার্লামেন্টে নিজেদের কাছা খোলা-খোলি নিয়ে ব্যস্ত থাকে।

তবে কেন এত রক্তক্ষয়--?বলতে পারো ,অনির্বান--??


জানো,তুমি শেষবার এসে যে তুলসী মন্দিরটা তৈরী করালে আমি এখন সেখানেই

সন্ধ্যা-আরতি সারি ,আর  নিঃশেষিত  সৈলতের শেষ ছাইটুকু বেঁধে রাখি আঁচলে ।

সূর্য ডোবার পর,যুদ্ধ শেষে ক্লান্ত,অবসন্ন হয়ে বাড়ী ফিরলে

তোমায় দেবো  বলে---------


জানো,লোকে বলে আমি নাকি বুকে বারুদ ঠেসে রেখেছি--!

লোকে ভুল বলে গো-


আমি তোমার অহঙ্কার-উজ্জ্বলিত  প্রদীপের ছাই গিলেছি।

আমি অনির্বানের অনির্বাপিত  আদর্শের আগুন গিলেছি।

আর--------

একশো চিঠি শেষে-

হাজার পুঞ্জিভুত ক্ষোভ মিছিলের শীতল শোক গিলেছি।

যদি কোনোদিন সূর্য ডোবার ,পর,যুদ্ধ শেষে

ক্লান্ত,অবসন্ন হয়ে ফিরে আসো সব উগরে দেবো--------!!!