Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-পত্রিকার-দৈনিক-সেরা-লেখনি-সম্মাননা

[11/9, 7:03 AM] শৈলেন মন্ডল ডিমারী: #ধারাবাহিক #পৌরাণিক শিরোনাম: #একটি_বিস্মৃত_বলিদানের_কাহিনী কলমে: #অমৃতা_ব্যানার্জী
                          (প্রথম পর্ব) সূর্যাস্ত হয়েছে। সেই দিনের মত যুদ্ধ বিরতির সূচক হয়ে ধ্বনিত হল শঙ্খ। কিংকর্…



[11/9, 7:03 AM] শৈলেন মন্ডল ডিমারী: #ধারাবাহিক
#পৌরাণিক
শিরোনাম: #একটি_বিস্মৃত_বলিদানের_কাহিনী
কলমে: #অমৃতা_ব্যানার্জী

                          (প্রথম পর্ব)
সূর্যাস্ত হয়েছে। সেই দিনের মত যুদ্ধ বিরতির সূচক হয়ে ধ্বনিত হল শঙ্খ। কিংকর্তব্যবিমূঢ় সৈন্যরা গূঢ় আলোচনায় ব্যস্ত। আজকের পরাজয়ের দুঃসংবাদ কে পৌঁছবে মহারাজের কাছে? অবশ্য এই দুঃসংবাদ তাদের মহারাজের কাছে নতুন নয়। বহুকাল আগেই তাদের রাজ্যের সূর্য অস্ত গেছে। মহারাজ মনে হয় প্রত্যহ দুঃসংবাদের অপেক্ষায় প্রহর গোণেন। কিন্তু এতদিন তাদের মত সামান্য সৈন্যদেরতো এই দুরূহ কাজ করতে হয়নি। সেনাপতি সর্বদা দুঃসংবাদের বার্তাবাহক রূপে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু আজ স্বয়ং সেনাপতি যে রণাঙ্গনে নিজের আহুতি দিয়েছেন! 
        
                      নারীরা একে একে মুছে ফেলছে তাদের সৌভাগ্যের চিহ্ন। কারোর নয়ন অশ্রুসিক্ত, কারোর আবার হৃদয় প্রাঙ্গণ শুষ্ক। পিপাসার্ত মরু পথিকের ন্যায় উদভ্রান্ত শিশুর দল খুঁজে বেড়াচ্ছে তাদের পিতাকে। অগণিত বীর সৈনিকের চিতার আগুনে চারিদিক তপ্ত।
                      পতনমুখী রাজ্যের শুষ্ক প্রান্তরের দিকে দৃকপাত করে দাঁড়িয়ে আছেন বৃদ্ধ মহারাজ। " মহারাজ, মহারানী ভোজন কক্ষে আপনার জন্য প্রতীক্ষা করছেন" সেবকের কণ্ঠে সম্বিৎ ফেরে তাঁর। ইশারায় জানিয়ে দেন, তিনি ভোজন করবেন না।
                      পুর নারীদের ক্রন্দনে চারিদিক উদ্বেলিত। এমতাবস্থায় প্রজা বৎসল সম্রাট রাজভোগ গ্রহণ করবেন! এ অসম্ভব।
                       ভারাক্রান্ত মনে সিংহাসনে বসলেন মহারাজ। সকালে দানের আশায় আসা বীরগতি প্রাপ্ত সৈনিকের বিধবা স্ত্রী ও সন্তানের মুখ মনে পড়ছে। পিতৃহীন শৈশব মরুভূমির ন্যায় জ্বলন্ত। এই সত্য মহারাজ নিজের জীবনেও কিছুটা উপলব্ধি করেছেন।
                     পিতা মহারাজ হিরণ্যকশিপুর নিধনের পরে বালক প্রহ্লাদও তো পিতৃহীন হয়েছিল। কিন্তু সে নিজেকে কোনদিন অনাথ মনে করেনি। প্রহ্লাদ জানত সমগ্র বিশ্ব চরাচরের পিতা স্বয়ং নারায়ণ তার মাথার উপর আছেন। 
                     জন্ম ইস্তক হরি নাম জপ করে এসেছেন মহারাজ প্রহ্লাদ। হরি সাধনায় নিজের মায়ের সিঁথির সিঁদুর বিসর্জন দিয়েছেন। তিনি জানতেন তাঁর পিতা দুরাচারী। তবুও কোথাও কি হৃদয়ে বেদনা অনুভূত হয়নি? পিতার তো কোন বিকল্প হয় না। পরম আত্মীয়কে চরম শত্রুতে রূপান্তরিত হতে দেখেছেন। কিন্তু হরি নাম অবলম্বনে নিজের আদর্শে থেকেছেন অবিচল। কিন্তু আজ এই বৃদ্ধাবস্থায় মনোবল ভেঙে যাচ্ছে। হাজার হাজার বছর ধরে চলা দেবাসুর সংগ্রামে ক্রমাগত অসুরেরা পরাজিত হয়ে চলেছে। সন্তানসম প্রজাদের আর্তনাদ আর সহ্য হচ্ছে না। এর কি কোন প্রতিকার নেই? দেবরাজ ইন্দ্র বারংবার ছল চাতুরীর সাহায্যে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করবেন!
   *******************************************
আনন্দ ধারা বয়ে চলেছে স্বর্গ রাজ্যে। অনবরত যুদ্ধ জয়ের ফলে দেবরাজ প্রায় নিশ্চিত, উনিই হতে চলেছেন ত্রিলোকের ভাবি স্বামী। সোমরসে মত্ত সভাসদদের সঙ্গে বসে উর্বশী, মেনকার মত অপরূপা অপ্সরাদের নৃত্য উপভোগ করছেন দেবরাজ ইন্দ্র।
                      এই প্রতিহিংসা পরায়ণ আবহের থেকে দূরে স্বর্গের উদ্যান বাটিকার পুষ্করিণীতে সখীদের সঙ্গে জলকেলিতে মগ্ন এক নারী। সে সদ্য যৌবনে পদার্পণ করেছে। সর্বাঙ্গে তার রূপের ছটা। কিন্তু সেই রূপ তীব্র অগ্নি নয়, যার আকর্ষণে পতঙ্গ ভস্মীভূত হয়। সেই আগুন স্মিত সূর্যালোকের ন্যায় প্রবল শীতের ভোরে উষ্ণতা প্রদান করে। তার দীর্ঘ অক্ষি পল্লবের অপার গভীরতা তপ্ত হৃদয়কে প্রশান্তি দেয়।
                    সিক্ত বসনে সেই নারী পুষ্করিণীর বাইরে এল। বসন বদলে একটি পরিচ্ছন্ন শ্বেত শুভ্র বসন পরে পুষ্প দ্বারা সুসজ্জিত আসন গ্রহণ করল। এক সখী এসে তার কেশ সজ্জা আরম্ভ করে। চারিদিকে আরও সখীরা সেই অভিনবা সুন্দরীকে তুষ্ট করার জন্য সচেষ্ট।
                     এক সখী সেই অপরূপাকে প্রশ্ন করে " রাজকন্যা, তুমি স্বামী রূপে কেমন পুরুষ কামনা কর?"
অপরূপা বলে " পিতা আমার ভাগ্য রূপে যাঁকে নির্ধারণ করবেন, তাঁর চরণেই আমি নিজেকে উৎসর্গ করব।"
---- " তবুও তুমি দেবরাজ কন্যা, তোমার স্বপনে কেউ তো থাকবে।"
---- " কোন তেজোদ্দীপ্ত পুরুষ, কর্তব্যপরায়ণ। যার সংকল্পের জোরে স্বয়ং মহাদেবও বিগলিত হন।" লাজুক হেসে বলে সেই স্নিগ্ধা।
            নারীর সব স্বপ্ন কি সম্পূর্ণ হয়? অদৃষ্টের লিখনে ভবিষ্যতের পাতায় কি অপেক্ষা করছে?
(ক্রমশঃ)
(Copyright protected)
[11/9, 7:09 AM] শৈলেন মন্ডল ডিমারী: শীতের রাতে

এখন শীতের দীর্ঘ রাতে
কুয়াশারা বুঝি কান পাতে।
গাছের পাতায় জমা রাতের দীর্ঘশ্বাস
সকালে রোদ্দুরের আলিঙ্গনে ভরসার আভাস।
ঝড়া পাতার ভিড়ে অবেলায় অনাদৃত ক্ষয়
সবুজ হৃদয় গায়ে হলুদের আগে পাতা খসা ভয়।
হিম ঘুমে মগ্ন জগৎ নানা উপাচারে অধিবাস
রাত জাগা পাখিদের কলরবে নিশি দের ফিসফাস।
তবুও শীতের রাত একলা কাটানো যায় না
একটু উষ্ণতা আলিঙ্গনের ওম পরসই তো পাওনা।
তবুও কাঁপা দেহে মাফলারে শীতটা কাটাতে হবে
পশম পোষাক তুলে রেখে বসন্তের দেখা পাবে।