#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন#গল্প#সৃষ্ট_দানব#সৃজনে_সুপ্রিয়া_হালদার
আদালতে সুশান্তর ফাঁসির আদেশ হয়েছে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে । সুশান্তর এই পরিণতির জন্য দাদু সুখেনবাবু অনুতপ্ত । এতদিনে তিনি নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছেন ।
একমাত্র কন্যা সুলতার প…
#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন
#গল্প
#সৃষ্ট_দানব
#সৃজনে_সুপ্রিয়া_হালদার
আদালতে সুশান্তর ফাঁসির আদেশ হয়েছে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে । সুশান্তর এই পরিণতির জন্য দাদু সুখেনবাবু অনুতপ্ত । এতদিনে তিনি নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছেন ।
একমাত্র কন্যা সুলতার পুত্র সুশান্ত সুখেনবাবুর পুত্রের অভাববোধটা পূরণ করেছিল । নাতিকে তিনি অতিরিক্ত প্রশ্রয়ে বড় করেছিলেন ।
শিক্ষিকা সুলতা সহকর্মী শিক্ষক রমেনকে বিয়ে করেছিল স্বেচ্ছায় । রমেনের পারিবারিক তেমন কোনও পরিচয় ছিল না । তাই সুখেনবাবু অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হলেও একমাত্র মেয়ের ইচ্ছাকে মেনে নিয়েছিলেন । ঘরজামাই হওয়ার ফলে সংসারে রমেনের উপস্থিতি সেভাবে টের পাওয়া যেত না ।
সুলতা-রমেনের স্কুলেই সুশান্ত ভর্তি হয়েছিল । কিন্তু ছোটবেলা থেকেই সুশান্তর আচরণে ওরা বিব্রত হত । স্কুলের বন্ধুদের জিনিস চুরি করে সুশান্ত বাড়িতে আনত । মায়ের শাসন থেকে বাঁচতে সেগুলো দাদুর কারসাজিতে গোপনস্থানে চলে যেত ।
ক্রমেই সুশান্ত দুর্বিনীত ও বদরাগী হয়ে উঠছিল ।
সুখেনবাবু তাঁর সমস্ত সম্পত্তি নাতির নামে লিখে দিয়েছিলেন । হয়ত মেয়ের প্রতি তাঁর মনে পুষে রাখা রাগটাই তাঁকে দিয়ে এমন কাজ করিয়ে নিয়েছিল । সুশান্ত কিন্তু সম্পত্তির ব্যাপারটা ভালই বুঝত । ফলে ছাত্রাবস্থাতেই নিজের মা-বাবার সঙ্গেও সে দুর্ব্যবহার করত ।
দীর্ঘদেহী-সুঠাম সুশান্তর প্রেমে পড়ল পাড়ারই মেয়ে উৎসা । প্রেমে পড়েও সুশান্তর দুরাচারী স্বভাবের কোন পরিবর্তন হল না । দুই বাড়ির সম্মতি থাকলেও ওরা গোপনে মন্দিরে বিয়ে করে এল , কারণ উৎসা সন্তানসম্ভবা হয়ে গিয়েছিল ।
প্রেমপর্ব চলাকালীনই সুশান্ত উৎসাকে মারধর করত । প্রেমে অন্ধ উৎসা এটাকে সুশান্তর একনিষ্ঠ প্রেমেরই ফলশ্রুতি মনে করত । পুত্রসন্তান জন্মের পরেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হল না । বরং খামখেয়ালীপনা ও অত্যাচার বাড়তেই লাগলো ।
সুশান্ত শ্বশুরবাড়ি এবং নিজের মা-বাবার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করত ।
এক বিবাহিতা মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়াল সুশান্ত । উৎসা প্রতিবাদ করায় ওকে গৃহচ্যুত হয়ে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হল ।
একদিন উৎসার বাড়ির লোকেদের অনুপস্থিতিতে উৎসা সুশান্তর হাতে খুন হল বাপের বাড়িতেই । সুশান্ত খুনের সব প্রমাণ লোপাট করল ।
কিন্তু ভাগ্য এবারে ওর সহায় ছিল না । ছেলে উৎসব ঘুমাচ্ছে বলে ওর মনে হয়েছিল । কিন্তু মা-বাবার ধস্তাধস্তির আওয়াজে উৎসবের ঘুম ভেঙে গিয়েছিল । ও শুধু ভয়ে চুপ করে শুয়েছিল । সেই উৎসবের জবানবন্দীতেই খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হল সুশান্ত । বিচারে ওর ফাঁসির আদেশ হল ।