বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য বিজ্ঞানী আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হলো করোনায় । করোনার সঙ্গে দশদিনের যুদ্ধে হার মানলেন বিশিষ্ট বাঙালি বিজ্ঞানী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১বছর। তাঁর প্রয়াণে শোকোস্তব্ধ শিক্ষা …
![]() |
শিল্পী - শিক্ষক নরসিংহ দাস |
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য বিজ্ঞানী আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু হলো করোনায় । করোনার সঙ্গে দশদিনের যুদ্ধে হার মানলেন বিশিষ্ট বাঙালি বিজ্ঞানী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১বছর। তাঁর প্রয়াণে শোকোস্তব্ধ শিক্ষা মহল মহল রাজ্যে সাক্ষরতা অভিযান এ তার বিশেষ ভূমিকা ছিল।
প্রাক্তন উপাচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনন্দদেব মুখার্জি আজ সকালে ৮১ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে কয়েকদিন আগে নাইটিঙ্গেলে ভর্তি হয়েছিলেন। খুবই মর্মান্তিক , বেদনাদায়ক খবর। আমার একান্ত আপনজন ছিলেন আনন্দদা।গ্রামের বাড়ি ছিল পুর্ব বর্ধমান জেলার গলসী থানার রামগোপালপুর অঞ্চলের করকোনা গ্রামে। আমার গ্রামের লাগোয়া।বহু বছরের পরিচয়।প্রায় প্রতি মাসে দু/ তিনবার ফোন করে আমার ও গ্রামের খোঁজ নিতেন।২০১৬ সালে ভোটের ফলের পর তৃনমুলী দুষ্কৃতীরা যখন আমার বর্ধমানের বাড়ী ভাঙল উনি কলকাতা হতে গাড়ী ভাড়া করে চলে এলেন পাশে দাঁড়ানোর জন্য। হাসপাতালে ভর্তির দুদিন আগেও ফোন করেছিলেন,বললেন সাবধানে থেকো।
উনার প্রাথমিক পড়াশোনা গ্রামের পাঠশালায়। তারপর কলকাতায়।জেঠতুতো দাদা ছিলেন ডাক্তার।১৯৮৩ সালে আমি তখন গলসী ১ থানা কৃষক সভার সম্পাদক।উনি গ্রামে এলেন। আমি গেলাম। বললেন জমিগুলো বর্গা করে দাও। কিছু ভাগ যেন পাই।কখন চান নি।বর্গাদারও আগ্রহ দেখায় নি।
'আওয়াজ' যখন গঠন হলো প্রথম দিন হতেই সাথী। আওয়াজ এর সব কর্মসুচিতে কলকাতায়, বর্ধমানে, দুই ২৪ প:ই: উনি হাজির থাকতেন। অভিভাবকতুল্য হয়ে গিয়েছিলেন। বিদ্যাসাগর ফাউন্ডেশন ও বিদ্যাসাগর দ্বিশত জন্মবার্ষিকী কমিটির সভাপতি ছিলেন। সাক্ষরতা আন্দোলনেও যুক্ত থাকায় ওখানেও প্রায়ই দেখা হতো। বিজ্ঞান ও শিক্ষা আন্দোলনেও নিবেদিত প্রান ছিলেন।
স্পষ্টবাদী স্বাধীনচেতা ছিলেন।মোদি ও মমতা সরকারের কাজের যুক্তিপুর্ন চাঁচাছোলা সমালোচনা করতেন। বামপন্থী সরকারের সময়ও দেখেছি কোন কাজ ঠিক হয় নি মনে হলে গঠনমূলক সমালোচনা করতেন।অথচ নিজে ছিলেন প্রকৃত অর্থেই বামপন্থী, মার্ক্সবাদী। উনার মৃত্যুতে গনতান্ত্রিক আন্দোলনের যেমন ক্ষতি হলো, তেমনি আমি হারালাম আমার সুহৃদ,সাথী দাদাকে।
সি পি আই এমের সুজন চক্রবর্তী তার টুইটে বলেছেন, "চলে গেলেন অধ্যাপক আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়। প্রবীণ, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী , প্রগতিশীল , চিন্তক প্রতিবাদী , স্পষ্টবক্তা , গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের স্বাভাবিক নেতৃত্ব ।এখনকার সময় খুবই জরুরী প্রয়োজন ছিল স্যারের।
তাঁর প্রয়ানে শোকাহত।তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও পরিজনদের জানাই সমবেদনা।