Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

অধীর চৌধুরীর দূরদর্শিতার অভাবে কংগ্রেস কে এখন দূরবীনেও খুঁজে পাওয়া যাবে না

বাংলা সবুজ ময়।আটকে দিয়েছে বিজেপির রথ।তৃনমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ঘাসফুল যে বিজেপির ধর্মীয় আবেগকে মেনে নেবেন না সেকথা আমরা আগেও লিখেছি।ঘরের মেয়ে মমতাকেই চাইছেন বাংলা ।চাইছেন ধর্মের গন্ডী থেকে বেরিয়ে এসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্…

 


তরুন চট্টোপাধ্যায় 

বাংলা সবুজ ময়।আটকে দিয়েছে বিজেপির রথ।

তৃনমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ঘাসফুল যে বিজেপির ধর্মীয় আবেগকে মেনে নেবেন না সেকথা আমরা আগেও লিখেছি।ঘরের মেয়ে মমতাকেই চাইছেন বাংলা ।চাইছেন ধর্মের গন্ডী থেকে বেরিয়ে এসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে।ভোটের ফলাফলে বাংলার জনতা সেই রায় ই দিলেন।
কিন্তু এবারের ভোটে বামপন্থী ও আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে কংগ্রেস জোট গঠন করে কি পেলো ।একেবারে হাত খালি।আজও সকলেই কংগ্রেস দলকে ভারতবর্ষের সব থেকে ধর্ম নিরপেক্ষ দল হিসাবে ই মানুষ জেনে এসেছেন।সব ধর্মের মানুষ কে সঙ্গে নিয়ে চলা ছিল কংগ্রেস দলের পরম্পরা ।সেই ঐতিহ্য এতদিন ছিল অটুট।কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সোমেন মিত্র যতদিন বেঁচে ছিলেন সেই ধারা অক্ষুণ্ণ ছিল কংগ্রেস দলে।গোল বাঁধলো অধীর চৌধুরী রাজ্য সভাপতি পদে আসার পরে পরেই।
মালদা ও মুর্শিদাবাদ যা ছিল কংগ্রেসের শক্তি ঘাঁটি সেই ঘাঁটি তেও মমতার তৃনমূলের জয়জয়কার ।বরকত গনি খান চৌধুরীর সুজাপুর কদিন আগেও যেখানে কংগ্রেসের রমরমা সেই আসনটিও জিতে নিলেন আর এক গনি।তবে তিনি তৃনমূলের আবু গনি।অবাক তো হতেই হয়।
আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে বামপন্থীদের জোট হয়েছিল অন্য এক শর্তে ।আর সেই আব্বাস সিদ্দিকী বিগ্রেডের ময়দানে অধীর চৌধুরী কে সামনাসামনি অপমান করে।তবুও সব ভুলে কংগ্রেস কে ভরাডুবি করতে অধীর চৌধুরী তা হজম করেন।বামেদের প্রার্থী কে জেতাবেন অথচ কংগ্রেসের নাম করেননি বিগ্রেডে ।তবুও কিসের মোহে অধীর চৌধুরী মাথা নত করলেন তা এখন বিবেচ্য ।
কে এই আব্বাস সিদ্দিকী ।তিনি রাজনৈতিক কোন ব্যক্তিত্ব নয়।একজন ধর্ম গুরু হতে পারেন।নিজস্ব অভিলাষ পূরন করতে এলেন ভোট ময়দানে ।আর তার ফল তো তিনি পেলেন হাতে হাতে।সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেসের ভরা জমিতে হাল চাষ আর হলো না।সেখানে ঘাসফুলের রমরমা।
কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিশ্বাস হারালেন অধীর চৌধুরীর ওপর থেকে।মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকাংশ কংগ্রেস সমর্থন সরে গেল।আর এর পিছনে মূল কারন হলো আব্বাস সিদ্দিকীর এই আধা সমর্থন ।ফলে সব থেকে বেকায়দায় এবারের ভোটে কংগ্রেস দল।
বামপন্থীরা আখেরে তাদের ভাঙা ঘর গোছাতে ধর্ম গুরু আব্বাস সিদ্দিকী কে দলে নিয়ে ধর্মের তাস খেলতে নেমেছিলেন।সে খেলা বুঝলেন না অধীর চৌধুরী ।ফলে মুসলিম অধ্যুষিত মালদা ও মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস যেখানে কঠিন চ্যালেঞ্জ আনতে পারতো তা তো শূন্য হয়ে গেল।অধীরের গড়ে এত বড় ফাটল আর কখনোই হয়নি।
কংগ্রেসের এই পরাজয়ের পিছনে সব থেকে বড় কারন এখানকার অধিকাংশ মানুষই চান নি বিজেপি কে ক্ষমতায় আনতে।আব্বাস সিদ্দিকীর ওপর ছিল না কোন ভরসা।বামেদের ওপরেও ক্ষোভ ছিল আজীবন ।তাই কংগ্রেস কেও ব্রাত্য করে এককাট্টা হলেন।ফল যা হবার তাই।বাম ও কংগ্রেসের ভোট রামে না গিয়ে সোজা স্যুইং করলো তৃনমূলের ঘাসফুলের দিকেই।
শক্ত পোক্ত সরকার গড়তে পারে একমাত্র মমতার তৃনমূল ।আর তাঁর ই ফলশ্রুতি কংগ্রেসের মুছে যাওয়া ।
ধর্ম ও শুধুমাত্র সুড়সুড়ি দিয়ে মিছিলে ,সভায় লোক টানা গেলেও ইভিএমে তা যে আসে না তাতো আবার ও প্রমান হয়ে গেল।আব্বাস এর সভাতে মানুষ জনের ভিড় দেখে কংগ্রেস ও ভেবেছিল এই জোট ধর্ম নিরপেক্ষ হবে।কংগ্রেসের পুরানো ধারা বজায় থাকবে।
কিন্তু বিধি বাম।এবারের ভোটে বিজেপি কে যেমন ত্যাগ করলেন মানুষ সঙ্গে সঙ্গে একই ভাবে কংগ্রেসের ভরাডুবি ঘটলো।
এবারের ভোটে কংগ্রেস আব্বাস সিদ্দিকী ও বামপন্থী দের জন সমর্থন যে তলানীতে গিয়ে পৌছালে তার মূল কারন ই হলো অবিশ্বাস ।ভোটে জিতলেও এই জোট যে কোনভাবেই সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাবেন না তাতো জানাই ছিল।তাই সমস্ত ভোটের হাওয়া ঘুরে গেল মমতার তৃনমূলের দিকেই।
এবারের ভোটের সব থেকে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল বিজেপির ধর্মীয় তাস।আর তা বাংলার মানুষ বুঝেছিলেন বলেই সুনামির থেকেও বেশি গতিতে তা প্রত্যাখ্যান করলেন।রুখে দিলেন বাংলার বুকে বর্গী আক্রমণ ।
সেতো হলো।বিজেপির সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন মুছে গেল।
কিন্তু শতাব্দী প্রাচীন কংগ্রেস দলের ক্ষতি হলো সবথেকে বেশি।
অধীর চৌধুরীর হাতে বাংলার কংগ্রেস দল কে এখন দূরবীনেও দেখা পাওয়া যাবে না।
একে বিধিলিপি বলুন বা অধীরের দূরদর্শিতার অভাব ।
কংগ্রেসের পুরানো জমির ফসল নিজের ঘরে তুলে নিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায় ।
এর থেকে বড় ট্রাজেডি আর কি হতে পারে।