Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনি-সম্মাননা

#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন#গল্প_খাদ্যরসিক#কলমে_অর্পিতা_ভট্টাচার্য্য 
প্রতিক বাবু যেমন খাদ্যরসিক মানুষ তেমনি বাজার করতে এবং লোককেও খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসেন। ওনার বাজারের ট্যালায় ওনার স্ত্রী শর্বরী দেবী নাজেহাল। সারাবছর তো বাজার করেনই শীতকা…

 


#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন

#গল্প_খাদ্যরসিক

#কলমে_অর্পিতা_ভট্টাচার্য্য 


প্রতিক বাবু যেমন খাদ্যরসিক মানুষ তেমনি বাজার করতে এবং লোককেও খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসেন। ওনার বাজারের ট্যালায় ওনার স্ত্রী শর্বরী দেবী নাজেহাল। সারাবছর তো বাজার করেনই শীতকাল পরলে যেনো বাজার আনা দ্বিগুণ হয়ে যায়। শর্বরী দেবী বলেন এখন বয়স হচ্ছে বাজার আনার দখল এতো খাওয়াদাওয়া করা উচিত না। স্ত্রীর কথা শুনে প্রতীক বাবু হাসতে হাসতে বলেন "আমি যথেষ্ট ফিট গিন্নি রোগ আমার ধারের কাছে আসতে পারবে না। স্কুল থেকে ফেরার পথে আমি হেঁটে বাড়ি ফিরি সেটা কম করে প্রায় ৪৫ মিনিট"। স্কুল যাওয়ার সময় গরম গরম ভাত খেয়ে যান প্রতীক বাবু। শীতকালে তো নতুন আলু সেদ্ধ ঘী দিয়ে ভাত খেয়ে যান আবার কোন কোন সময় মাছ ভাজা বা ডিমসেদ্ধ। একেকদিন একেকরকম খাবার ওনার লাগবে আগের দিন রাতেই স্ত্রীকে বলে রাখেন কী খাবেন। শর্বরী দেবীও খুব ভালো রান্না করেন। স্কুল থেকে ফিরে কোন সময় চপ বেগুনী ফুলুরি বা সিঙ্গারা নিয়ে আসেন প্রতীক বাবু আবার শর্বরী দেবীও কোন কোন সময় বাড়িতে বানান। শশা, মটরশুঁটি, ধনেপাতা, পেঁয়াজ, কাচালঙ্কা, চানাচুর, আচারের তেল দিয়ে সেই তেলেভাজা খাওয়া হয় আর তার সাথে চা। সকালে স্কুল যাওয়ার তাড়া থাকে বলে রাত্রিবেলা জমিয়ে খান তিনি। ছুটির দিনে তো রক্ষে নেই প্রতীক বাবুর মতে খাদ্যরসিকেদের জন্যই এই শীতকাল। রবিবার তো ফুলকো ফুলকো লুচি, মটরশুঁটি দিয়ে ছোট আলুর দম, বেগুন ভাজা, নলেনগুড়ের রসগোল্লা বা সন্দেশ আবার কখনো কখনো গুড় ভরা তালশাঁস। মাঝে মাঝে স্ত্রীর কাছে আবদার করেন মটরশুঁটির কচুরি করতে। আবার রাত্রিবেলা কখনো কখনো আলুর পরোটা, গাজরের পরোটা, গাজুরের হালুয়া আবার কখনো রুটি খেঁজুরের গুড় দিয়ে তো কখনো পালং পনীর। তারপর তো সবজী আছেই সিম বেগুন বড়ি ধনেপাতা দিয়ে একটা তরকারি বা মটর ডালের মধ্যে সিম মুলো ধনেপাতা দিয়ে বা মুগ ডালের মধ্য ফুলকপি মটরশুঁটি দিয়ে, টমেটো খেঁজুর আমসত্ত্ব কাজু কিসমিস দিয়ে চাটনি। শীতকাল মানেই বিভিন্ন রকম মাছ। তেলাপিয়া মাছ পেঁয়াজ রসুন দিয়ে, সরপুটি মাছ সরষে দিয়ে, ট্যাঙরা মাছের ঝাল পেঁয়াজকলি দিয়ে, লইট্যা মাছ পেঁয়াজ রসুন বেগুন দিয়ে, রুই মাছ কালোজিরে কাচালঙ্কা আদা জিরে বাটা ধনেপাতা দিয়ে, পাবদা মাছ, পার্ষে মাছ, মাছের তেলের বড়া এবং ঝাল, বাধাকপি দিয়ে মাছের মাথা। প্রতীক বাবুদের বাড়িতে পিঠের সময় ও এলাহি আয়োজন। শর্বরী দেবী প্রচুর পিঠে বানান আর প্রতীক বাবু সব জোগাড় করে দেন। ক্ষীর দেওয়া পাটিসাপটা, দুধ পুলি, ভাপা পিঠে, রসবড়া, রাঙা আলুর পিঠে, গোকুল পিঠে, মুগপুলি, খেঁজুর গুড়ের পায়েস। প্রতীক বাবু শিক্ষক তাই বেশ বড়ো করেই সরস্বতী পুজো হয় ওনার বাড়িতে। সরস্বতী পুজো দিন মুগ ডাল দিয়ে গোবিন্দভোগ চালের খিচুড়ি, বাধাকপি, বেগুন ভাজা, নবরত্ন, আলুর দম, টমেটোর চাটনি কুল দিয়ে, খেজুর গুড়ের রসগোল্লা, গুড় ভরা তালশাঁস। পাড়ার লোকে থেকে ছাত্র-ছাত্রী আবার আত্মীয় স্বজন বেশ তৃপ্তি সহকারে সেই খাবার খেতেন।


আজ প্রতীক বাবু নেই শর্বরী দেবী তাও প্রতীক বাবুর পছন্দ মতো সব খাবার পিঠের সময় পিঠে পায়েস ওনার ফটোর সামনে দেন। তাতেই শান্তি পান শর্বরী দেবী।


#সমাপ্ত