Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

কবি, সাহিত্যিক শুভ্রজিৎ মন্ডলের কবিতা গুচ্ছ

কবিতাজীবন থেমে থাকেনা (গদ্য কবিতা) 

যদি তুমি কখনো আমাকে ভুলে যাও, ভুলে যাও এই মহত্তর সত্তাকে...মনে করবো কিছু সময়ের জন্য এক স্বর্গীয় আলোক শক্তি এসেছিল, আমার শেষ রাত্রির স্বপ্নে। 
হয়তো আমাকে সাময়িক ভাবে বাঁচিয়ে দিয়ে গেছে...দিয়ে গে…


কবিতা

জীবন থেমে থাকেনা (গদ্য কবিতা) 



যদি তুমি কখনো আমাকে ভুলে যাও, ভুলে যাও এই মহত্তর সত্তাকে...

মনে করবো কিছু সময়ের জন্য এক স্বর্গীয় আলোক শক্তি এসেছিল, আমার শেষ রাত্রির স্বপ্নে। 


হয়তো আমাকে সাময়িক ভাবে বাঁচিয়ে দিয়ে গেছে...

দিয়ে গেছে কিছু সান্ত্বনা, কিছু ভালো কথা আর বলে গেছে গোপনে বাঁচার কিছু নতুন পথ।


মনে করার চেষ্টা করবো তোমার দেওয়া নীতিকথাগুলি।  

মনে করবো জীবনটি এক মহান দেবদূতের দেওয়া উপহার।

তুমি ছিলে সেই দেবদূত!

যে দিয়ে গেছে ক্ষনিকের দুঃখকে বহন করার মতো অনেকটা মহৌষধী। 


আজ সত্যি তুমি চলে গেছো , মনে পড়ে তোমার সেই গভীর জীবনবোধের অনেক উপদেশ।

তুমি জানো কখনো কখনো আমি নিরুপায় হতে পারি...

তুচ্ছ কারণে হাসতে হাসতে দিতে পারি এই মানব প্রাণ। 

তবে আমি কখনো লোভাতুর ক্ষুধিত চিত্তে তোমার চোখে চোখ রাখিনি, 

ক্ষুধাতুর বোধ মানুষ কে ভীষণ ভাবে আমানুষ করে দেয়।


আমি সত্যি ভালোবাসা বুঝি যেখানে স্বাধীনতা অবলীলায় স্থান খোঁজে।


বিশ্বাস লুকিয়ে থাকে নিজের প্রতি, একটু একটু করে একদিন সেটাও নিঃশেষ হয়ে যাবে। 


তবে আস্থা রাখি তোমার প্রতিক্ষায় দিন গুনতে থাকা সেই নিশ্চল ব্যাকুলতার কাছে। 

স্মরণ করি ক্লান্তিহীন ইচ্ছাশক্তির দৃঢ়তাগুলিকে, তারা কতোটা কঠিন ছিল...

সেখানেও ধীরেধীরে মরচে পড়েছে।


মানুষ কি ভাবে জানি না,

তবে আমি জানি কখনো কখনো সব আস্থাই পরাজয় স্বীকার করে নেয়।

তখন মুক্তির আপ্রাণ চেষ্টা অজ্ঞাতে চেতনায় ফিরে আসে–

এটাই জীবনের সব চেয়ে বড় সত্যি।


ক্ষুধা, বা তীব্র একাত্মতা, 

... তাকে পেতেই হবে।

এই ধারনাকে আমি ভালোবাসা বলে মনে করি না।

এটি হলো জীবনের চরমতম স্বার্থপরতা।

যেখানে কেবল আমি আমার ইচ্ছা আর পছন্দ কে প্রাধান্য দিয়েছি। 

অন্য জনের যে মন আছে, ভালোলাগা আছে,

আছে হাজার পরিবর্তনশীলতা।

এগুলি আমার কাছে কোন গুরুত্ববহন করে না।

এটি যে প্রেম নয়,এক ভয়ংকর মারণ অসুখ।


তাই আমার ধারণা আবার বদলাতে শুরু করে!

আমি জীবনের হয়ে নতুন অভিমুখে পথ চলতে শুরু করি...


সমাপ্তি 


রচনা :–শুভ্রজিৎ মণ্ডল, ০৩/১১/২০২০

ভাণ্ডারখালী,Hingalganj, উত্তর ২৪ পরগণা:

************ 

কবিতা :-সভ্যতার মুখোশ 

 কলমে :- শুভ্রজিৎ মণ্ডল 


বন্ধু, নক্ষত্রলোক হতে দেখা যায় মানব সভ্যতার এই জীবন্ত শান্তির পথ।

বহু প্রচেষ্টায় গড়া অগণিত রাজপথ, শ্বেতশুভ্র সারি সারি গগনচুম্বী ইমারত।। 


মনে রেখো এই প্রগতির অন্তরালে সহস্র সহস্র হয়েছে নিঃস্বার্থ বলিদান 

রক্তক্ষয়ী প্রত্যাঘাত আর শোষকের বজ্র শেলে।

সভ্যতার ধোঁয়াশে গহ্বরে চাপা পড়ে যুগে যুগে কতো অজানা বঞ্চিত জীবন 

মুক্তি পাবেনা যারা কোনদিন ভোগের আস্তরণ ঠেলে।। 


বন্ধু, আজ প্রবঞ্চিত শ্রমিকের বিচ্ছুরিত মুক্তিরধ্বনি হয়েছে ক্ষীণ 

দীর্ঘকাল ছলনার যুদ্ধে ক্লান্ত তারা, হারিয়েছে ছিল যতো মুষ্টিশক্তির দৃঢ় বিশ্বাস। 

কখনো কৃষকের ঘরে আগুন জ্বলে না, ধুকতে ধুকতে যারা মরে প্রতিদিন 

একটু একটু করে ক্ষয় হয় জীবনের সঞ্চিত সব ইচ্ছাশক্তির দক্ষিণী বাতাস।। 


প্রথম যে দিন পাথরে পাথরে হয়েছিল ঠোকাঠুকি, জ্বলেছিল আগুন 

সে এক রূদ্ধ দশার শেষ, এক মহাবিপ্লব। 

চেতনার অন্ধকার ভেঙে কোন এক ঊষার সূর্যদয়ে হবে 'সে দিনের পুনরুত্থান '

আজ বুঝি ভ্রান্ত সে সব, ইতিহাস শ্রেষ্ঠ প্রলাপ।। 


আহা! কতো সুন্দর, কি অপরূপ সৃষ্টি্ চন্দ্রসূর্য জয়ী এই কপট মায়া জালে। 

আকাঙ্ক্ষিত ঔদ্ধত্য চায় প্রাচুর্যের নিঃশেষ না-হওয়া স্বর্ণখনি আপন পায়ের তলে।।


ওহে অতৃপ্তির সভ্যতা.…....


আমি প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর, আমি কর্কশ, আমি নিষ্ঠুর তাই আমি শৃঙ্খলহীন 

হোক না কঠিন শাস্তি আমার, হোক না লক্ষ মৃত্যুদণ্ড। 

তবু আমি বিভীষিকা ছাগল মুখোশে ঢেকে মেকি শান্তির গান 

গাইব না কখনো, হয়ে তোমার মতো জগৎশ্রেষ্ঠ ভণ্ড।। 


তুমি স্বপ্ন প্রেমী, পুরুষত্বের সংঘাতে জর্জরিত তবু শখের বশে করো সাধুধর্মের পূজা 

সত্যকে আড়াল রেখে মহত্ত্বের বাণী খুঁজে হতে পারো মহামানব। 

নির্মম হলেও চরম সত্যি যে তোমার ওই প্রজ্ঞাশূণ্য অচেতন জ্ঞানে ধীরে ধীরে প্রশ্রয়ে বেড়ে ওঠে বাসনার এক রাক্ষুসে নরদানব।।


তবে এই নিস্তব্ধ মরণ চুক্তির আছে কোন যুক্তি মিথ্যে সভ্যতা রক্ষার অঙ্গিকারে।

যদি মনুষ্যত্বের বিবেক চিরকাল বন্দী থাকে কোন ধূর্ত প্রবঞ্চকের লাস্যময়ী মৃত্যুরদ্বারে।


                🌴🌴‍ সমাপ্তি 🌴🌴


 ১৩ / ১০ / ২০২০

Hingalganj, 743439, ভাণ্ডারখালী।

********************

 কবিতা :-- অজ্ঞাত আস্তানা (গদ্য কবিতা) 

কলমে :-- শুভ্রজিৎ মণ্ডল 

তারিখ :-- ২১/১১/২০২০ (রাত্রি ২:২৫)

          

একে একে জীবনের বন্ধনগুলি,

              যখন ছিন্নভিন্ন হতে থাকে

                  ভীষণ নিঃসঙ্গতার গোপন ক্ষুধার্তবোধে।

 তখন এক অজানা ভরসায়

                                     তোমার স্মরণে অন্তরাত্মা,

   পুনরায় ব্যর্থ হাসি খুঁজে পাওয়ার 

                                 অদম্য প্রত্যাশায় দিন গোনে। 

যখন আমি সমাজ থেকে গোষ্ঠীশূণ্য হয়ে পড়ি,

                                       অদৃষ্টের নিষ্ঠুর পরিহাসে!

অসহায় পরিবার আমায় আত্মীয়হীন করে দেয়

                               নিন্দুকের কর্কশ কন্ঠস্বর শুনে।


               যখন বন্ধুদের দীর্ঘ উপেক্ষা... 

   আমায় প্রিয়জন ত্যাগের গ্লানিতে নিঃশেষ করে,

প্রতারিত ভালোবাসা নির্বাক অন্ধকারে মুখ ঢাকায়।

তখন আবার বহুকাল নিদ্রা যাওয়া

                                স্মৃতিতে তোমার বিদ্রোহ ঘটে!


প্রচণ্ড আঘাত, অবাধ্য ইচ্ছাগুলির করুণ আর্তনাদে-

তোমারই নূপুরের ঝুমঝুম পদধ্বনি বেজে ওঠে।

রক্তপ্রবাহে শিরায় শিরায়, বিশৃঙ্খল স্নায়ু জুড়ে... 


তোমার সহমর্মিতার জীর্ণ হওয়া

              পুরাতন আস্তানা ফিরে পাওয়ার

                                           ভীষণ প্রত্যাশা জাগে। 


              আবেগ-অনুভূতি, লোভ-মোহ,

জীবন ও প্রেম, কোনটি ঠিক আর কোনটি ভুল?

এই ঠিক-ভুলের গোলক ধাঁধায়

                             আমি বিষন্ন হতে থাকি প্রতিদিন।

অনাদরে কাটে প্রহর, কাটে সপ্তাহ 

                             আর কাটে অসহ্য বছরগুলি--

ভ্রান্তি ভরা কর্মের স্তূপ হিমালয় হয়ে দাঁড়ায়     

                                       ধীরে ধীরে মাথার উপরে। 

সেই এক প্রশ্নেই নীরব হতে হয়,

                   তোমার আস্তানার নব উদ্বোধন কবে?


রোজ নিষিদ্ধ খাবার খেতে খেতে

                          যখন অসুস্থ শরীরে শেষ ক্ষয় ধরে।

তখন মৃতপ্রায় স্বাদকোরক গুলি,

                    তোমার হাতের ছোঁয়ায় সিদ্ধ

                                     কলমি লতার দুঃস্বপ্ন দেখে।

যখন যুক্তির রাজপথ, অলিগলি চৌরাস্তার জঙ্গলে 


      হাঁটতে হাঁটতে বিষাদময়

                                হয়ে ওঠে দূর্বার চেতনা শক্তি!

তখন ভগ্নহৃদয়ে, সান্ত্বনার

                    অন্তিম আস্তানায় ফিরে যেতে চাই ...

অশ্রুসিক্ত আঁচলের নীচে

              লজ্জায় বিবর্ণ মুখখানি আত্মগোপন করে। 


আজও একটু শান্তি খোঁজার চেষ্টায়,

তোমার গল্প বলা নীলাভ রাত্রি-- 

আমার একমাত্র নিরাপদ আশ্রয় হয়ে ওঠে।

                  আমি নিশ্চিন্ত মনে ঘুমোতে চেষ্টা করি!

কে তুমি অজ্ঞাত পরাশক্তি?

                                সকল বাসনায় নিরন্তর বসে!!

এক তীব্র আবেগের বিমূর্ত কল্পনায় ভাসতে ভাসতে

আমার অবচেতন ধারণা

          তোমারই প্রচ্ছন্নতায় চিরকাল আটকে থাকে। 


             সমাপ্তি ➤


ভাণ্ডারখালী, উত্তর ২৪ পরগণা, ৭৪৩৪৩৯