দৈনিক কবিতা প্রতিযোগিতাবিভাগ -- ছন্দহীন গদ্য কবিতাশিরোনামঃ--- আমার ভাইফোঁটা১৮/১১/২০২০মনোরঞ্জন আচার্য্য
মন খারাপের বিকেল টাকে সঙ্গীকরে একাএকা ফিরে গিয়েছিলাম ফেলে আসা শৈশবের সেই বটবৃক্ষের ছায়ায়,
যেখানে বসত করেন গ্রাম্য দেবতা, যার …
দৈনিক কবিতা প্রতিযোগিতা
বিভাগ -- ছন্দহীন গদ্য কবিতা
শিরোনামঃ--- আমার ভাইফোঁটা
১৮/১১/২০২০
মনোরঞ্জন আচার্য্য
মন খারাপের বিকেল টাকে সঙ্গীকরে একাএকা ফিরে গিয়েছিলাম ফেলে আসা শৈশবের সেই বটবৃক্ষের ছায়ায়,
যেখানে বসত করেন গ্রাম্য দেবতা, যার এক পাশে টলটলে দীঘির জল, অন্য পাশে শস্য-শ্যামলা ধানের মাঠ,
কৈশোর ও যৌবনের কত স্মৃতি ছড়িয়ে আছে এই বটবৃক্ষের কে নিয়ে, হঠাৎ ভীষণ জলতেষ্টায় বুকের ভেতরটা যখন জ্বলে উঠলো,
জলপান করবো ভেবে হাতের কাছে যখন জল খুজছি,হঠাৎ আমার সামনে এসে হাজির হলো একটি বিশাল সাগর,
ঢেউ ভাঙতে ভাঙতে সে হেসে বললো, এই নাও আমি তোমার জন্য অনেক অনেক জল এনেছি,, তুমি যত ইচ্ছে পান করো।
তাই শুনে মোহনার দিকে আপন গতিতে ছুটে চলা নদী এসে বলল নানা তা কেন হবে এই নাও আমি তোমার জন্য মিষ্টি জল এনেছি,
নদীর কান্ড দেখে সাগরের বুক চিরে এক খন্ড মেঘ ভেসে এসে মিষ্টি বারিধারায় আমাকে ভিজিয়ে দিয়ে বলল মনটাকে এবার শীতল করো,
মুখ ঘুরিয়ে দেখি পাশে দাড়িয়ে মুচকি হেসে তার কনিষ্ঠা আঙ্গুলটি চন্দনে মেখে বলছে বনলতা আজ কিন্তু আড়ি নয় আজ শুধু ভাব,
সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি শস্য-শ্যামলা ধানক্ষেত চিৎকার করে বলছে দুঃখ করো না আমি আসছি হেমন্তিকা শেষে শীতের পরশ মেখে,
তোমাদের ঘরে নবান্নের পিঠেপুলি নিয়ে আমি আসছি সব কষ্ট দূর করতে, অবাক হয়ে চেয়ে দেখলাম সদ্য প্রসবা দুধের সন্তানকে কোলে নিয়ে মহানন্দে তারা আমার দিকে চেয়ে রয়েছে।
হাতের সেলফোনটা খুলে দেখি, আমার ফেসবুকের কত দিদি বোন কেউ মিষ্টির থালা সাজিয়ে কেউ কনিষ্ঠাঙ্গুলি চন্দন মাখিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে ভাইফোঁটা দেবে বলে,
কেউ আমায় আশীর্বাদ করেছেন, কেউ চেয়েছে আমার আশীর্বাদ না আর তো কোন দুঃখ থাকার কথা নয় আমার,
গ্রাম্য দেবতার দিকে তাকিয়ে বললাম হে ঈশ্বর পরজন্ম বলে যদি কিছু থাকে তবে তুমি আমাকে বনলতা নদী বৃষ্টি রূপে জন্ম দিও,
আমি যেন সত্ দুঃখীর হৃদয়ের যন্ত্রনা মুছে দিতে পারি কামনা করতে পারি ওদের দীর্ঘ আয়ু,
দুটো হাত তুলে মনে মনে বললাম নদী বনলতা বৃষ্টি তোমরা ভালো থেকো, ভালো থেকো, ভালো থেকো,
কলকাতা দমদম।