তরুন চট্টোপাধ্যায়
পঞ্চমী রাত।ষষ্ঠীর সকাল।কানে আসেনি ঢাঁকের বাদ্যি।হলো টা কি।এবার কি ঢাঁকহীন হবে পুজোর মন্ডপ।কোর্টের রায় তো এমন নয়।তবে কেন এই ছবি। আসলে ট্রেন চলেনি।লোকাল ট্রেন।যে ট্রেনে চেপে দূরের জেলা গুলি থেকে আসতো ঢাঁকির দল।হাওড়া…
তরুন চট্টোপাধ্যায়
পঞ্চমী রাত।ষষ্ঠীর সকাল।কানে আসেনি ঢাঁকের বাদ্যি।হলো টা কি।এবার কি ঢাঁকহীন হবে পুজোর মন্ডপ।কোর্টের রায় তো এমন নয়।তবে কেন এই ছবি।
আসলে ট্রেন চলেনি।লোকাল ট্রেন।যে ট্রেনে চেপে দূরের জেলা গুলি থেকে আসতো ঢাঁকির দল।হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনের আশে পাশে কানে আসতো অনুব্রত মন্ডলের ভাষায় চড়াম চড়াম।আর আমাদের ভাষায় ঢাঁক কুড়াকুড়।না শুনিনি এবার ।অন্য পুজোর আবহে বোধহয় ।তবুও পুজো হচ্ছে ।মফস্বলের পুজো তে টাকা কম।তাই যে কজন এসেছেন কষ্ট করে বাসের ছাদে ঢাঁক তুলে।তাদের সিংহভাগই কলকাতা মুখী।ফলে সে আওয়াজ শুনবো কি করে।তাই শোনা যায় নি ঢাকের বোল।চোখে পড়েনি আদুর গায়ে কাঁসি বাজাতে ঢাঁকি বাড়ির শিশুটিকেও।
এ কেমন পুজো এলো।সন্ধি পুজাতে তো ঢাঁক নাকি বাজাতেই হয়।
পুজোর আচার অনুষ্ঠান নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই।ছিলো না কখনো।তবে পুজোয় ঢাঁক বাজিয়ে ফেরার পর একাদশীর দিন ঢাঁকি বৌ এর পুজোর শাড়ি আসতো।ছেলে মেয়ে দের নতূন জামা।কারন কদিন ঢাঁক বাজিয়ে আয় তো হতো।
এ বছর কি হবে।ঢাঁকি তো ঢাঁক তুলে রেখেছে আড়কাটায়।পরিবর্তে আনাজ কিংবা মাছ নিয়ে রাস্তায় বসে।পেশা পরিবর্তনের এমন নজির এর আগে দেখেনি ভারতবর্ষ ।
জেলার বিভিন্ন পাড়ার মধ্যে ঢাঁকি পাড়াতেও ঢুঁ মেরেছি সাংবাদিক সুলভ দৃষ্টিভঙ্গি তে।না ওরা এই করোনা আবহে চান নি ফিরে যেতে আগের পেশা তে।এমনিতেই সব সময় এই বাদ্যি বাজিয়ে পয়সা আসে না।তবে দুর্গা মায়ের পুজো তে আসতো বৈকি।এবার বোধহয় মা কৈলাশ থেকে এলেও ওদের দিকে তাকান নি একবারও ।
ঢাঁকি বাড়ির বৌ এবার নতূন কাপড় পরবেন না।বাচ্চাদের আদুর গা।তাতে কি আছে।ওদের তো এই নিয়ে দিন গুজরান ।
অনেকেই ভাতা পান , সরকারী সাহায্য ।না তেমন কিছু জোটে না ওদের কপালে ।একথা ওদের মুখেই শোনা।
আসছে বছর আবার হবে।মা থাকবি কতক্ষন মা যাবি বিসর্জন।
ঠিক এই ভাবেই ওরা হয়তো বোল তুলছে , করোনা থাকবি কতক্ষন তুই যা না বিসর্জন ।
না ঢাঁকে নয়, ওদের অন্তরে।
আলগা গায়ে মাটির উঠানে ছুটে চলেছে ওদের ছেলে মেয়েরা ।সবার মুখে মাস্ক ও নেই।
আর ঢাঁকি বৌ তাকিয়ে দূরের পথে।
মহামারী শেষে আবার ঢাঁক আড়কাটা থেকে নামিয়ে তুলে দেবেন স্বামীর হাতে।