#গল্প_লক্ষী#অমৃতা গুহ দে
কোন এক বছরের গুহ বাড়িতে লক্ষী পুজোর আগের দিন মানে চতুর্দশীর ঘটনা। প্রতি বছরের মতো সেই বছরেও বিশাল ধুমধাম করে প্রচুর মানুষের আগমনের সাথে লক্ষীপুজো হওয়ার কথা। কিন্তু বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ দিদি ঠাকুমার শ্ব…
#গল্প_লক্ষী
#অমৃতা গুহ দে
কোন এক বছরের গুহ বাড়িতে লক্ষী পুজোর আগের দিন মানে চতুর্দশীর ঘটনা। প্রতি বছরের মতো সেই বছরেও বিশাল ধুমধাম করে প্রচুর মানুষের আগমনের সাথে লক্ষীপুজো হওয়ার কথা। কিন্তু বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ দিদি ঠাকুমার শ্বাস উঠেছে চতুর্দশীর দিন। বয়স প্রায় ১০২ বছর।
কুল পুরহিত নিদান দিয়েছেন বেশি ঘটা না করতে এবং পূর্নিমা পড়ে গেলেই মা লক্ষ্মীর পা আঁকিয়ে সাথে সাথেই জল, পাচঁ ফল এবং মিষ্টি দিয়ে বাড়ির বৌমারাই লক্ষ্মীর পাঁচালি পড়ে পুজো দেবেন। কারন কাল অশৌচ পড়ে গেলে সমস্ত ভোগ ফেলে দিতে হবে এবং কেউ আর নুন খেতে পারবেনা ওই দিন। তাই অত লোকজন না ডেকে নিজেদেরই খুব কম সময়ের মধ্যে পুজো সম্পন্ন করতে হবে।
চতুর্দশী শেষ হতে আর বেশি দেরি নেই। সন্ধ্যা ৮ টা বাজে। এক এক মিনিট যেন একযুগ লাগছে সবার। দিদি ঠাকুমাকে জবাব দিয়ে দিয়েছেন ডাঃ। নাম সংকীর্তন শুরু হয়ে গেছে। রাত ৯টায় পূর্নিমা লাগবে। কোন আয়োজন হয়নি লক্ষী পুজোর। পুরো বাড়িটা যেন নিঝুম হয়ে গেছে।
৯ টা বাজতেই বড়োমা দৌড়ে উলু আর শাঁখ বাজিয়ে ঘট বসিয়ে বাকি বৌদের ফুল , ফল আর মিস্টি আনতে বললেন। এরমধ্যে কেউ বলে উঠলো লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ দেবেনা ? চালবাটা তো তৈরি!!!!
কত্তা বাবা তার ছোট্ট দু বছরের নাতনীর পায়ের নিচে চালবাটা দিয়ে দিয়ে যতটা সম্ভব আঁকিয়ে দিলেন। অসাধারণ দৃশ্য । না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। এরমধ্যেই লক্ষীর পাঁচালি পড়ে শংখ এবং উলুধ্বনি দিয়ে পুজো শেষ হয়ে যায়। কিছুক্ষন পরেই সামান্য ফল মিষ্টি দিয়ে সব বৌরা উপোস ভঙ্গ করলো । কত্তামা সবাইকে পঞ্চামৃত দিয়ে দিদি ঠাকুমার মুখে সামান্য দিতেই একবার কত্তা মায়ের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে দিদি ঠাম্মা শেষ বিদায় নিলেন।