Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

#সৃষ্টি সাহিত্য যাপন
#গল্প : অবসাদ##কলমে : মেহেলি ঘোষ#
" বেশ কিছুদিন ধরেই অবসাদ শব্দটি শুনছি । আজকাল চারপাশে খুব ঘুরছে । বাচ্চা, যুবক, মাঝ বয়সী, প্রৌড় সকলেই অবসাদে ভুগছেন নানাবিধ কারণে । কারুর অবসাদের কারণ পড়াশুনা তো কারুর কের…

 


#সৃষ্টি সাহিত্য যাপন


#গল্প : অবসাদ#

#কলমে : মেহেলি ঘোষ#


" বেশ কিছুদিন ধরেই অবসাদ শব্দটি শুনছি । আজকাল চারপাশে খুব ঘুরছে । বাচ্চা, যুবক, মাঝ বয়সী, প্রৌড় সকলেই অবসাদে ভুগছেন নানাবিধ কারণে । কারুর অবসাদের কারণ পড়াশুনা তো কারুর কেরিয়ার, কারুর প্রেম প্রণয় ঘটিত সমস্যা তো কারুর পারিবারিক সম্পর্ক গত । আর সব সমস্যার সমাধান হলো মৃত্যু । কি সহজ সমাধান বলুন !! 


আমি এই অবসাদের ব্যাপারটা ঠিক বুঝিনা জানেন তো । এবার নিশ্চয়ই কেউ কেউ বলবেন আপনি বোঝেন না কারণ আপনি জীবন থেকে সব পেয়েছেন । কথাটি সম্পূর্ণ ভুল । বরং আমি জীবনে যা কিছু চেয়েছি তার কিছুই পায়নি । তবুও কোনদিন অবসাদ ব্যাপারটা বুঝিনি । এবার প্রশ্ন হলো এর কারণটা কি  ? 


এর একটাই কারণ আমি আশাবাদী নই । কোনদিন কোনকিছু নিয়ে আশায় বুক বাঁধিনি তাই ভেঙ্গে পরিনি । যেমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি তেমন লড়েছি । আর দেখুন টিকেও আছি । আজ বহু গুণীজনের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের বক্তব্য রাখছি । 


আমি আমার দীর্ঘ পনেরো বছরের কেরিয়ারে যত কেস স্টাডি করেছি তাতে একটাই জিনিস কমন " এক্সপেক্টেশন " । জীবন থেকে কোনো এক্সপেক্টেশন রাখবেন না তাহলেই দেখবেন কোনো সমস্যা থাকবে না । চেষ্টা আমাদের হাতে । একবার না পারলে বারবার চেষ্টা করতে হবে । চেষ্টা করতে করতে ঠিক একদিন জিতব কিন্তু মৃত্যু কোনো সমস্যার সমাধান নয় । এটা কাপুরুষের কাজ । "....... 


সকাল থেকে অজস্র বার এই ভিডিওটি দেখে চলেছে বিপ্লব ঘোষ । এটা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নীলিমা সরকারের স্পিচ । যা তিনি প্রায় বছর খানেক আগে একটি টিভি চ্যানেলের আয়োজিত অবসাদের উপর একটি অনুষ্ঠানে দিয়েছিলেন । সেখানে তিনি চিফ গেস্ট হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলেন । নীলিমা সরকারের মায়ের অনুরোধে বিপ্লব ঘোষ ঐ টিভি চ্যানেলের থেকে এই ভিডিওটি আনিয়েছেন । বিপ্লব ঘোষ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অ‍্যাসিস্টেন্ট কমিশনার । 


মাস খানেক আগে নীলিমা সরকার মারা যান । মৃত্যুর কারণ অতিরিক্ত মাত্রায় ঘুমের ওষুধের সেবন । পুলিশ ইনভেস্টিগেশনে পাওয়া সাক্ষ্য, প্রমাণ অনুযায়ী এটি আত্মহত্যা । পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, ফরেন্সিক ইনভেস্টিগেশন, কোনো কিছুতেই সন্দেহজনক এমন কিছুই সামনে আসেনি যাতে করে এটা প্রমাণিত হয় আত্মহত্যা নয় খুন । 


একমাএ নীলিমা দেবীর মা মানতে নারাজ যে তার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন । তার মতে আত্মহত্যার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা মানুষটি কোনদিন আত্মহত্যা করতে পারে না । তাই তিনি পূর্ব পরিচিতির সূত্রে বিপ্লব ঘোষের দ্বারস্থ হন । বিপ্লব এবং নীলিমা বাল্যবন্ধু । বিপ্লব নীলিমাকে খুব কাছ থেকে চেনে জানে । তাই নীলিমার মায়ের মতো তারও প্রাথমিক বিশ্বাস এটা আত্মহত্যা নয় । আর যদি আত্মহত্যা হয়ও তাহলে শেষ এক বছরে কি এমন ঘটল যে এই রকম একজন আত্মবিশ্বাসী স্বনির্ভর মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলো ?


কেসটা নিয়ে এগোতে গিয়ে অনেক কিছুই জানতে পারে বিপ্লব যার ধারণা তার ছিলনা । প্রথমত জানা যায় দুবার গর্ভপাতের কারণে নীলিমা দেবীর ইউট্রাস ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফলে অস্ত্র প্রচারের মাধ্যমে সেটিকে বাদ দিতে হয় । তবে এটি অন্তত নীলিমা দেবীর অবসাদের কারণ হতে পারেনা তার কারণ তিনি বরাবরই কেরিয়ার সচেতন ছিলেন । সংসার, সন্তান ওনার কাছে প্রাধান্যের তালিকায় বরাবরই দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে এবং কেরিয়ার প্রথম স্থান । আর সবচেয়ে বড় কথা এই ঘটনা ঘটেছে ওনার বিয়ের বছর তিনেকের মাথায় । তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে এ বিষয়ে উনি এবং ওনার স্বামী ছাড়া পরিবারের আর কেউ জানত না । এমনকি নীলিমা দেবীর মাও নয়  । 


দ্বিতীয়ত প্রায় বছর খানেক আগে দেওয়া এই স্পিচটি নীলিমা দেবীর জীবনের শেষ স্পিচ । তারপরই ওনার গলায় ক্যান্সার ধরা পরে । ভোকাল কর্ডের ইনফেকশনটা ছড়িয়ে যাওয়ার ফলে অস্ত্রপ্রচার করে ওনার ভয়েস বক্স বাদ দিতে হয় । ওনার স্বামীর দাবি এরপরই নীলিমা দেবী অবসাদে ভুগতে শুরু করেন । অস্ত্র প্রচারের পরেও দীর্ঘ রেডিয়েশন ট্রিটমেন্টের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময়ই ওনার মনোবলে ভাঙ্গন ধরে । এরপরও তিনি নিজের মনকে শক্ত করে চিকিৎসার প্রতিটি ধাপ পেরিয়ে চলেছিলেন প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে জেতার আশায় কিন্তু সেখানেও সে হেরে যায় । স্পিচ থেরাপির সাহায্যে কিছুটা হলেও নিজের বাক শক্তি ফেরানোর সকল চেষ্টা বিফল হয় । ওনার বাক শক্তি চিরতরে চলে যায় । এটা একটা জোড়াল কারণ হতে পারে অবসাদের কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে তিনি মাস তিনেক আগে কেন একটি ফ্ল্যাট কেনেন নিজের নামে   ?


হ্যাঁ নিলিমা দেবী মাস তিনেক আগে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন নিজের নামে । যার বিষয়ে কেউই জানত না । এমনকি তার স্বামীর দাবী তিনিও নাকি এই ফ্ল্যাট কেনার ব্যাপারে কিছু জানতেন না । নীলিমা দেবীর স্বামী কিংশুক সরকার একজন নামকরা নিউরো সার্জন । ওনার বক্তব্য উনি কোনদিনই নীলিমা দেবীর রোজগার এবং বিষয় আষয় নিয়ে মাথা ঘামাননি । কারণ প্রয়োজন পরেনি । ওনার নিজস্ব যা সম্পত্তি রয়েছে তাই ভোগ করার কেউ নেই । এটা সত্যি ওনার বিপুল পৈতৃক সম্পত্তির উনিই একমাএ উত্তরসূরী । এছাড়াও উনি নিজের উপার্জনে কলকাতার বুকে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি সব করেছেন । 


এবার প্রশ্ন হলো কাউকে কিছু না জানিয়ে নীলিমা দেবী হঠাৎ ফ্ল্যাট কিনলেন কেন   ? তাও আবার এমন একটি সময় যখন তার জীবন মৃত্যু অনিশ্চিত  ? তাহলে কি উনি স্বামী সংসার ত্যাগ করে একা থাকার কথা ভাবছিলেন   ? কিন্তু কেন ? আর যদি সত্যিই নীলিমা দেবী অবসাদে ভোগেন ! সংসারের সকল মায়া ত্যাগ করে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে মানসিক প্রস্তুতি নেন ! তাহলে সম্পত্তি কেন কিনবেন  ?  


তবে নীলিমা দেবী যে অবসাদে ভুগছিলেন সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই । পোস্টমার্টম রিপোর্ট অনুযায়ী নীলিমা দেবীর ব্রেনের নিউরোট্রান্সমিটার সেরোটোণিণ সাভাবিকের তুলনায় খুব কম ছিলো । অর্থাৎ এর থেকে এটি প্রমাণিত যে উনি দীর্ঘদিন ধরে ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন কিন্তু তাতে এটা প্রমাণ হয়না যে তিনি আত্মহত্যা করেছিলে । আবার এটাও প্রমাণ হয়না যে তিনি আত্মহত্যা করেননি ।


এবার প্রশ্ন হলো ওনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক কেমন ছিল   ? সন্তান না হওয়ার প্রভাব কি ওনাদের পারস্পরিক সম্পর্কে চির ধরিয়েছিল ? নীলিমা দেবীর স্বামীর দাবি তাদের সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো ছিল । তারা একে অপরকে যথেষ্ট ভালোবাসতেন এবং সর্বপরি একে অপরের প্রতি সম্মান ও বিশ্বাস ছিল অটুট । ওনার মতে যেহেতু উনি পেশায় ডাক্তার তাই জীবনে এতরকমের জটিল কেস দেখেছেন ফলে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো রোগ এবং রোগীর মূল্যায়ন তিনি করেন না । তার মতে বৈবাহিক সম্পর্কের কান্ডারী সন্তান নয় পারস্পরিক বোঝাপড়া । তাদের পারস্পরিক বোঝাপড়া যথেষ্ট ভালো ছিল ।


যদি ধরে নেওয়া হয় নীলিমা দেবীর স্বামী ঠিক । ওনাদের মধ্যে সবকিছুই ঠিক ছিল । তাহলে উনি ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন কেন   ? তাহলে কি কেবলমাত্র তার শারীরিক অসুস্থতাই ছিল তার ডিপ্রেশনের কারণ  ? হতেও পারে । 


মনে সহস্র প্রশ্ন, পুলিশ ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং ভিডিওটি নিয়ে বিপ্লব বাবু অবশেষে দ্বারস্থ হন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে ।  


মনোচিকিৎসাবিদের মতে... " একজন ব্যক্তি তার ভাষণে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী রূপে তুলে ধরার মানে এই নয় যে তিনি ভিতরে ভিতরে অবসাদে ভুগছেন না । বরং হিউম্যান সাইকোলজি উল্টো কথা বলে । সব মানুষেরই প্রবণতা থাকে তার দুর্বলতা লুকানোর । হয়তো নীলিমা দেবীর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে,আবার নাও হতে পারে ।


অবসাদের ক্ষেত্রে কোনো একটি মাত্র কারণ দায়ী থাকে না । বরং বিশ্বব্যপী বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এর জন্য জেনেটিক বা বংশগতির প্রভাব বা বায়োলজিক্যাল বা জীববিদ্যার প্রভাব এবং মনোদৈহিক প্রভাব ও জীবনব্যাপী বিভিন্ন মাত্রার মানসিক চাপের ফলে বিষণ্ণতা সৃষ্টি হতে পারে। মস্তিষ্কের জৈব রাসায়নিক সমস্যার বহুমাত্রিক প্রভাবেও বিষণ্ণতা হতে পারে । মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট রাসায়নিক অবকাঠামো, নিউরোট্রান্সমিটারের নানাবিধ সমস্যার জন্য বিষণ্ণতা-সংক্রান্ত মানসিক অসুস্থতা সৃষ্টি হতে দেখা যায় । নীলিমা দেবীর ক্ষেত্রে এটি একটি উল্লেখযোগ্য কারণ । তার পোস্টমর্টেম রিপোর্টে নিউরোট্রান্সমিটার সেরোটোণিণের মাত্রা অনুযায়ী তিনি মেজর ডিপ্রেসিভ ডিজঅর্ডারে ভুগছিলেন । হতেই পারে ক্যান্সারের চিকিৎসা করার সময় তিনি মস্তিষ্কের জৈব রাসায়নিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন ।


তবে যেহেতু নীলিমা দেবী নিজে মনোচিকিৎসক ছিলেন সেহেতু অবসাদের কবল থেকে নিজেকে বার করে আনার পন্থাও তার জানা ছিল । হয়তো সেই কারণেই তিনি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন সকলের থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে একা বাঁচবার জন্য । এই ধরনের রুগীর ক্ষেত্রে কোনকিছু বলা মুশকিল । এই মুহূর্তে একটি কাজ করার কথা ভেবে পরের মুহূর্তে অন্য কাজ করতে পারে । তাই অবসাদ তো ছিল কিন্তু তার কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন কি করেননি তা বলা মুশকিল ।


এগুলো ছাড়াও নানাবিধ পারিবারিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত দুরবস্থা ব্যক্তির জীবনে ডিপ্রেশনের অবস্থা সৃষ্টি করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পারিবারিক কলহ ও মা-বাবার দাম্পত্য অশান্তি পরিবারের অন্য সদস্যদের মনোবৈকল্যের সৃষ্টি করতে পারে এবং এ জাতীয় মানসিক সমস্যার ভেতরে বিষণ্ণতার অবস্থান থাকে এক নম্বরে । "... 


এ কথা শুনে বিপ্লব তৎক্ষণাৎ প্রশ্ন করে..." তার মানে নীলিমার এই অবস্থা ওর পরিবারের অন্য সদস্যের মনোবৈকল্যের সৃষ্টি করতে পারে   ? "


" অবশ্যই পারে । ওনার পরিস্থিতির প্রভাব যার উপর সবচেয়ে বেশি পরছে অথবা তার সাথে জড়িত অন্য কারুর । "


মনোচিকিৎসাবিদ এবং বিপ্লবের পেশাগত অভিজ্ঞতা মিলিয়ে দুইয়ে দুইয়ে চার করতে সময় লাগেনা । পুলিশের কাছে খুনের প্রাইম সাস্পেক্ট ছিল নীলিমা দেবীর স্বামী । বিপ্লব সেইভাবেই কেসটিকে এগিয়ে নিয়ে চলে । দফায় দফায় কিংশুক বাবুকে জেরা করতে থানায় নিয়ে আসা হয় তার পরিবারের সামনে দিয়ে । 


অবশেষে ছেলের এইরূপ হয়রানি সইতে না পেরে তার মা অর্থাৎ নীলিমা দেবীর শাশুড়ি মুখ খোলেন । তিনি স্বীকার করেন চোখের উপর তার ছেলের ভবিষ্যৎ শেষ হতে দেখে তিনি বাধ্য হন এ কাজ করতে । কিংশুক বাবু এবং নীলিমা দেবী গোপন করলেও তিনি জানতে পেরে গিয়েছিলেন ইউট্রাস বাদের কথাটা । এটা তাকে ভিতরে ভিতরে কুরে কুরে খেতো যে তার ছেলে নীলিমার জন্য কোনদিন পিতৃত্বের সুখ পাবেনা । তাও তিনি সবটা মেনে নিয়েছিলেন কিন্তু সেদিন তার মনোবল সম্পূর্ণ ভেঙ্গে যায় যেদিন জানতে পারে তার পূত্রবধূর ক্যান্সারের কথা । তার মনে হয় " ছেলেটা কি তাহলে আজীবন ঘরে বাইরে রুগীই ঘেঁটে যাবে  ? জীবনে কি কোনো সুখ পাবে না আমার ছেলে  ? " এসব ভাবনা চিন্তা তার মনকে দিনে দিনে বিষিয়ে তুলতে থাকে । তিনি ছেলের অনুপস্থিতিতে নীলিমাকে তার ছেলের জীবন থেকে চলে যেতে বলতেন । রোজ হাত জোড় করে তার ছেলের মুক্তি ভিক্ষা চাইতেন নিলিমার কাছে । কোনো ফল না হওয়ায় অবশেষে এই সিদ্ধান্ত নেন । একজন মা মন থেকে না চাইলেও নিজের কোলের সন্তানের মঙ্গল কামনায় অবসাদগ্রস্ত হয়ে আরেকজন মায়ের কোল খালি করে ফেলেন ।