Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

.                   অণুগল্প 
.           একটুকু কথা শুনি
.              -----  সুজিত চক্রবর্তী 
..     আবার বেজে উঠল মোবাইল । কার ফোন দেখার সময় নেই  তৃণার । তার অফিসে  ভীষণ কাজের চাপ । এখন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় একবার কফি খেয়ে আবার বসব…

 


.                   অণুগল্প 


.           একটুকু কথা শুনি


.              -----  সুজিত চক্রবর্তী 


.

.     আবার বেজে উঠল মোবাইল । কার ফোন দেখার সময় নেই  তৃণার । তার অফিসে  ভীষণ কাজের চাপ । এখন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় একবার কফি খেয়ে আবার বসবে ভাবছিল । যদি ডাক্তার কল করে .... ! না ধরলে মা রাগ করবে ।আড়চোখে তাকায় । ফালতু কল নয়ডা থেকে ।সাসপেক্টেড স্প্যাম !  যাক , বাঁচা গেল । মা রেগে আছে । কি না বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে । আর দেরী না করে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে মা ! আরে এতো বড় একটা সিদ্ধান্ত এত তাড়াতাড়ি নেওয়া যায় নাকি ! 

.     হালকা পায়ে কাফেটেরিয়ার দিকে এগিয়ে যায় তৃণা । একলা টেবিলে বসে । কাপুচিনোর স্বাদ নেবার সাথে রোজকার মতো খুলে বসে ফেসবুক ।

সবার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় তার নেই । তবু

 দু' চার জনের সান্নিধ্য তার ভালো লাগে । বেশ খোলা মেলা পুরুষালি স্বভাবের বলে মনে হয় । 

মায়ের আনা ছাত্রদের বা সম্ভাব্য পাত্রদের সঙ্গে এদের মূল তফাৎ এটাই যে তারা তার  ছোট ছোট চাওয়া পাওয়ার কথা জানতে আগ্রহী। অন্যদিকে, মায়ের ছাত্ররা মেধা ও অর্থ কৌলীন্যে এগিয়ে থাকলেও যেন বেশ বোকা বোকা । এর আগেও  কয়েকজনকে ফিরিয়ে দিয়েছে তৃণা । 

বাবা বলেছে , " নো প্রবলেম । দেশে কি আর পাত্র নেই  নাকি  ? " 

.   চিন্তিত মুখে মা প্রশ্ন করেছে , " কেউ আছে? " 

 " থাকলে তো বলতাম তোমাদের! " তৃণা জবাব দিয়েছে । 

.   ইনবক্সে সবুজ আলো জানান দিচ্ছে রুদ্রর উপস্থিতি । যাকে কোনও দিন সে চোখে দেখে নি । 

তবু মনে হয় কত চেনা মানুষ । মনে হয় ওকে বিশ্বাস করে সব কথা বলা যায় । তৃণা জানে এরা ভার্চুয়াল । বিপদের সময় এদের পাশে পাওয়া যাবে না । কিন্তু, নিরাপদে দুটো মনের কথা তো বলা যাবে । রুদ্র তার সময় জানে । রুদ্র সেই সময়ের অপেক্ষায় বসে থাকে। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চায় মায়ের আনা এই ডাক্তার পাত্রের কথা ! ডাক্তারবাবুর তরফে প্রথম ফোন আজকে আসতে পারে --- সংবাদে প্রকাশ । 

রুদ্র একটার পর একটা মেসেজ পাঠাচ্ছে । তৃণা জবাব দিচ্ছে না একটাও । 

সবুজ আলো জ্বলজ্বল করছে ইনবক্সে  । 


গুনগুন করে গাইছে তৃণা, 


  " কিছু পলাশের নেশা, কিছু বা চাঁপায় মেশা,  

    তাই  দিয়ে সুরে সুরে রঙে রসে জাল বুনি ।। " 


   শুধু কি শরীর ছুঁয়ে ভালোবাসা হয় নাকি ! সবাই বুঝবে না এসব কথা । এই রহস্য সবার জন্য উন্মুক্ত করে রাখেন নি সৃষ্টিকর্তা । 


  " একটুকু ছোঁয়া লাগে, একটুকু কথা শুনি -- " 


*                             *                               *