কবিতা :- মুক্তির পথকলমে :- শুভ্রজিৎ মণ্ডল তারিখ :- ১৩/১১/২০২০
অনেক লিখতে হবে, অনেক নতুন কথা শিখতে হবে,অনেক গাইতে হবে দুঃখে ভরা প্রান্ত বাসীদের জয়গান। তবে তুমি হবে বিজয়ী, পাবে বঞ্চিত জীবনের নব-নব স্বাদ...তৃপ্ত হবে নির্লজ্জ ক্ষুধা, …
কবিতা :- মুক্তির পথ
কলমে :- শুভ্রজিৎ মণ্ডল
তারিখ :- ১৩/১১/২০২০
অনেক লিখতে হবে, অনেক নতুন কথা শিখতে হবে,
অনেক গাইতে হবে দুঃখে ভরা প্রান্ত বাসীদের জয়গান।
তবে তুমি হবে বিজয়ী, পাবে বঞ্চিত জীবনের নব-নব স্বাদ...
তৃপ্ত হবে নির্লজ্জ ক্ষুধা, ওই আস্তাকুঁড়ে ধুকতে ধুকতে বাঁচে যে শতশত অস্থির প্রান।
বন্ধু!! ত্যাগী শ্রেষ্ঠ সত্য, পারলে ধরো সেই পথ,
কর্মে হও নির্ভীক পাবে মুক্তি আলোর সন্ধান।।
আমৃত্যু ন্যায়ের ধ্যানে মগ্ন যে নিষ্পাপ শিশু,
কেন সে সুষুপ্তির নিদ্রায় আচ্ছন্ন হয়েছে আজ
শুনতে শুনতে ধূর্তের ভন্ড অপবাদ!
খুলে ফেলো জীর্ণ মুখোশ, এসেছে সেই তিমিরকালো রাত্রি...
ধ্বংস করো দূর্বার বজ্রাঘাতে মানবতার দীপ্ত কণ্ঠে রূদ্ধ হয়ে আছে যত স্বার্থ-ভয়ের প্রমাদ।
সরল কথা বলো আরো সহজ করে, সত্য হল বিপ্লবের জ্যেষ্ঠপুত্র,
বাঁধো এই বিশ্বাস নিষ্পেষিত দাসত্বের প্রতিবাদী প্রাণে।
যদি বলো পৌশাচিক গহ্বরে পদেপদে রহস্যের অজ্ঞাত ফাঁদ, ভাঙ্গবে কোন কৌশলে
সেই পথের সন্ধান চিরকাল বঞ্চনার আগুনে জ্বলতে থাকা ভবিষ্যৎ প্রজন্মই জানে।
ছাড়ো ধর্মের অন্ধত্ব, ভাঙ্গো ভোগ-পিপাসু শত্রুর লাবণ্যে ভরা কদর্যরীতি।
যায় যদি থমকে দাঁড়িয়ে সময় তবু ছাড়ো স্বার্থ সন্ধানী বন্ধ্যা রাজনীতি।
কি হবে বৃথা শান্তির স্বপ্ন দেখে যেখানে শোষণে নির্বিকার থাকে জীবনের মৃত্যু পরিনতি।
অন্তরে যে রাখে বিষ ব্যঙ্গ মুখে ধরে ভক্তির জয়গান...
জেনে রেখো বিনাশেই হবে তার রসময়ী সৃষ্টির শেষ পরিনাম।
হে সভ্যতা, মানুষকে বলো ক্ষমতার বাসনা যে উগ্র লোভের শিকার
ভয় কি বলো যদি হয় ত্যাগের ধর্মে মহত্ত্বের সহস্র বদনাম।
,,,,,,,,সমাপ্তি,,,,,,,
বিভাগ- কবিতা
শিরোনাম- নির্জন প্লাটফর্ম
কলমে- শুভ্রজিৎ মণ্ডল
তারিখ-১৫/১১/২০
একটি জনশূন্য প্লাটফর্ম, রেললাইনের উপর বসে পড়েছি,
দগ্ধ কাতর দুপুরের নীরব নিস্তব্ধতায়।
হ্যাঁ, হতেও পারে সে ছিল আমার নিষ্ফল স্বপ্নে কল্পনার প্রলাপ মাত্র,
যেন মুমূর্ষু হয়ে পড়েছি, ভীষণ রকমের এক অগ্রিম বিপদের আশঙ্কায়।
থমকে গিয়েছে চলমান সকল স্পন্দন, স্থীর সময়
গাছপালা, প্রকৃতি কেমন যেন মৃত্যুর লেলিহান শিখা।
চারিদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে শুধু অব্যক্ত হাহাকারের উদবাস্তু মুখ,
দেখি সব টকটকে লাল তাজা রক্তে মাখা।
মাথার উপরে মধ্যাহ্ন সূর্যের প্রখর উত্তাপ,
তবু কেন মনে হয় সর্বত্র তিমির রাত্রির শুনশান গুমট অন্ধকারে ঢাকা।
তবে এই কি ছিল সে দিনের সেই প্রথম প্রেমের নিষ্পাপ উচ্ছ্বাস,
যে গোপনে একটু একটু করে রচনা করে ছিল ব্যর্থতার কলঙ্কিত ইতিহাস।
পায়ের নীচে গরম পাথর, অমসৃণ রেললাইনের রাস্তা...
যেন তৃষ্ণায় ক্লান্ত পথচারীরা মুক্ত আকাশের দিকে বিভোর দৃষ্টিতে দেখছে ধ্বংসের পূর্ব পরিহাস।
হয়তো খুব সন্নিকটে দাউদাউ করে জ্বলছে করুণ আর্তনাদে পৃথিবীর অন্তিম পবিত্রতা।
সাবধান! সাবধান হও ধরিত্রী ভূমি হলেও হতে পারে এই ছিল সৃষ্টিকে বাঁচানোর শেষবার্তা।
কী হবে সত্যি জেনে, যদি শৃঙ্খল ভেঙ্গে জনারণ্যে মুক্ত হয় ভদ্রবেশী শোষনের যতো রাক্ষুসে অনুভূতি।
কী হবে বলো নিঃস্বার্থ ভালোবেসে, যদি কখনোই শান্তি না খুঁজে পায় জীবনের শেষ পরিনতি।
জেনে রেখো এই বিশ্ববাসী একদিন দূর আকাশের তাঁরা হয়ে আমিও নীরব হয়ে দেখবো,
শান্তির নিসর্গ তৃষ্ণায় ছটফট করবে অবোধ মানুষ এক অন্য বর্বরতায়।
হিংসার দাবানলে সভ্যতার মনুষ্যত্ব হয়েছে জ্বালানী আজ,
গড়তে মৃত্যুপুরী পাহাড় প্রমাণ প্রাচুর্যের নেশায়।
সমাপ্তি ➤
ভান্ডারখালী, উত্তর ২৪ পরগণা, ৭৪৩৪৩৯
কবিতা - হারিয়ে ফেলার ভয়
কলমে- শুভ্রজিৎ মণ্ডল
তারিখ - ০৭/ ১১/২০২০
না, আমি কিছু মনে করিনি, বিশ্বাস করো মনে করার মতো স্পর্ধা আমার ছিল না।
কখন, কবে, কেন কারণটি জানা নেই, আর জানলেও ভুলে যেতে চাই সেই মুহুর্তটাকে...
যদি বলো মানবিকতা, সে অনেক আগেই নির্দ্ধিধায় বিসর্জিত হয়েছে।
সৌজন্যবোধের হিসেবগুলি না-হয় পড়ে থাক বাক্সে বন্দী হওয়া কোন গোপন খামে।
অন্তত আমার মুখে বেমানান এই কথাগুলি
শুনলে তুমি ভীষণ রাগ করবে, হয়তোবা আমায় ভুলে যেতে পারো...
অথবা ঘৃর্ণার প্রচ্ছন্ন আস্তরণে ঢেকে দিতে পারো ছাপোষা মধুর সম্পর্কটিকে।
... বন্ধু, আমি যে সব হারানোর শেষ গন্ডিটাও নির্বিঘ্নে অতিক্রম করে ফেলেছি।
এখন রাগ করলে করতে পারো, কোন বাঁধা নেই!
স্বেচ্ছায় মুছে যদি যেতে চাই মনে, নিষ্ঠুর ভালোবাসাহীন সম্বোধনে,
মুছে দিও...
সামান্য কৃতজ্ঞতা বোধেও একফোঁটা পড়বেনা শুষ্ক অশ্রুধারা
নীরবে জ্বলতে থাকা আগুনের এই পবিত্র মাটিতে।
আজ যে কারো অপেক্ষায় ঘড়ির টিকটিক শব্দ গুনতে গুনতে দিন শেষ হয়না আমার–
সময়টা খুব সংক্ষিপ্ত, চেতনায় এক হওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখা বোধহয় বৃথা।
গল্পের কাহিনী যে অসীম, শেষ খোঁজা সম্ভব হয়না
তাই মিথ্ হয়ে নিষ্পাপ প্রণয় ধরা পড়ে কঠিন বাস্তবতায়।
হ্যাঁ, আমি এমনিই শৃঙ্খলাশূন্য, তোমার চোখে নির্বোধ বিদ্বেষী
হয়তো হবো আরো অন্য কিছু....
তুমি চাইলে যাই খুশি আমাকে নিয়ে ভাবতে পারো
এইটুকু স্বাধীনতা প্রতিটি মানুষ পেতে চায়।
এর পরেও কি বিশ্বাস করো....
সেদিনের স্বার্থপরতা ছিল আগাগোড়া প্রত্যাশার শক্ত খোলশে মোড়া
অযাচিত ভাবে অনেকটা পেয়ে এক নিমেষে হারিয়ে ফেলার কাপুরুষতা।
জীবনে যখন যাই চেয়েছি, থেকে গেছে অপূরণ ইচ্ছা রাশি…
তবু ধরে নেই নিজেকে সান্ত্বনা দিতে সব পছন্দেই আমার ভুল ছিল।
এখনো যদি তোমার চেতনা জুড়ে সভ্যতার কদর্থ ঘুণ ধরে থাকে,
তবে মনে করো, আমি মুক্ত হাওয়ার নির্লিপ্ত জীব,
আমার নেই কোন হারিয়ে ফেলার বাধ্যবাধকতা।
তাই আমার ভালো-মন্দের বিচার বোধহয় এক ভীষণ রকমের বিলাসিতা।
সমাপ্ত ➤
রচনা :– শুভ্রজিৎ মণ্ডল, ভাণ্ডারখালী, ৭৪৩৪৩৯
উত্তর ২৪ পরগণা, Hingalganj, ( 07-11-2020)