Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ডবল ইঞ্জিন চাইছেন মমতার ইঞ্জিন থেকে নেমে যাওয়া অসফল চালকেরাই

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।কলকাতা ।করোনা যখন ভারতবর্ষের বেশ কিছু রাজ্যে আবার রক্ত চক্ষু দেখাতে শুরু করেছে ঠিক তখনই আমাদের রাজ্য খেলা হবে বলে সরাসরি মাঠ কাঁপাচ্ছেন ।আর এ খেলা যে তৃনমূল একা খেলছে তা নয়, সব রাজনৈতিক দলগুলি একযোগে এখন মাঠে।ভ…

 


তরুন চট্টোপাধ্যায় ।কলকাতা ।

করোনা যখন ভারতবর্ষের বেশ কিছু রাজ্যে আবার রক্ত চক্ষু দেখাতে শুরু করেছে ঠিক তখনই আমাদের রাজ্য খেলা হবে বলে সরাসরি মাঠ কাঁপাচ্ছেন ।আর এ খেলা যে তৃনমূল একা খেলছে তা নয়, সব রাজনৈতিক দলগুলি একযোগে এখন মাঠে।ভোটে না জিততে পারলে মাঠের বাইরের সাইড বেঞ্চে বসতে হবে।তাই সকলেই এখন কসরত করছেন ।খেলতে হবে জিততে হবে।যেন এ খেলা চলছে নিরন্তর ।

পাশের রাজ্য বিহারেও কিছুদিন আগে বিধান সভা ভোট হয়েছিল ।তবে তখন পুরোপুরি করোনা হাওয়া ।তাই বিধান সভা ভোট হলেও এত উন্মাদনা ছিল না।ভোট হয়েছিল শান্তিতেই।করোনা বিধি মেনেই।

কিন্তু একথা একেবারে ই বলা যাবে না বঙ্গের ভোটে করোনা বিধি মানা হচ্ছে ।নির্বাচন কমিশন নানা ভাবে চেষ্টা করলেও কি হবে।রাজনৈতিক দলগুলো যারা এ ভোটের খেলোয়াড় তাদের কিন্তু এ সবের বালাই চোখে পড়ছে না।সব দল মিটিং করছেন,মিছিল করছেন।কিন্তু কোথায় বিধি।অর্ধেক সভাতেই দেখা যাচ্ছে মাস্ক হীন মুখ।আর সভাই বা বলি কেন।পথে ঘাটে ও তো সেই এক ছবি।করোনা চলে গেছে।এসেছে নির্বাচন ।এসেছে খেলা।খেলতে হবে, জিততে হবে।নতুবা সমূহ বিপদ।

একদল উন্নয়নের ঢক্কানিনাদ, আর অন্য দল তো সোনার বাংলার ছবি বুকে ঘরে ঘরে।সোনার বাংলা তো হবে, কিন্তু কেমন বাংলা সে ছবির স্কেচ নেই কোথাও ।ফলে কি যে হচ্ছে সে কথা বলা যাবে না।

আবার আর এক দিকে যাঁরা এবারের ভোটে তৃতীয় শক্তি হিসেবে উঠে আসতে চাইছেন, তারাও সব ভুলে সেই খেলার মাঠেই।কংগ্রেস, বামপন্থী জোট খেলতে নেমে বুঝেছেন দল তাদের শক্তিশালী নয়।তাই ধর্ম গুরু আব্বাস সিদ্দিকী র সভা তে ভিড় দেখে তাঁকে ও দলে নিয়েছেন।না হলে খেলা হবে কি করে।

প্রায় প্রতিদিন দলে দলে বিমানে চেপে দিল্লি কলকাতা করছেন বিজেপির নেতারা।দিল্লি থেকেও নেতা আসছেন সপ্তাহে সপ্তাহে ।উদ্দেশ্য একটাই ।বঙ্গ জয়।এদিকে বিজেপি নেতা নেত্রী সমানে বলে চলেছেন ডবল ইঞ্জিন দরকার বাংলায় ।আর এই ডবল ইঞ্জিন চলে এলেই যেন উন্নয়নের বন্যা বহে যাবে রাজ্য জুড়ে ।

আসলে কি তাই।কোনদিন ও তা সম্ভব নয়।কারন রাজ্যের উন্নয়নের জন্য রাজ্যের মানুষের সচেতন হওয়া টা জরুরি ।কাকে ক্ষমতায় আনবেন তা নিয়ে বলাটি নিশ্চয় যুক্তি যুক্ত হবে না।তবে বলতে পারি সিঙ্গল বা ডবল ইঞ্জিন এলেও কিছু হবে না।রাজ্যের মানুষকেই দায়ভার নিতে হবে।

প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারের সাহায্য করা দরকার ।টাকা ছড়িয়ে দিলে ভোট হয়তো আসে কিন্তু উন্নয়ন আসে না।ব্যাঙ্কের থেকে লোন নিয়ে সেই টাকা পেটে খেলে পেট ভরে ,ব্যাঙ্কের লোন শোধ করা যায় না।কিন্তু সেই টাকা যে কাজের জন্য নেওয়া সেখানে লগ্নি করলে অসুবিধা হয় না।কন্যাশ্রীর টাকা দিয়ে দামি শাড়ি কিনলে মন ভরে কিন্তু কাজের কাজ হয়না। সবুজ সাথীর সাইকেল নিয়ে পাড়া চষে বেড়ানো যেতে পারে,কিন্তু সেটিকে আসল কাজে লাগানো দরকার ।

এসব কথা শুনে হয়তো অনেকেই গোঁষা করতে পারেন।কিন্তু উদ্দেশ্য সিদ্ধ তো নৈব নৈবচ।সরকার যে কাজে যেটি দিচ্ছেন সেটিকে সেই কাজে লাগানো টাই মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ।তাতে সরকারের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।সরকার একা কিছুই করতে পারেন না, যদি না জনগন সেটিকে ঠিকমতো কাজে লাগান।

সামনে ভোট।দিল্লিওলারা ক্রমাগত বলে চলেছেন এই দেব তাই দেব।সোনার বাংলা গড়ে দেব।কিন্তু তারা কি সোনার গুজরাট গড়তে পেরেছেন।শুধু কথার ফুলঝুরি জ্বালিয়ে ভোট এলেও উন্নয়ন যে আসে না তাতো পরীক্ষিত সত্য ।নোট বাতিল করে যেমন কালো টাকা উদ্ধার হয়নি ঠিক তেমনই সোনার বাংলা ও হবে না।তবুও খেলা হবে।ভোট ও হবে।

সদ্য বিজেপি দলে নাম লেখানো শুভেন্দু অধিকারী প্রায় সব সভাতেই বলেন লাল মাটির দিলীপ ঘোষ ও বালু মাটির শুভেন্দু একসঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।আসলে হাত মেলানো তো হয়েছে।তবে সেই হাত কি উন্নয়ন করবে।প্রশ্ন তো থাকছেই।

তৃনমূল দশ বছর শাসন করছে,বামপন্থীরা একটানা 34 বছর, আর কেন্দ্রীয় সরকারে বিজেপি ।কিন্তু কি পেলাম কি পাবো তা নিয়ে খতিয়ান তো আছে জনগনের নজরে।কটি শিল্প হয়েছে দেশজুড়ে ।যারা বলতেন কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যত তারাও কি করেছেন জনগন জানেন।ফলে কে কাকে ভোট দেবেন তা সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরাই ।

জনগন চান তাঁরা যেন নিজের ভোট টি নিজে দিতে পারেন।তাঁর হয়ে অন্য কেউ যেন ভোট না দেন।

রাজ্য ও কেন্দ্র নিয়ে চলে দেশের সরকার ।সংবিধান অনুযায়ী এটিই নিয়ম।রাজ্য ও কেন্দ্র নিজ নিজ উন্নয়নের কাজ করবেন।সেখানে রাজনৈতিক ভাবে দ্বিমত থাকলেও উন্নয়ন নিয়ে দ্বিমত থাকবে কেন।

ভারতবর্ষের নাগরিক হিসেবে সবার সমানাধিকার ।রাজ্য এগিয়ে চললে দেশ এগিয়ে যাবে।আবার দেশ এগিয়ে চললে রাজ্য ও পিছনে পড়ে থাকবে না।

করোনা মহামারী আকার ধারন করেছিল দেশ জুড়ে ।কোন এক রাজ্য কে দায়ী করা যায় না।কিন্তু রাজনিতী করতে গেলে আবার এসব কথা নাকি বলা যাবে না।

তৃনমূল দল ছেড়ে যাঁরা আজ বিজেপি দলে তাঁরা ও কিন্তু দেশের উন্নয়নের থেকেও নিজের প্রভাব প্রতিপত্তির দিকেই নজর দিতে ই দলত্যাগ করেছেন।

সিঙ্গেল ইঞ্জিন, ডবল ইঞ্জিন এসব হলো ভোট জেতার কৌশল।উন্নয়নের কৌশল তো নয়ই ।উন্নয়নের কৌশলের জন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা ও সেই পরিকল্পনার বাস্তবিক রুপায়ন।

রাজ্যের মমতা বন্দোপাধ্যায়ের শাসন কালে পরিকল্পনা ছিল সঠিক ।রুপায়নে হয়তো কোন কোন জায়গায় কিছু কিছু অসুবিধা হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী নিজেও সেকথা স্বীকার করেছেন।

বিরোধী দল আমফানে কাটমানি নিয়ে মমতা সরকারের বিষোদ্গার করছেন।কিন্তু মনে রাখতে হবে সমগ্র রাজ্য জুড়ে যে লিস্ট তৈরি হয়েছিল তাতে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ছিল না।তবুও মাঠে নেমে প্রশাসন কে কাজে লাগিয়ে সঠিক পরিকল্পনা তিনি করে তবে মাটি ছেড়ে ছেন।সেটি কিন্তু বিরোধী রা বলছেন না।

রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন চাইছেন বঙ্গ বিজেপির নেতা নেত্রীরা।আর এদের মধ্যে সিংহভাগই এসেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায় নামক উন্নয়নের কারিগরের গাড়ি ছেড়ে ।

বালু মাটির শুভেন্দু আর লাল মাটির দিলীপ ঘোষ ও চাইছেন ডবল ইঞ্জিন ।মোদীর সরকার চাইছেন এই দলের সকলেই।

আর তৃনমূল বলছেন আমাদের ইঞ্জিন মমতা বন্দোপাধ্যায় ।উন্নয়নের কুশীলব।

খেলা হবে ডবল ইঞ্জিন চাওয়া দলের সঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সিঙ্গল ইঞ্জিনের।

আর ফলাফল সেই 2 রা মে।হাতে পেন্সিল নিয়ে আমরা অপেক্ষায় ।