অবিন্যস্ত :—রাতটা প্রস্তুত হতে পারেনি ! সীমানাহীন শেষের প্রস্তুতিও ছিলো না !যাবার সময়,প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো ভোর !!ঘন অন্ধকারের কাঁটা তারের বেড়া পেরিয়ে,শব্দ বিহীন শঙ্কার লাল চোখ রাঙানো শেষ প্রহরের দৃষ্টি এড়িয়ে,শূন্যতাবোধ আর অনিশ্চয়…
অবিন্যস্ত :—
রাতটা প্রস্তুত হতে পারেনি !
সীমানাহীন শেষের প্রস্তুতিও ছিলো না !
যাবার সময়,প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো ভোর !!
ঘন অন্ধকারের কাঁটা তারের বেড়া পেরিয়ে,
শব্দ বিহীন শঙ্কার লাল চোখ রাঙানো শেষ প্রহরের দৃষ্টি এড়িয়ে,
শূন্যতাবোধ আর অনিশ্চয়তার ত্রাসের বেড়া পেরিয়ে,
দেখা হবে দু'জনের তিরতির করে বয়ে যাওয়া,
প্রাণ কাঁপানো বাতাসের মোহনায়,
মিশে যাবে একে অপরের সাথে,
মিশে যাবে পরস্পরের ভালো মন্দ,
শিরা,উপশিরা,ধমনীর প্রবাহে !
শান্ত দীঘির মতো দু'চোখ থেকে অবিরাম অভিমানে ঝরে পড়া শিশিরে,
মেটাবে সে রুক্ষ পিপাসার সুসজ্জিত তেষ্টা !
নাহ!!! আসেনি সে ভোর !!
রাখেনি প্রতিশ্রুতি !
প্রতীক্ষার সোনালি অসুখে,
রাতের শরীর থেকে ঝরে গেছে যৌবন,
নির্জন দীঘির দু'চোখে জ্বলেছে অবিশ্বাস আর ক্ষোভের অনল !
ভগ্ন প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে,
বিবর্ণ,পাংশুটে চামড়ার ভাজে ভাজে জমেছে শুধু শব্দহীন
সচেতন প্রতিবাদের ছাই !
সব রাতের সাথে কি ভোরের দেখা হয় ?
সব ভোর কি প্রতিশ্রুতি রাখে ?
অনিশ্চয়তার আশঙ্কায়, থরথর করে কাঁপা অচেনা অবিন্যস্ত পৃথিবীতে,
অনিদ্রার অসুখে ভোগা রাতের শিয়রের খোলা জানালা দিয়ে,
আসে না রাতের কাছে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ ভোর !
রক্ত প্লাবিত শষ্যক্ষেতে,
পড়ে আছে ছত্রভঙ্গ সচেতন প্রতিবাদের শবদেহ !
ভোরের ভগ্ন প্রতিশ্রুতির প্রায়শ্চিত্তের অবিন্যস্ত এলো চুলে পুড়ে যাওয়া বিষন্ন অঙ্গারের ছাই !
তবুও ভোর হয় !
ভাঙনের শব্দরা থেমে যায় !
ভেসে আসা ধ্বনির নৌকায় ফিরে আসে বিশ্বাস আর বোধ !
অসময়কে কোমল বিন্যাসে বেঁধে,
ফিরে যাবে ভোর অবিন্যস্ত রাত্রির কাছে !
শঙ্কার লাল চোখকে, উপেক্ষা উপহার দিয়ে,
অবিন্যস্ত রাত্রির সাথে মিশে যাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভোর !
মিশে যাবে রাত্রির নির্জন দীঘির চোখের বিন্যাসে !!
আর তখন...অশরীরির নীরব প্রতিবাদে,
ভেঙে যাবে সীমানার ঘন কাঁটা তারের বেড়া,
সেই রক্ত প্লাবিত শষ্য ক্ষেতে,
পড়ে থাকবে সোনালী অসুখে মৃত,
ত্রাস আর আশঙ্কার শবদেহ !
অভিমানী রাতের অবিন্যস্ত এলো চুল ,
স্পর্শ করবে ভোর !
আর তখন...... ভোর হবে !!
দেবাশিস্ বসু