তরুন চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা কখনো কখনো বাস্তব জীবনের ছবিও হার মানায় সেলুলয়েডের ফ্রেম কেও।সিনেমার মতো হলেও সেটি হয়ে ওঠে এক সত্য ঘটনা।আর সেই ঘটনা কে নিয়ে ওঠে শোরগোল।ঠিক এমনটি ঘটলো মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন পুলিশ কর্তা মনীশ মিশ্রের জীবনে।আ…
তরুন চট্টোপাধ্যায় , কলকাতা
কখনো কখনো বাস্তব জীবনের ছবিও হার মানায় সেলুলয়েডের ফ্রেম কেও।সিনেমার মতো হলেও সেটি হয়ে ওঠে এক সত্য ঘটনা।আর সেই ঘটনা কে নিয়ে ওঠে শোরগোল।ঠিক এমনটি ঘটলো মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন পুলিশ কর্তা মনীশ মিশ্রের জীবনে।আর সেই জীবন কাহিনী জুড়ে রয়েছে পনেরটি বছর ধরে পথে পথে ভবঘুরের জীবন।আর রাত নামলে ফুটপাতের বিছানায় শয্যা ।
গত সপ্তাহে মধ্যপ্রদেশের ভোট গননা শেষ করে তাঁকে খুঁজে পেলেন তাঁরই দুই সহকর্মী ।ডি এস পি রত্নেশ সিং ও বিজয় সিং ভাদোরিয়া।টান টান উত্তেজনার মধ্যে চিনতে পারলেন একদা প্রাক্তন সহকর্মী কে।পথের জীবন বোধহয় শেষ হলো মনীশ মিশ্রের ।
আজ থেকে একুশ বছর আগে পুলিশের কাজে যোগ দিয়েছিলেন মনীশ মিশ্র।সেটি ছিল 1999 সাল।দক্ষ সুট্যার হিসাবে নাম ডাক ও ছিল যথেষ্ট ।বিভিন্ন থানাতে কাজ ও করেন মনীশ।কিন্তু 2005 সালে মধ্যপ্রদেশের দাতিয়া থানাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।কাজকর্মে ছিল অগাধ মনোনিবেশ ।কিন্তু দাতিয়া থানা তে থাকতে থাকতে একদিন হঠাৎ নিঁখোজ হয়ে যান মনীশ মিশ্র।খোঁজ খোঁজ করেও সন্ধান করতে পারেনি পুলিশ ।তারপর যা হয় ।সবাই ভুলতে বসেছিল মনীশ কে।
কিন্তু বিধির বিধান।পথে পথে পনের বছরের বেশি ভবঘুরের জীবন কাটানো।চেয়ে চিন্তে খাবার খাওয়া ।একদা পুলিশের উর্দি ছেড়ে পথে কেন তার উওর আজও অধরা।যাঁর এক কথায় আইন রক্ষা করতে পুলিশ পথে নামতো তিনিই পনের বছর লুকিয়ে লুকিয়ে পথেই কাটালেন জীবন।অদৃষ্টের পরিহাস ছাড়া কি আর বলা যাবে।
কিন্তু সেই জীবন আজ শেষ।সে আর এক গল্প ।অবশেষে না খুঁজতে গিয়ে ও সন্ধান পাওয়া গেল মনীশ মিশ্রের ।আর পেলেন তাঁরই দুই সতীর্থ ।
মধ্যপ্রদেশের ভোট গননার দিন রাতে ঝাঁসি রোড ধরে গাড়িতে ফিরছিলেন ডিএসপি রত্নেশ সিং ও বিজয় সিং ভাদোরিয়া।দেখতে পেলেন এক মধ্যবয়সী ভবঘুরে খাবারের সন্ধানে পথে পথে ঘুরছেন।দাঁড়িয়ে গেলেন দুই পুলিশ কর্তা ।এগিয়ে দেন খাবার।পায়ে জুতো নেই বলে কিনে দিলেন জুতো।তারপর ঠান্ডা তে কাঁপছেন দেখে কিনে দিলেন জ্যাকেট ও।
পুলিশের চোখে বুঝতে পারেন এই ভবঘুরে সাধারণ কোন মানুষ নয়।তাই চললো প্রাথমিক ভাবে আলাপ আলোচনা ।আর তা থেকেই বার করে আনলেন পেশা গত দক্ষতায় মনীশ মিশ্রের আসল পরিচয় ।জানা গেল এই মনীশ ই সেই মনীশ যিনি ছিলেন তাদেরই সতীর্থ ।
আজ থেকে পনের বছর আগে নিখোঁজ হয়ে গিসলেন দাতিয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকার সময়েই।নানা ভাবে ক্রশ চেক করে সন্দেহের নিরশন করে বন্ধু কে বুকে জড়িয়ে ধরলেন সেদিনের দক্ষ শুট্যার মনীশ মিশ্র কে।মিলন হলো বন্ধুর সঙ্গে ।বিধিলিপি কে বা খন্ডন করে।
বর্তমানে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে মনীশ মিশ্রের ভবঘুরে জীবনের অবসান করলেন দুই পুলিশ অফিসার ।
পনের বছর ধরে রাস্তায় রাস্তায় ঘোরা মনীশ মিশ্রের কাছে এ যেন এক দিবা স্বপ্ন ।
সেলুলয়েডের ফ্রেমকেও হার মানিয়ে দিল পুলিশ কর্তার এই পনের বছরের জীবন বৃত্তান্ত । তিনি এখন ভালো আছেন। আর খাবারের খোঁজে পথে পথে হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে না তাঁকে ।