Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনি-সম্মাননা

#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন#বিভাগ_গল্প#শিরোনাম_ভবিষ্যদ্বাণী#মৃন্ময়_সমাদ্দার#তারিখ_২৭/০১/২০২১
স্বামী স্ত্রী ও একটি ছোট ছেলের সংসার।খুবই সুখের সংসার।স্বামী-স্ত্রীর মাঝেমধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হলেও তা ভালোবাসারই প্রকাশ। প্রেম করে বিয়ে হয়েছে ওদের…

 


#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন

#বিভাগ_গল্প

#শিরোনাম_ভবিষ্যদ্বাণী

#মৃন্ময়_সমাদ্দার

#তারিখ_২৭/০১/২০২১


স্বামী স্ত্রী ও একটি ছোট ছেলের সংসার।খুবই সুখের সংসার।স্বামী-স্ত্রীর মাঝেমধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হলেও তা ভালোবাসারই প্রকাশ। প্রেম করে বিয়ে হয়েছে ওদের। স্বামী সকাল বেলাতেই খেয়েদেয়ে অফিস বেরিয়ে যায়। ফেরে সেই সন্ধ্যেবেলা বা রাতের দিকে। অফিসের কাজের চাপের ওপর ফেরা নির্ভর করে। তবে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত অফিসে থাকতেই হয় কাজ না থাকলেও। সবার সাথে বসে তখন আড্ডা মারা ছাড়া আর কোন কিছুই করার থাকেনা। তারপর সময় হয়ে গেলে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ওদের বাড়িটা ছোট হলেও বেশ গোছানো। যদিও ছোট ছেলেকে নিয়ে আর পেরে ওঠে না। ছেলের সবকিছু করিয়ে দিয়ে স্বামীর অফিসের খাবারদাবার দিয়ে পাঠায় শ্রীমতি। শ্রীমতীর সবকিছুই ওই ছেলে। ছেলের ঘুম থেকে ওঠা থেকে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত সবটাই শ্রীমতি। এমনকি বাড়ির কোন কাজও ফেলে রাখে না। নিজের হাতেই সব করে। এজন্য মাঝে মাঝে গর্ববোধও করে শ্রীমতি। 

   এরকমই একদিন শ্রীমতি ছেলেকে স্নান করিয়ে ঘরে এসে বসেছে এমন সময় দরজার সামনে একজন ভিখারি এল। তখন ছেলের চুল আঁচড়ে দিচ্ছিল। ওই অবস্থাতে শ্রীমতি বাইরে বেরিয়ে এলো। শ্রীমতিকে বাইরে আসতে দেখেই ভিখারি বলল মা তুইতো খুবই ভাগ্যবতী,তোর খুব তাড়াতাড়ি উন্নতি হবে,প্রচুর অর্থের মালিক হবি। তোর এই বাড়িতে গুপ্তধন আছে। খুব তাড়াতাড়ি তুই ওই গুপ্তধন হাতে পাবি। এবার বললো দে কিছু দে। শ্রীমতি ঘরের ভেতর ঢুকে একটা দশ টাকার কয়েন হাতে দিতে গেলে ভিখারি বলল তুই এত বড় সম্পত্তির মালকিন আর মাত্র দশ টাকা দিচ্ছিস তোর লজ্জা করেনা?এবার শ্রীমতি সত্যিই একটু লজ্জা বোধ করতে লাগল এবং ঘরের ভেতর আবার ঢুকে একটা একশো টাকার নোট নিয়ে বাইরে এসে ভিখারিটার হাতে দিল। এবার ভিখারীটা খুশি হয়ে আশীর্বাদ করলো। শ্রীমতিও যারপরনাই খুশি হলো। স্বামী অফিস থেকে বাড়িতে আসতেই সব কথা খুলে বলল। স্বামী বিশ্বাস করল না এইসব কথা। 

          পরের দিন আবার সেই ভিখারীটা এল এবং শ্রীমতিকে বলল কিরে তোর স্বামী বিশ্বাস করেনি তো? শ্রীমতি বলল হ্যাঁ বাবা। বলতো কিভাবে ওকে বিশ্বাস করানো যায়?তখন ভিখারিটা বলল এই তাবিজটা ওকে পড়িয়ে দিবি এবং এই গুড়োটা তোরা দুজনেই খাবি রাতে শোবার আগে। যথারীতি অফিস থেকে ফিরবার পর স্বামীর কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করতে করতে তাবিজটা পরিয়ে দিলো যদিও স্বামী কিছুই বিশ্বাস করেনি। রাতে খাবার পর ওরা দুজনেই গুড়োটা খেয়ে নিল। এবার ওরা রাতে শুতে গেল। সারাদিন খাটাখাটনির ফলে দুজনেই সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়ল। সকালে ঘুম থেকে উঠেই সবার চক্ষু চড়কগাছ। ঘরের দরজা খোলা,তালা ভাঙ্গা। ঘরের আলমারির দরজার খোলা এবং ঘরে কোন জিনিসই নেই। তারমানে সবকিছুই চুরি গেছে। ওদের মাথায় হাত পরল। স্বামী অফিসে জানিয়ে দিল যে ওর বাড়িতে চুরি হয়েছে তাই ও অফিস যেতে পারছে না। আলমারির গোপন কুঠুরিতে হাতিয়েও কোন টাকা পয়সাই পেল না। ঘরে একটা টাকাও নেই সবই চোর হাতিয়ে নিয়ে গেছে।পারলে ওদের পরনের জামা কাপড়টাও খুলে নিয়ে যেত।ওরা পুলিশের কাছে বিস্তারিত বয়ান লিখে দিয়ে এলো।শ্রীমতি বলতে লাগল আমি যদি গুপ্তধনের লোভ না করতাম তাহলে এই ঘটনা ঘটতো না,সবটা আমারই দোষ। আমি শিয়ালকে ভাঙ্গা বেড়া দেখিয়েছি। আমি বুঝতেই পারিনি ভিখারির ছদ্মবেশে চোর আমার বাড়ির সব দেখে গেছে। ও হাত কামড়াচ্ছে। স্বামী এখন সংসার কিভাবে চালাবে ভাবতে লাগলো। শ্রীমতিকে সামলে রেখে বললো দেখি কারোর কাছ থেকে কিছু ধার নিয়ে আসি,সংসার তো চালাতে হবে।স্বামী কিছু ধার করে নিয়ে এলো। 

       বেশ কিছুদিন পর যখন চুরি হবার ব্যাপারটা অনেকটাই স্তিমিত হয়ে গেছে এরকম একটা ছুটির দিন দেখে স্বামী ঘরের বাইরের জঙ্গল পরিষ্কার করতে বেরোলো। প্রতিবারের মত এবারও কিছু ফুলের গাছ লাগাতে চাইছিল স্বামী। অন্যান্যবার সামনের দিকেই লাগায় কিন্তু এবার কি মনে হওয়াতে বাড়ির পেছনদিকে গাছ লাগাবে ভাবল। যা ভাবা তাই কাজ। পেছনদিকে কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়তেই স্বামীর মনে হল যে কোনোকিছুর সাথে কোদালটা আটকে গেছে এবং একটা টং করে আওয়াজ শুনলো। স্বামী সাবধানে মাটি খুড়তে লাগল আর খুঁড়তে খুঁড়তে একটি আস্ত কলসি পেল। কলসিটা পেতলের এবং মুখটা লাল কাপড় দিয়ে বাঁধা। ও খুব সাবধানে কলসির লাল কাপড়টা খুলতেই চমকে উঠলো।সাথে সাথে উত্তেজিত হয়ে শ্রীমতিকে ডাকল এবং কলসিটা দেখালো।শ্রীমতিও অবাক চোখে কলসিটা দেখতে লাগলো। কলসি ভর্তি সোনার জিনিস। ওরা দুজনে ধরাধরি করে কলসিটা ঘরে নিয়ে এলএবং শ্রীমতি বলতে লাগল তাহলে ভিখারীর কথাটা সত্যিই হলো। কাকতালীয় হলেও এখন ওরা বিশাল গুপ্তধনের মালিক। বিশাল অর্থের মালিক। জীবনযাত্রাও পুরোপুরি পাল্টে গেল ওদের।