নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: দীর্ঘদিন পর ট্রেন চালু হলেও দিঘা সফর কার্যত ব্যয় সাপেক্ষ হয়ে উঠল পর্যটকদের। স্পেশাল ট্রেনে পা রাখলেই এবার তাই গুনতে হবে মাথাপিছু প্রায় ৫০০ টাকার কাছাকাছি। আর তাতেই যেন আনন্দ আবেগ-উচ্ছ্বাস এর মাঝে খানিক…
নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: দীর্ঘদিন পর ট্রেন চালু হলেও দিঘা সফর কার্যত ব্যয় সাপেক্ষ হয়ে উঠল পর্যটকদের। স্পেশাল ট্রেনে পা রাখলেই এবার তাই গুনতে হবে মাথাপিছু প্রায় ৫০০ টাকার কাছাকাছি। আর তাতেই যেন আনন্দ আবেগ-উচ্ছ্বাস এর মাঝে খানিকটা হলেও বিষাদের সুর।
নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী দীর্ঘ লকডাউনের পর দুর্গাপুজোর মরশুমে শুক্রবার থেকেই হাওড়া দিঘা স্পেশাল ট্রেন পরিষেবা চালু হয়েছে। কিন্তু যেখানে হাওড়া দীঘা লোকাল ট্রেন এর ক্ষেত্রে ভাড়া ছিল প্রায় ৫০টাকার আশপাশ। এবং এক্সপ্রেস ট্রেনের ক্ষেত্রে এই ভাড়াটা ১০০ টাকা খরচে যাতায়াত সম্ভব হত। সেখানে এই চেয়ারকার স্পেশাল ট্রেনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ভাড়া ধার্য করা হয়েছে ৪৮৫ টাকা। এবং এক্সিকিউটিভ ক্লাসের ক্ষেত্রে এই ভাড়া ১৫৯০ টাকা। যা খুব সাধারণ পর্যটকদের সাধ থাকলেও সাধ্যের অনেকটাই বাইরে বলে দাবি। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে স্পেশাল ট্রেনের চেয়ারকার সিট সংখ্যা ৫০৫। এবং ৪৮ টি এক্সিকিউটিভ ক্লাসের সিট রয়েছে। কিন্তু ট্রেনের ভাড়া কার্যত হাতের নাগালের বাইরে হওয়ায় শুক্রবার এই স্পেশাল ট্রেনের সর্বসাকুল্যে মোট যাত্রী সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৫ জন।
শুধু তাই নয়, আগামী প্রায় সপ্তাহ পর্যন্ত এই ট্রেনে পুজোর অগ্রিম বুকিং হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। যা চাহিদার থেকে অতি নগন্য বললেই চলে। কারণ যেখানে পাক পুজোতেই দীঘা, মন্দারমনি, তাজপুরের মত পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় জমতে শুরু করেছে। সেখানে এই স্পেশাল ট্রেনের অতিরিক্ত অস্বাভাবিক ভাড়াই যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন মধ্যবিত্ত পর্যটকেরা। মূলত সামর্থের বাইরে এমন ভাড়া হওয়ায় এই স্পেশাল ট্রেনের প্রতি আগ্রহ কমছে বলেই অভিযোগ যাত্রীদের। এর মধ্যে আবার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, স্পেশাল এই ট্রেনটি হাওড়া থেকে ছেড়ে এলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্টেশন হিসেবে মেছাদা ও তমলুক স্টেশনে স্টপেজ রয়েছে। তাই এক্ষেত্রে আবার তমলুক থেকে দীঘা যেতে গেলে রেল কর্তৃপক্ষের ধার্য করা ওই বর্ধিত মূল্যের একই টাকা গুনতে হবে যাত্রীদের। ফলে লকডাউন পরিস্থিতিতে তমলুক থেকে দীঘা যেতে গিয়ে পকেটের প্রায় ৫০০ টাকা খরচ করে ট্রেনে চড়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই অনীহা তৈরি হয়েছে যাত্রীদের।
তমলুকের এক বাসিন্দা আইনজীবী উত্তরশখা বেরা আক্ষেপ করে বলেন, ভেবেছিলাম ট্রেন চালু হলে কিছুটা মানসিক অবসাদ কাটাতে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে দীঘা বেড়াতে যাব। কিন্তু যেখানে তমলুক থেকে দিঘা লোকাল ট্রেন ভাড়া ২৫ টাকা খরচ হত। সেখানে প্রায় ২০গুণ খরচ করলে ট্রেনে চড়া যাবে। যেটা আমাদের ক্ষেত্রে অনেকটাই ব্যয় সাপেক্ষ। তাই কবে আবার সাধারণদের জন্য এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হবে সেই অপেক্ষাতেই রয়েছি। দীঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানান, ট্রেন চালুর বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আমরা দাবি জানিয়ে এসেছিলাম। সেইমতো পুজোর আগে ট্রেন চালু হওয়া এখন কিছুটা স্বস্তির খবর। তবে আমাদের দাবি সমস্ত সাধারণ যাত্রীদের কথা ভেবে আগের মতই ট্রেন পরিষেবা চালু হোক।
এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস জানান, দীর্ঘদিন ধরেই ট্রেন পরিষেবা বন্ধ ছিল। ফলে কোভিদ পরিস্থিতিতে পুজোর আগে এই ট্রেন পরিষেবা চালু করাটা খুবই খুশির খবর। এরপর আশাকরি ধীরে ধীরে সমস্ত ট্রেন চালু হলে এই সমস্যা মিটে যাবে।