Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

রাজ্য রাজনীতিতে বঙ্গ সংস্কৃতি কি বেহাল !

সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতির চচ্চড়ি ভাজতে দেবেন না বঙ্গের জনগন । তরুন চট্টোপাধ্যায় ।
একুশের বঙ্গ ভোট কে কেন্দ্র করে বঙ্গ সংস্কৃতি নিয়ে মেতেছেন রাজনৈতিক দল গুলি।এনাদের কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে এতদিন নাকি বঙ্গে সংস্কৃতি ছিল না।একুশের …



সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতির চচ্চড়ি ভাজতে দেবেন না বঙ্গের জনগন । 

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।


একুশের বঙ্গ ভোট কে কেন্দ্র করে বঙ্গ সংস্কৃতি নিয়ে মেতেছেন রাজনৈতিক দল গুলি।এনাদের কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে এতদিন নাকি বঙ্গে সংস্কৃতি ছিল না।একুশের ভোটে সেই সংস্কৃতি কে আমদানি করছেন এনারাই।তবে একথা সত্যি যে একুশের ভোট কে কেন্দ্র করে বঙ্গ জুড়ে চর্চা চলছে নব সংস্কৃতির আমদানি ।

বিগত দিনের বঙ্গের সমস্ত সংস্কৃতি কে রাজনৈতিক দলগুলি কড়াই এ চাপিয়ে যে যার নিজের দলের নীতি আদর্শের মতো সিদ্ধই করে চলেছেন।ফলে আমরা পাচ্ছি নব এই সংস্কৃতির সুলুক সন্ধান ।বিদ্ধজনেরা যাই বলুন মিছিল মিটিং থেকে ভেসে আসা সংস্কৃতির রুপ রস গন্ধে মশগুল হচ্ছেন দলের পতাকা তলে জড়ো হওয়া মানুষ জন।করতালিতে ভরিয়ে দিচ্ছেন সভাস্থল ।তোফা তোফা রব উঠছে চারিদিক থেকে।জনগন বলছেন এই না হলে বঙ্গের ভোট।

রাইটার্স বিল্ডিং ঘেরাও আটকাতে বামপন্থী পুলিশ যখন গুলি চালিয়েছিলেন তখন সেই মৃত্যু কে উপেক্ষা করে বামপন্থী নেতা বলেছিলেন আন্দোলন টি নিরামিষ থেকে আমিষ হলো।আর আজ তো গুলি না চললেও বাক্যবানে চলছে গুলি।লাঠি জলকামান এসব তো দিল্লির কৃষক আন্দোলন বা বঙ্গের নবান্ন অভিযানে চলেই।এ নিয়ে আর নতূন কথা লেখার কি আছে।সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে যে এতটুকু সৌজন্যের আবহাওয়া নেই তাতো বোঝাই যাচ্ছে ।আর এরি মধ্যে কেউ কেউ ব্যাক্তিগত স্তরে সৌজন্যে ছিঁটেফোটা দেখাতে গেলে তাঁর ভাগ্যে জোটে দল বদলের তকমা।বিরোধী দলের সঙ্গে এত কি কথা।মিডিয়ার বুম থেকে ভেসে আসে এই বোধহয় দল বদলু আরও একজন।ফলে ইচ্ছে থাকলেও এক পংক্তি তে বসবার সাহস হয় না কারো।যেন তেন প্রকারেন ক্ষমতা দখল ই এখন লক্ষ্য ।অন্য কিছু সবই বেকার।

তোলাবাজ ভাইপো এই উক্তি করে বিজেপির ছোট বড় নেতাই কামান দাগছেন।গরু থেকে কয়লা বালি কোন কিছুই বাদ যাচ্ছে না।অথচ কারো হাতে নেই কোন প্রমাণ ।

আবার তৃনমূল দলের সব নেতাই দল ছাড়া দের বেইমান মীরজাফর আখ্যা দিচ্ছেন।দলে থাকলেই সৎ আর বদল করলেই অসৎ।ফলে জনগন বুঝছেন না সকালে যিনি দলের সম্পদ ছিলেন সন্ধ্যা তে কি করে তিনি বেইমান হয়ে গেলেন।গলায় জুতোর মালা জুটছে তাদের।অথচ কদিন আগেই তিনি ছিলেন দলের মধ্যমনি।

আর মঞ্চ থেকে ভেসে আসা শব্দের জন্য নতূন কোন অভিধান তো লেখা জরুরি ।কারন এমন সব শব্দ ভেসে আসছে তার বাংলা যথার্থ মানে খুজতে গিয়ে হয়রানি হচ্ছে জনগনের।

আবার শব্দ নিয়ে ব্যাখা এক এক দলের এক এক রকম।বিশেষ করে বিজেপি ও তৃনমূল দলের।কেউ কটু বাক্য বললেও তাঁর প্রতিবাদ সেই দলের থেকে আসছে না।উল্টে ধামা চাপা দিতে সেই শব্দের নতূন অর্থ আবিষ্কার হচ্ছে ।

তৃনমূল দলের যুব নেতা তোর বাপকে বল বলাতে সেই বাপ রাগে ফুঁসছেন।কারন তিনি আজও তৃনমূল দলেই।বিরোধীরা সেই বাক্যের প্রতিবাদে মাঠে নামছেন।আবার কুনাল ঘোষ এর মধ্যে কোন অন্যায় না দেখতে পেয়ে বলছেন শোনেন নি মেয়েরা কত আদরে বাপের বাড়ির কথা বলেন।

আর বিজেপির দিলীপ ঘোষ কে নিয়ে এখন আর সে ভাবে কেউ কিছু বলেন না।কারন কটু কথার জোয়ারে ভাসা বিজেপির সভাপতি এখন বোধহয় একটু হলেও ব্যাকফুটে ।এমনকি অক্সিজেন কম অনুব্রত সে ভাবে বাজার মাতানো কথাবার্তা বলতে পারছেন না।কটু কথাবার্তার বাজারে সব দলের লোকজন এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে আসল ব্যাটমান দের ব্যাট থেকে রানের ফুলঝুরি কমেছে।তা বলে ভাববেন না কটু কথা কমেছে।একুশের বঙ্গ ভোট কে কেন্দ্র করে যে সমস্ত কটু কথার বন্যা বহে গেছে তা যোগ করলে একটি মহাকাব্য হয়তো লেখা হয়ে যেতো।

এর সঙ্গে তো আছে ঝুড়ি ঝুড়ি ভুল কথাবার্তা ।রবীন্দ্রনাথের জন্ম শান্তি নিকেতনে থেকে শুরু করে বিবেকানন্দ ঠাকুর এসব তো আছেই।

বঙ্গের সংস্কৃতির ধারক ও বাহক বলে এবারের ভোট বৈতরনী পার করতে চাইছেন সব দলই ।উন্নয়ন বোধহয় সে বাজারে একটু খাটো হয়ে গেছে।সোনার বাংলার প্রতিশ্রুতি যে অশ্বডিম্ব ছাড়া আর কিছু নয় তা বুঝেছেন মানুষ ।ফলে সব দল ই বলছেন বাংলা বাঁচাও।তবে কি বাংলা আগে বেঁচে ছিল না।একুশের ভোট হলেই কি বাংলা বাঁচবে ।

       বাংলার সংস্কৃতি আগেও ছিল আজও আছে।বরং রাজনৈতিক দলগুলি সেই সংস্কৃতি বাঁচাও বলে তাতে কালি ছেটাচ্ছেন।

কয়েকজন বহিরাগত এসে নিশ্চয় বাংলাকে গুজরাট বানাতে সক্ষম হবেন না।বাংলার সৃষ্টি ও কৃষ্টি এত ঠুনকো নয়।

রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বিবেকানন্দ, বিদ্যাসাগর, জীবনানন্দের বাংলাতে আজও শিল্প সাহিত্য তাঁর আপন কক্ষপথেই ঘুরছে।সংস্কৃতি আছে তার জায়গায় ।বরং অপসংস্কৃতির একটা প্রভাব জনমানসে ফেলবার চেষ্টা হয়তো হচ্ছে ।তবে তা বর্জন করেছেন বাংলার মানুষ ।

যতই গরম কড়া তে চাপিয়ে বঙ্গ সংস্কৃতির চচ্চড়ি ভাজবার চেষ্টা হোক তা সম্ভব নয় কখনোই।জনগন ইভিএমের বোতাম টিপেই সেই অপচেষ্টার জবাব দিতে প্রস্তুত ।

অপেক্ষা তো আর কটি দিনের।