Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

একমাত্র মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ক্যারিশমা দলের ভাঙন আটকে একুশের জয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম।

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।গল্পটি একটু পুরানো।তখনও তৃনমূল দলের জন্ম হয়নি। কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি পদের জন্য মমতা বন্দোপাধ্যায় ও সোমেন মিত্রের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছে। দলটি ভাঙলো বলে। তার পরের কথা তো আমরা জানি।ঠিক সেই সময় যুগান্তর পত্রিকার…

 

ছবি সংগৃহীত

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।

গল্পটি একটু পুরানো।তখনও তৃনমূল দলের জন্ম হয়নি। কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি পদের জন্য মমতা বন্দোপাধ্যায় ও সোমেন মিত্রের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছে। দলটি ভাঙলো বলে। তার পরের কথা তো আমরা জানি।

ঠিক সেই সময় যুগান্তর পত্রিকার এক মালিকের বাড়িতে গেছি। তিনি আবার কংগ্রেস দলের একজন কাছের মানুষ । তখন শরীর অসুস্থ ।তাই খবরের কাজে চলে গিয়েছিলাম ওনার বাড়িতেই।
তাঁর মুখেই শুনলাম কিছুদিন আগে তিনি সোমেন মিত্রের বাড়িতে গিয়েছিলেন। অনেক কথাবার্তা ও হলো। শেষে তিনি ফেরার সময় সোমেন মিত্র তাঁকে গাড়িতে তুলতে আসেন। সেই সময় তিনি সোমেন মিত্র কে বলেন দল ভাঙতে দিও না। তোমার সংগঠন দক্ষতা ও মমতার ক্যারিশমা কংগ্রেস কে আবার ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে পারবে।বামপন্থী দের বাংলা থেকে হঠাতে গেলে এছাড়া বিকল্প নেই।
যাইহোক দল ভেঙেছিল সেদিন । তৃনমূল তৈরি ও হয়েছিল।সেই তৃনমূল পেরেছিল বামফ্রন্টের জগদ্দল পাথর সরিয়ে বাংলার মসনদ দখল করতে। আর সেই একটাই কথা।

এই জয়ের পিছনে মমতার ক্যারিশমা কাজ করেছিল।আজও সেই ক্যারিশমা ।আর একটি দল আজও দাঁড়িয়ে আছে সেই মমতার ক্যারিশমা ও উন্নয়ন মূলক কাজকে ভিত্তি করেই।দু হাজার একুশের বিধান সভা নির্বাচনে সেই একটাই কথা।মমতা বন্দোপাধ্যায় বনাম বাকি দল।তৃনমূল দলে যে যাই বলুক দলের আজও জয়ের কারিগর তিনি।আর তিনি মমতা বন্দোপাধ্যায় । সমগ্র রাজ্য জুড়ে তিনি আজও দিদি।আর তৃনমূল দলের সুপ্রিমো তিনিই।

এবার আসি অন্য প্রসঙ্গে । 2019 সালে দিদির দলে লোকসভা নির্বাচনে ফল আশানুরূপ হয়নি।বিজেপি সংগঠনহীন ভাবেও 18 টি আসন দখল করে নেয় ।আর তখন থেকেই এ রাজ্যের রাজনীতি তে বিজেপি দলের পাকা ভীত।তৃনমূল  দল ও দলকে চাঙ্গা করতে প্রশান্ত কিশোর কে আমন্ত্রণ করেন।পি কের আই প্যাক আসরে নামে তৃনমূল কে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে।কিন্তু এই প্রশান্ত কিশোরের স্ট্যাটেজিক দল পরিচালনা কে তৃনমূলের অন্দরে অনেকেই মানতে চান নি।ফলে কেউ কেউ মুখ খুলেছেন।কিন্তু দলনেত্রী অনড়।ভরসা রেখেছেন পি কের ওপর।
দলে প্রথম বিদ্রোহের মুখ শুভেন্দু অধিকারী ।যিনি একসময় মমতার প্রথম পছন্দের তালিকায় ছিলেন।দলের সেকেন্ড ম্যান মুকুল রায় তো আগেই দল ছেড়ে বিজেপি দলে গেছেন।দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি ও হয়েছেন।এখন প্রশ্ন উঠেছে শুভেন্দু অধিকারী কে নিয়ে ।তিনি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।এ লেখা লেখার সময় পর্যন্ত তিনি তৃনমূলের বিধায়ক পদে আছেন।দলের সদস্য পদ তো রয়েছেই ।
প্রশ্ন উঠেছে তিনি কি বিজেপি দলে যাচ্ছেন।এতদিন ধোঁয়াশা থাকলেও তা ক্রমশই কাটতে চলেছে।হয়তো এ মাসের 18 তারিখের মধ্যে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।রাজনৈতিক সূত্রের খবর এই মাসের মধ্যেই পরিস্কার হয়ে যাবে শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান ।আবার শুভেন্দু অধিকারীর পরেই মন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায় ও বেসুরে কথা বলছেন।তবে কি তৃনমূল দলে এবার কিছুটা ভাঙন ঘটতে চলেছে।
বিজেপি দলে কে গেলেন কে রইলেন তা নিয়ে রাজনৈতিক লিখিয়ে দের কলম চলছে অহরহ।প্রতিদিন ই চলছে নানা বাক বিতন্ডা ।আর গরম হচ্ছে রাজনিতীর অঙ্গন।
তৃনমূল দল অবশ্য এখনো ভোট যুদ্ধে এগিয়ে ।সংগঠনের মধ্যে থেকেই চলছে নানা উন্নয়নের কাজ।দুয়ারে সরকার প্রকল্পের ফসল ও পাচ্ছেন জনগন।
বিজেপি দল এখন সংগঠনের চেয়ে ও চেষ্টা চালাচ্ছেন দল ভাঙানোর জন্য ।আর সেই কাজে এখনো তাকিয়ে আছেন শুভেন্দু অধিকারীর দিকে।শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি দলে গেলে বিজেপি দলের লাভের চেয়ে ক্ষতি হবে বেশি।কারন বিজেপি দলে শুভেন্দু অনুগামীরা গেলে পদ চাইবেন।আর শুভেন্দু কে পদ দিলেও অনুগামী দের সকলকে বিজেপি দল পদ দেবে কি করে।ফলে পুরানো বিজেপি বনাম নব বিজেপির মধ্যে আবার ও লড়াই বেঁধে যাবে।তখন কিন্তু সেই লড়াই কে থামানো সম্ভব হবে না।
ডিসেম্বর মাসটি কাটার অপেক্ষা ।তারপরেই সব দলের কাছেই পরিস্কার হবে ঘোড়া কেনা বেচার আসরে কোন দল লাভবান হবেন।কার কজন মন্ত্রী কতজন বোরে।আর তারপরেই আসল লড়াই শুরু।
মমতা বন্দোপাধ্যায় স্বয়ং মাঠে নেমেছেন।লক্ষ্য নজর রাখছেন সব দিকেই।এছাড়া তিনি আহ্বান জানিয়েছেন সকলকে এক হয়ে লড়াই এর ময়দানে লড়াই করার।
একুশের ভোটে অনেক গুলি ইকুয়েশন কাজ করবে বলেই ধারনা।মমতা বন্দোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নানা উন্নয়নের জোয়ার বয়েছে বাংলা জুড়ে ।কন্যা শ্রী মতো জনদরদী প্রকল্পের সুফলের কথা ইতিমধ্যেই মানুষ বুঝতে পেরেছেন।তৃনমূল সুপ্রিমো আজও উন্নয়নের পথে।তবুও এবার নির্বাচন যে যোলোর থেকে কঠিন তা তৃনমূল দল ও স্বীকার করবেন।একটি দল পর পর দুটি টার্ম এ ক্ষমতায় থাকলে কিছু কিছু নেগেটিভ সোর্স কাজ করে।এ নিয়ে কোন সংশয় নেই।তবে তিনি মমতা বন্দোপাধ্যায় তাই এখন ও সজাগ সব দিকেই।তাই বলেছেন তিনিই দলের নেত্রী ও অবজারভার ।মিটিং এ নিজেই জানতে চেয়েছেন সঙ্গে আছেন তো।লাখো লাখো কন্ঠে উওর এসেছি আছি দিদি।
বিজেপি দল ও বসে নেই।উজাড় করে আসছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ।যাদের বহিরাগতদের তকমা তে ভূষিত করেছেন তৃনমূল দল।
তবে বাংলার মাটি চিনতে এদের অসুবিধা হবে বৈকি।এলাম ,দেখলাম পর্যন্ত ঠিক আছে।জয় করলাম একথা বোধহয় বলা যাচ্ছে না।জয়ের জন্য বাংলার মানুষের মন চেনা টা খুবই জরুরি ।আর সামান্য কদিনে সে কাজ সত্যি ই কঠিন।
তবে প্রশ্ন উঠছে এবার ও কি তৃনমূল দল ক্ষমতাতে থাকবে।নাকি নবান্ন দখল করবে বিজেপি ।
         এই প্রশ্নের উওর এক্ষুনি দেওয়া সম্ভব নয়।কারন ভোটের এখনো বাকি আছে বেশ কিছুদিন ।এই ভোটে দলবদল একটা ফ্যাক্টর নিশ্চয় হবে।কিছু মানুষ অন্য দলে ভোট ও দেবেন।তাতে কিন্তু তৃনমূলের খুব একটা ক্ষতি হবে বলে মনে হয় না।
বিজেপি দল জিতলে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন তা এখনো পরিষ্কার নয়।উল্টো দিকে তৃনমূল জিতলে মুখ্যমন্ত্রী সেই মমতা বন্দোপাধ্যায় ।অন্য কেউ নয়।
আর কেউ দল বদল করলে তাঁর সঙ্গে যে সবাই সে দলে নাম লেখাবেন একথা ও সত্যি নয়।কারন তৃনমূল দলটি গড়ে উঠেছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ক্যারিশমা দিয়েই।
এবার ভোটে কংগ্রেস ও বামপন্থীরা চাইবেন নিজেদের ভোট কে ধরে রাখতে।নতুবা অস্তিত্বের সংকটে ভুগবেন।
বিজেপি চেষ্টা করবেন বা এখন ও করছেন বিভিন্ন দল থেকে ভাঙিয়ে নেতা আনার।
কিন্তু তৃনমূল দল জানেন অল আউট ফাইট তাঁরা দেবেন ই।কিছু কিছু কেন্দ্রে জয়ের মার্জিন কমলেও শেষ হাসিটি যে তাঁরাই হাসবেন তা পরিষ্কার ।
জমে গেছে বাংলার একুশের ভোট।কদিন বাকি আছে কুড়ি সাল কাটতে।ইতিমধ্যেই রাজনিতীর ময়দানে বিজেপি ও তৃনমূল সন্মুখ সমরে।উদ্দেশ্য একটাই ক্ষমতার অলিন্দ ।
তবে ভোটের ফল জনগন ই বলতে পারেন সঠিক।তবে তৃনমূলের জন্ম লগ্ন থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ক্যারিশমা আজও এতটুকু কমেনি।আজও তিনি মিছিল মিটিং এ বলতে পারেন আমি আছি জনগনের সঙ্গে ।
মা মাটির সরকারের জমিতে হয়তো থাবা বসাতে চাইছেন কেউ কেউ।সে দলের মধ্যে বা বাইরে।তবে একুশ যে আবার মমতার ক্যারিশমা মমতা বন্দোপাধ্যায় দেখাবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই।