ছোট গল্প:- রোদ বালিকা 🖋ইন্দ্রনীল কর তারিখ:- ০৫\০৪\২১ চুচুঁড়া
💚🧡💚🧡💚 রোদ বালিকা 💚🧡💚🧡💚 ❣🍀❣🍀❣ইন্দ্রনীল❣🍀❣🍀❣
সকাল ১০ টা, খুব আরামে ঘুমোচ্ছিলাম কিন্তু বন্ধুজাতি নামক যে পদার্থ আছে এদের আবার আরাম সহ্য …
🖋ইন্দ্রনীল কর
তারিখ:- ০৫\০৪\২১
চুচুঁড়া
💚🧡💚🧡💚 রোদ বালিকা 💚🧡💚🧡💚
❣🍀❣🍀❣ইন্দ্রনীল❣🍀❣🍀❣
সকাল ১০ টা, খুব আরামে ঘুমোচ্ছিলাম কিন্তু বন্ধুজাতি নামক যে পদার্থ আছে এদের আবার আরাম সহ্য হয় না।। তো আমার আরামটা যে তাদের সহ্য হবে সেই আশা করাটাও রীতিমতো নিরাশা।। তাই এই সক্কাল বেলা ফোনের বাজখাই রিংটোনে চোখ মেলে তাকাতে হলো আমায়।।বিরক্ত নিয়ে ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়েই দেখি বেস্টুর কল।। নামটা দেখে বিরক্তিটা মুহূর্তেই কয়েক ধাপ বেড়ে গেলো। । ইচ্ছে করছে ফোনের মধ্যে ঢুকে শয়তানটাকে কয়েকটা চড় থাপ্পড় দিয়ে আসি...বিরক্তিকর।।
- হ্যাঁ বল,,কি বলবি?
- বন্ধু ??(চেঁচিয়ে)
- কি হয়েছে?
- বন্ধু ??
- থাপ্পড় চিনিস?? এক থাপ্পড়ে গাল ফাটিয়ে ফেলবো। বন্ধু বন্ধু না করে ঝেড়ে কাশ। গল্প কি?
- বন্ধু ,, জানিস কি হয়েছে??
- তুই বলবি না আমি ফোন রাখবো??
- আরে রেগে যাচ্ছিস কেন??
- না রাগবো কেন? তোর মধুর সুর শুনে নাচতে ইচ্ছে করছে(তীক্ষ্ণ গলায়)
- তো নাচ না,,,আমি বারন করেছি নাকি??
- এই তুই ফোন রাখ,,,শয়তান।
- আরে আরে শোন শোন,,,জানিস ওই ম্যাজিসেট্রট আমার জন্য ভেলেন্টাইন গিফ্ট পাঠিয়েছে,,,ভাবা যায়??
- ভাবা যায় কি না সেটা বসে বসে চিন্তা কর। আমি রাখছি।। খবরদার সারাদিনে কল করে মাথা খাবি তো খুন করবো।।
ওকে কিছু বলতে না দিতেই ফোনটা কেটে দিলাম।। এই এক যন্ত্রণাদায়ক মেয়ে। একটা বিষয় মাথায় ঢুকলে ওটা রিপিটেডলি চলতে থাকে ওর মাথায়।। এমনি মেজাজ আমার চারশো বিশ তার ওপর এসেছে গাঁজাখোরি গল্প শোনাতে।। সেই রাত বারোটা থেকে ভোর চারটে পর্যন্ত বসে ছিলাম বয়ফ্রেন্ড নামক মানুষটার একটা ম্যাসেজের আশায়। এটলিস্ট একটা উইশ তো করবে,,হাজার হলেও আজ ভ্যালেন্টাইস ডে।। কোথাকার কোন ম্যাজিস্ট্রেট আমার বেস্টুকে সকাল না হতেই গিফ্ট পাঠিয়ে চলেছে আর ওনার কোনো খবর নেই।।কেমন লাগে?? তাই বিরক্ত হয়ে শেষ মেশ আমিই ফোন করলাম।। তিন তিন বার রিং হওয়ার পর মহারাজের ফোন ধরার সুযোগ হলো।। ফোনটা ধরেই বাজখাঁই গলায় বলে উঠলেন,,
- কি প্রবলেম তোর??
- কি প্রবলেম মানে?? কোথায় তুমি?
- কোথায় আমি মানে??এতো সকালে একটা ব্যাচেলার ছেলেকে তুই ফোন করে ডিস্টার্ব করছিস তোর লজ্জা করছে না? আবার জিজ্ঞেস করছিস আমি কোথায় ??
- এখানে লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু আমি খুঁজে পাচ্ছি না শুভ্র দা,,সো লজ্জা পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।। আর এখন সকাল?? দুপুর হতে চললো,, দশটা বেজে গেছে অলরেডি(রাগী গলায়)
- দশটা বাজছে তো তোর প্রবলেম কি??ব্যাচেলারদের দশটা সময়ও ভোর চারটে।। আর রবিবার হলে তো কথাই নেই।।
- বাজে কথা বাদ দিয়ে বলো তো তুমি আছো কোথায় ??
- কোথায় আবার?? ইউনিভার্সিটির হলের যে সিটটা আমার জন্য বরাদ্দ তার ওপর কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে ছিলাম।। কিন্তু তুই আমার ঘুমের বারোটা বাজিয়েছিস। ফাজিল মেয়ে।(ধমক দিয়ে)
- তোমার কাছে আমার থেকে ঘুম বড় হলো, শুভ্র দা?( ও বলে রাখি ইনি শুভ্র দা, আগে আমাদের প্রতিবেশী ছিল , এখন অবশ্য কলকাতায় থাকে।)।
- অবশ্যই বড়। আরে তুই থাকিস সুদূর রানিগঞ্জ ।। এই নিঃসঙ্গ কলকাতায় এই ঘুমই আমার সাথী,,, যা এবার ফোট।।
- কিহহহ এতো অপমান,,,ফাইন তুমি থাকো তোমার ঘুম নিয়ে,, অসহ্য...
- এই এই কখন থেকে তুমি তুমি করছিস। ভুলে গেছিস আমি তোর থেকে ছ বছরের বড়। আপনি বল...
কিছু না বলেই ফোনটা কেটে দিলাম। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। ঠিক এই সময়ই দিদি একটা বাসন্তী রঙের শাড়ি নিয়ে খুশিতে গদগদ হয়ে বলে উঠলো,,
- এই রোদ.? শাড়িটাতে আমায় কেমন মানাবে রে??
- ভালো...কিন্তু কেনো?
- তোর দাদার সাথে ঘুরতে যাবো ভালোবাসা দিবস বলে কথা।
- দাদা রানিগঞ্জে কখন এলো,?(অবাক হয়ে)
- কাল রাতে এসেছে।। আমি যাই রেডি হই...
এবার রাগটা আরো মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো,,মানুষের বয়ফ্রেন্ড আসানসোল থেকে চলে আসছে আর এই বলদটা একটা উইশ পর্যন্ত করতে পারছেন না।। এতো ঘুম ওনার ।। ইচ্ছে করছে ওনার বিছানায় এক বালতি জল ঢেলে দিয়ে আসি যত্তোসব।। এতো মেজাজ খারাপের মধ্যে আবারো ফোনটা বেজে উঠলো...ভেবেছিলাম আবারো আমার তাড় ছেঁড়া বেস্টু কিন্তু না প্লাবন ফোন করেছে।।অনিচ্ছা সত্যেও ফোনটা ধরলাম..
- কি প্রবলেম??(বিরক্তি নিয়ে)
- বহুত সমস্যা বন্ধু ,,
- সমস্যা নিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে মর,, আমাকে ফোন করেছিস কেন??
- আরে বন্ধু ,,,গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ঘুরতে যাবো কি গিফ্ট দেবো বুঝতে পারছি না।। কিছু সাজেস্ট কর তো।
- আমার মাথা গিফ্ট কর ডাফার...
- তোর মাথা গিফ্ট করলে তো শুভ্র দা আমার মাথা কেটে ফেলবে রে..
- শালা,,মর তুই শুভ্র দার চামচা।।
ফোনটা কেটে মুখ ফুলিয়ে বসে আছি।। দিদিও দেখলাম নাচতে নাচতে সেজেগুজে বেরিয়ে গেলো।। আমি বুঝতে পারছি না, আমি কার বারা ভাতে ছাই দিয়েছি যার জন্য শুভ্র দার মতো এমন এক আনরোমান্টিক অপদার্থ বিএফ জুটেছে কপালে।।..সারাটাদিন এভাবেই কেটে গেলো একটা বার ফোনটাও করেনি সে,কে জানে নতুন কাউকে পেয়েছে কিনা। কি মনে করে বিকেলের দিকে একা একাই সাজতে বসে গেলাম। নীল শাড়ি,,হাত ভরা চুরি,,চোখে ঘন কাজল,,কপালে ছোট্ট টিপ, লম্বাচুলগুলো খুলে দিয়ে পায়ের পায়েলের রুনুঝুনু শব্দ তুলে হাঁটা দিলাম ছাদের দিকে।। ছাদের এক কোনায় আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছি আর ভাবছি আজ থেকে দুবছর আগের কথা।। আজকের এই দিনটাতেই শুভ্র দা প্রোপোজ করেছিলো আমায়।। কি অদ্ভুত ছিলো সব......
বই পড়ছিলাম হঠাৎই ফোনটা বেজে উঠলো।।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ১১ টা বেজে ৫৫ মিনিট। এতো রাতে শুভ্র দার ফোন দেখে অবাক হলাম। অবাকের পালা শেষ করে ফোনটা কানে নিয়ে হ্যালো বলেই বললাম,,
- শুভ্র দা এতো রাতে?
- হ্যাঁ ,,নিচে আয়।
- মানে??(অবাক হয়ে)
- মানে হলো।। তোরা যে দু' তলায় থাকিস।। তার সিঁড়ি বেয়ে তর তর করে নিচে নেমে আয়।। আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি।
- মানে কি? এতো রাতে তুমি রাস্তায় কি কোরছো??
- মশাদের সাথে পিকনিক করছি,,ডাফার।। এতো কথা বলছিস কেন?? নিচে নামতে বলেছি নিচে নাম ব্যাস।
- আমি পারবো না।। এতো রাতে নিচে ইম্পসিবল।
- সবই পসিবল।। দু মিনিটের মধ্যে নিচে আয়,,
- পারবো না।
- তুই পারবি,,,তোর বাপসহ পারবে
- তাহলে বাবাকেই বলো,, রাখছি
- খবরদার রোদ,,,দুমিনিটের মধ্যে নিচে না নামলে তোর অবস্থা যে আমি কি করবো,,তুই চিন্তাও করতে পারবি না।
কথাটা বলেই ফোনটা কেটে দিলো শুভ্র দা।। বোঝো ঠেলা,,শুভ্র দাকে আমি যথেষ্ট ভয় পাই,,মাকে তারচেয়েও বেশি ভয় পাই।। তবুও ভয় ভয় পায়ে মায়ের ঘরে উঁকি দিলাম,,মা এখনো ঘুমোয়নি।। কি করবো এখন? অনেক ভেবে মাকে বললাম,,নিচ তলার মহিমা দির কাছ থেকে ক্যালকুলেটার আনতে যাচ্ছি আমারটা কাজ করছে না।। মা কিছুক্ষণ আমার দিকে নিরব দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে নিজের কাজে মন দিলেন।।আমিও ঠাকুর ডেকে বেরিয়ে এলাম রাস্তায়।সোডিয়ামের আলোতে স্পষ্টই দেখতে পেলাম এলোমেলো চুলে,, একরাশ ক্লান্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শুভ্র দা।। গায়ে ব্রাউন টি-শার্ট,,একটা ব্ল্যাক জ্যাকেট,,ব্লু জিন্স,,কেটস আর ঘাড়ে একটা ব্যাগ।।আমাকে দেখেই ক্লান্তিমাখা হাসি দিয়েই বলে উঠলেন,,
- এসেছিস??
- হুম,,এখানে কোনো ডেকেছো?? বাড়িতে চলো।।
- নাহ,,এতো রাতে বাড়িতে গেলে তোর মা সন্দেহ করবে।
- কেনো??
- তুই বুঝবি না হাঁদা,,
কথাটা বলেই একগুচ্ছ টকটকে লাল গোলাপ বাড়িয়ে দিলেন আমার দিকে।।। কোনো ফর্মালিটি না করেই বলে উঠলেন,,,
- ফুলগুলো হাতে নে।। তোর জন্য।। খবরদার রোদ ছুঁড়ে ফেলবি না বা এটা বলবি না যে নিবি না।।নিজের টিউশনির টাকায় কিনেছি,,টাকার মায়া বড় মায়ারে পুচকি,,সো ছোড়াছুঁড়ি করবি তো এক চড়।
- কিন্তু এগুলো কেন??(কনফিউশড হয়ে)
- দেখ রোদ,,,তুই আমার দিকে দাদা দাদা নজরে তাকালেও আমি কিন্তু তোর দিকে ওলওয়েজ প্রেম প্রেম নজরেই তাকাই।। বুঝেছিস?? বুঝিস নি??
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি জানালাম যে বুঝিনি।।উনি চরম বিরক্তি নিয়ে আমার হাতে একটা উপন্যাসের বই গুঁজে দিয়ে বলে উঠলেন,,,
- তোকে বুঝতে হবে না।। এখন উত্তর দক্ষিণ না তাকিয়ে সোজা ঘরে যা।।
- কিন্তু??
- দেখ রোদ,,পুরো আট ঘন্টা জার্নি করে আসছি।।এখন বাড়িতে গিয়ে রেস্ট নেবো কাল আবারো ব্যাক করতে হবে।। সো কাহিনী না করে যা এখান থেকে...
আমিও আর কিছু না বলে ঘুরে দাঁড়ালাম।। দু কদম ফেলতেই পেছন থেকে ডাক পড়লো,,
- রোদ??
- হুহ(পেছন ফিরে)
- এদিকে আয়...
আমি ওনার কাছে আসতেই নিচে বসে আমার পায়ের দিকে হাত বাড়ালেন আমি ওমনি লাফিয়ে উঠলাম,
-",করছেন কি শুভ্র দা??"
তার উত্তরে বিরক্তিমাখা চাহনি দিয়ে বলে উঠলেন,,
-"এতো লাফাস কেন?? চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক।।তোর পা কেটে নিয়ে যাবো না।"
আমিও এবার চুপচাপ মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে রইলাম।। উনি আমার পায়ে একটা কিছু পড়িয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়েই কানের কাছে ফিসফিস করে বলে উঠলেন,,
- "ভালোবাসি তোকে,, এটা বুঝতে এতোক্ষণ লাগে??"
কথাটা শুনে দু মিনিট হ্যাং মেরে দাঁড়িয়ে থেকে বোকার মতে বলে উঠলাম,,
- " তুমি কি আমায় প্রোপোজ করছো শুভ্র দা?" আমার কথাটা কানে যেতেই দিলেন এক ধমক।। সেদিন ওনার এক ধমকে দৌড়ে পালিয়েছিলাম ।।কথাটা ভাবতেই মনের অজান্তেই হাসি ফুটে উঠলো ঠোঁটের কোনে। দু বছর ঘুরে আজও ওই একইদিনে দাঁড়িয়ে আছি আমি।। তারিখটা যেমন সেম ঠিক তেমনই আমিও আগের মতোই আছি।।শুধু বদলে যাওয়া বছরগুলোর মতো বদলে গেছে শুভ্র দা,,,হঠাৎই পায়ের শব্দে পেছন ফিরে তাকালাম।। নীল পাঞ্জাবী,, এলোমেলো চুল,,ক্লান্তি ভরা হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শুভ্র দা।। সেইদিনের মতো আজও ক্লান্ত সে। কেন জানি অবাক হলাম না,,মন বলছিলো উনি আসবেন।। উনি হাসি মুখে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে হাতে একগুচ্ছ লাল গোলাপ গুঁজে দিতে দিতে বলে উঠলেন,,,
- কি রে?? শাড়ি পড়ে পেত্নী সেজে আছিস কেন??আমি পেত্নীদের দেখে ক্রাশ খাই না।।
ওনার কথায় হেসে উঠলাম।। হাত দিয়ে ওনার এলোমেলো চুলগুলো ঠিক করে দিতে দিতে বললাম,,,
- তো মশাই এতোক্ষণে??
- আর বলিস না,,রাতে বাস মিস হয়ে গিয়েছিলো।।সকালে বাস পেলাম দশটায় আর এখানে আসতে আসতে পাঁচটা।। বাস থেকে নেমেই সোজা তোর কাছে।। খিদেয় পেট জ্বলে গেল।।
- উইশ করোনি কেন??(মুখ কালো করে)
- উইশ করার কি আছে?? তুই আমার জন্য ওলওয়েজ স্পেশাল।। স্পেসিফিক কোনো দিনে ভালোবাসা দেখাতে পারবো না।
কথাটা বলেই নিচে বসে পড়লেন উনি।।। আমি অবাক হয়ে বললাম,,
- " নিচে বসলে কেনো?"
- আমার ইচ্ছে তোর কি? এই এই তুই নিচে বসছিস কেন?
- আমার ইচ্ছে তোমার কি?(নিচে বসতে বসতে মুচকি হেসে)
- খুব পেকেছিস,,
কথাটা বলেই আবারো আমার পায়ের দিকে হাত বাড়ালেন।। আমি পা সড়িয়ে নিতে গেলেই শক্ত করে চেপে ধরে রাগী চোখে তাকালেন আমার দিকে।। এবার আমি চুপ।। গালে হাত দিয়ে ওনার পাগলামো দেখছি।।পকেট থেকে আলতার কৌটা বের করে খুব যত্ন করে লাগাচ্ছেন পায়ে।।
- এসব কি??
- দেখছিস না?? তোর এই গেটাপের সাথে আলতাটাই মিসিং ছিলো। এবার পার্ফেক্ট।
- কিভাবে জানলে শাড়ি পড়বো?
- তোকে তোর থেকেও বেশি জানি আমি।।
- ওনার দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।। এই ছেলেটা আমায় হাজারবার নতুন নতুন পদ্ধতিতে মুগ্ধ করে চলেছে ক্রমাগত।। সবার বয়ফ্রেন্ডের মতো দামি দামি গিফ্ট কখনোই দেয় না সে।। কিন্তু প্রত্যেকবারই অদ্ভুত সব কাজ করে অসাধারন কিছু মোমেন্ট ক্রিয়েট করে সে।। এগুলোতেই যে প্রশান্তি!! হঠাৎই উনি বলে উঠলেন,,,
- তুই কাল থেকে দু ঘন্টা করে রোদে দাঁড়িয়ে থাকবি।। এটা তোর হোমওয়ার্ক। বুঝলি?
- কিন্তু কোনো? (অবাক হয়ে)
- তুই ফর্সা হয়ে যাচ্ছিস।। তোর উজ্জল শ্যাম রংটায় আমার চাই।। ফর্সা হলে খুন করে ফেলবো।।
- এহহ,,,নিজে যে সাদা ভূত সেটা??
- ওটা আমায় মানায়,,আর এটা তোকে।। আমি এই তোকেটাকেই চাই সারাজীবন ,,উইথআউট এনি চেঞ্জেস।। এই বিষয়ে নো কম্প্রোমাইজ,,এক ফোঁটাও চেঞ্জ হবি না বলে দিলাম।
- হুহ,,
- আচ্ছা চুল খুলে রেখেছিস কেন?? খোঁপা কর।।দাঁড়া আমি করে দিচ্ছি,,কিভাবে করতে হয় সেটা বলে দে শুধু।। আজ নিজে হাতে খোঁপা বেঁধে বেলি ফুলের মালা জড়াবো তাতে।।
উনি খোঁপা করার চেষ্টা করছেন,,,আমি খিলখিল করে হাসছি আর উনি সমান তালে বকে চলেছেন।।। এভাবে বত্রিশ পাটি দাঁত বের করে হাসলে নাকি তার বুকে ব্যাথা করে।। ঠিক এমন একটা পরিস্থিতিতে মা ছাদে এসে হাজির।। মাকে দেখেই সে বিদ্যুৎ বেগে উঠে দাঁড়ালো। আমিও লজ্জায় লাল,,,
- কি রে শুভ্র কখন এলি?
- এইতো কিছুক্ষণ কাকিমা,,
- তা হঠাৎ??
- গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে এসেছি।।ভালোবাসা দিবস বলে কথা।
- ও তাই? তো কোথায় তোর গার্লফ্রেন্ড??(ভ্রু কুচঁকে)
- বা...বাড়িতে ওর বাপের বাড়িতে।।হেহেহে(জোড়পূর্বক হাসি দিয়ে)
- আচ্ছা?? খুব ভালো,,তো রোদ? তোর হাতে এতো ফুল? কে দিলো?
এবার দুজনেই মাথা চুলকোতে লাগলাম।। মা যে বুঝে গেছে তা বেশ বুঝতে পারছি।। শুভ্র একটা গাঁজাখোরি যুক্তি দিতে গিয়েছিলো মা ওকে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়েই মুচকি হেসে বলে উঠলেন,,,
- হয়েছে,,লাগবে না। বেশ বুঝতে পারছি। ড্রামা শেষ হলে খেতে আয়।। রোদ আজ ফ্রায়েড রাইস আর চিলি চিকেন রান্না করেছে।।
- কিহহহহ?? আমার বউ...(মা তাকাতেই)মানে ,,,,,,আমার ও রান্না করেছে?
ওনার কথায় মা হাসতে হাসতে নিচে নেমে গেলেন।। আমিও হাসতে হাসতে শেষ।। সেই হাসিতে মিশে আছে তার মুগ্ধতা, যে মুগ্ধতায় আমি হাজারবার মুগ্ধ হতে চাই।।
🍁ইন্দ্রনীল🍁
💛💙💛💙💛💙💛💙💛💙💛💙💛💙💛