তরুন চট্টোপাধ্যায়সংক্রান্তি পার করে 16 জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে কোভিডের টিকা করনের কাজ।ভ্যাকসিন নিয়ে এখনো নানা মানুষের নানা মত।আর তার কারন টি হলো এই অতিমারির হাত থেকে মানুষ কে রক্ষা করতে গিয়ে অতি দ্রুত বাজারে ভ্যাকসিন কে নিয়ে…
তরুন চট্টোপাধ্যায়
সংক্রান্তি পার করে 16 জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে কোভিডের টিকা করনের কাজ।ভ্যাকসিন নিয়ে এখনো নানা মানুষের নানা মত।আর তার কারন টি হলো এই অতিমারির হাত থেকে মানুষ কে রক্ষা করতে গিয়ে অতি দ্রুত বাজারে ভ্যাকসিন কে নিয়ে আসা।সমস্ত রকমের পরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি।সব ধরনের ট্রায়াল ও এই অল্প সময়ে সম্ভব নয়।কিন্তু ভ্যাকসিনের খোঁজে মানুষ তো দিশেহারা ছিলেন সেই করোনার প্রথম দিন থেকেই।ফলে বাজারে ভ্যাকসিন আসাটিও খুব জরুরি ছিল।আর তার ফলশ্রুতি তড়িঘড়ি বাজারে ভ্যাকসিন কে নিয়ে আসা।
কেন 16 জানুয়ারি সে প্রসঙ্গে পরে আসছি।এখন দেখা যাক প্রথম দিন থেকেই মানুষের ঢল নামবে কিনা এই ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য ।এখনো পর্যন্ত যা খবর তা হলো প্রথম এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে কোভিড যোদ্ধা দের।যাঁরা কোভিডের সঙ্গে যুদ্ধে ফ্রন্ট লাইনে ছিলেন।যেমন ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা।শুধু এনারাই নয়।কোভিড যোদ্ধা হিসেবে ঝাড়ুদার দের ও নাম উঠে আসছে।ফলে স্বাস্থ্য কর্মী দের সঙ্গে যাঁরাই হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন তাদের সকল কেই কোভিড যোদ্ধা হিসেবে ধরা হবে।
সে নয় হলো ।এঁদের বাইরে এখনো রয়ে গেল বিপুল সংখ্যক মানুষ ।ধরে নিলাম কোভিড যোদ্ধা দের পরেই আসবে তাঁদের নাম।কিন্তু জনতা জনার্দন এই নিয়ে কি ভাবছেন।এ নিয়ে বহূ মানুষের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল সকলেই যে এই মুহুর্তে ভ্যাকসিন নেবেন এমনটি নয়।অনেকেই জানান একটু অপেক্ষা করে দেখতে হবে।যারা নিলেন তাঁরা কেমন আছেন।সত্যি সত্যি কোভিড মুক্ত হয়েছেন কিনা।বিনামূল্যে কি পয়সা দিয়ে সেটি বড় কথা নয়।আসল কথা হলো অল্প পরীক্ষার পর ছাড়পত্র পাওয়া এই ভ্যাকসিন টির গুন গত মান নিয়ে ।তবে সকলেই নিশ্চিত ভ্যাকসিন টি নেওয়া জরুরি ।তবে অনেকেই চাইছেন কিছুদিনের অপেক্ষা ।কারন জনতা হাতে কলমে মেপে নিতে চাইছেন এটির কার্য কারিতা।না বুঝে না জেনে কিছু করার কথা ভাবছেন না।
প্রশ্ন একটি থেকেই যাচ্ছে ।যে ভ্যাকসিন নিয়ে বাজার উত্তাল ছিল তা আসার পর মানুষ এতটাই নিস্পৃহ কেন।এর পিছনে যুক্তি একটাই।তা হলো পরীক্ষিত সত্য টি জানতে চাওয়া ।
ভোপালে ট্রায়ালে টিকা নেওয়ার পর এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।আর সেই মৃত্যুর রহস্য নিয়ে ও নানা কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে ।তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার সময় কো ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এক বিয়াল্লিশ বছরের যুবকের মৃত্যু ঘটে সম্প্রতি ভোপালে।আর এই নিয়ে শুরু হয় জলঘোলা ।ভ্যাকসিন নেওয়ার দশদিনের মাথায় যুবকটির মৃত্যু রহস্য আজও চলছে।যদিও ময়না তদন্তের রিপোর্ট টি হলো বিষ ক্রিয়া তেই মৃত্যু ।আর টিকা প্রস্তুত কারক সংস্হা ভারত বায়োটেকের দাবি এই মৃত্যুর সঙ্গে প্রতিষেধকের কোন সম্পর্ক নেই।শ্বাস কষ্ট জনিত কারনেই এই মৃত্যুর ঘটনা।কিন্তু ঘটনা যাই হোক রটনা তো থাকবেই।
হায়দরাবাদের সংস্হা টির তৃতীয় ও শেষ দফার ট্রায়ালটি হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের পিপলস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ।গত বছর বারো ডিসেম্বর স্বেচ্ছায় টিকা টির পরীক্ষা মূলক প্রয়োগে অংশ নেন দীপক মরাবি নামে এই যুবকটি।একুশে ডিসেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর ।জনজাতি সম্প্রদায়ের এই যুবকটি ছিল পেশায় দিনমজুর।
তবে এই ঘটনার সঙ্গে যোগ নেই প্রতিষেধকটির বলেই সূত্রের খবর।যদিও এ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা আজও চলছে।দেশবাসী কে অযথা আতঙ্কিত না হবার জন্য দেশবাসীকে আর্জি জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান ।
এটি একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা বলেই উল্লেখ করা হয়েছে।কিন্তু গুজব যখন ছড়িয়ে পড়ে তাকে তো এভাবে আটকানো যায় না।তাই আসল কারন না জানা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছেন অনেকেই।তবে পরীক্ষা তে তাড়াহুড়ো যে ছিল তা কেউই অস্বীকার করেন নি।তবে মহামারীর এই কবল থেকে রক্ষা পেতে হলে এছাড়া তো আর উপায় ও ছিল না।
এবার আসি কেন 16জানুয়ারি ।করোনা যুদ্ধে থালা বাজানো বাতি জ্বালানোর মতো ঘটনার সাক্ষী তো আমরা আগেই হয়েছি।এবার গন টিকাকরনের কর্ম সূচীও তৈরি করা হচ্ছে ধর্মীয় তিথি নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে ই।
উওরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথ যেমনটি বলেছিলেন সেই পথেই হাঁটলেন কেন্দ্রীয় সরকার ।মকর সংক্রান্তি পার করেই ঠিক করা হলো টিকাকরনের দিনটি।
আগামী 14 জানুয়ারি মকর সংক্রান্তি ।বাংলায় পৌষ সংক্রান্তি ।গুজরাতে উওরায়ন।অসমে বিহূ।কর্নাটকে মকর সংক্রমণ ।কাশ্মীরে শায়েন ক্রাত।তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল।কেরলে মঘরা ভালাকু।এরকম নানা নামে নানা প্রদেশে সংক্রান্তি পালন।
সংক্রান্তির দিনে সূর্যের এক রাশি থেকে আর এক রাশি তে নাকি গমন হয়।আর এদিনের পর থেকে অশুভ শক্তির বিনাশ হয়ে নাকি শুভ শক্তির বিকাশ বলেই ধারনা।তাই টিকা করন একটি শুভ কাজ।ধর্মীয় বিধি মেনেই তাই মকর সংক্রান্তি পার করেই গন টিকাকরনের দিনক্ষন স্হির করা হলো বলেই সকলের অনুমান।সে যাই হোক মানুষের আশা নিয়ে ই আসছে এই টিকাকরনের দিন।করোনা মুক্ত বিশ্ব হবে এটিই প্রার্থনা ।
কিন্তু করোনার সেকেন্ড স্টেন যে এখনো রক্ত চক্ষু দেখাচ্ছে আমাদের।তবে কি রেহাই নেই মানুষের ।
টিকা কে নেবেন কে নেবেন না।আবার কে কে একটু দেরিতে নেবেন এমন আলোচনার মধ্যে ও এসে পড়লো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের চিঠির কথা।খরচ নিয়ে ও চিন্তা নেই।কারন তিনি চান বিনা মূল্যে করোনার টিকা দিতে।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারী হিসাব বলছে এখানে জনসংখ্যা হচ্ছে প্রায় দশ কোটি।সকলকে নিখরচায় টিকা দিতে গেলে খরচ প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা।
কিন্তু শুভ উদ্যোগ ।তবে যাদের ক্ষমতা আছে তাঁরা যদি নিজেদের খরচে টিকা নেন এবং বাকিরা সরকারী খরচে নেন তাহলে সরকারের টাকা বাঁচে।স্বাস্থ্য সাথীর ক্ষেত্রে ও সেই একই কথা ।গরীব মানুষ সুযোগ পান।কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে সরকারী সুযোগ নিতে ধনী ও দরিদ্র এক লাইনেই দাড়িয়ে পড়ছেন।
এটি কিন্তু কাম্য নয় কখনো।কিছু মানুষ এই বঙ্গে এই কথা বুঝলেও সিংহভাগই সরকারী সুবিধা পেতে আগ্রহী।ফলে সরকারী টাকা খরচ হয়েই চলেছে।
অবশ্য এই বিনা পয়সায় টিকা করনের ঘোষনাকে বিরোধী দল টিপ্পনি কাটতে ছাড়েননি।
তাদের বক্তব্য মমতা বন্দোপাধ্যায় তো ভোট বাজারে কল্পতরু ।অবশ্য ভোট মিটলে উনি সব ভুলে যাবেন।
রাজ্যের ভোট এলো বলে।তাই এসব থাকবেই।তবে ভ্যাকসিন এসেছে দেশে।এটিই এখন বড় খবর।