Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

আব্বাস সিদ্দিকীর জোট কি বামপন্থী দের ভরাডুবির মূল কারন

তরুন চট্টোপাধ্যায়
2019 সালে বিজেপি দলের বাড়বাড়ন্ত দেখে একটি কথা খুবই প্রচলিত হয়েছিল।আর তা হলো বামের ভোট রামে।আর তার ফলেই নাকি লোকসভা ভোটে বিজেপি দল আঠারোটি আসন ই শুধু জেতেন নি,সঙ্গে সঙ্গে বাংলার বেশ কিছু বিধানসভা আসনেও ভোট সংখ্যার…

 

তরুন চট্টোপাধ্যায় 


2019 সালে বিজেপি দলের বাড়বাড়ন্ত দেখে একটি কথা খুবই প্রচলিত হয়েছিল।আর তা হলো বামের ভোট রামে।আর তার ফলেই নাকি লোকসভা ভোটে বিজেপি দল আঠারোটি আসন ই শুধু জেতেন নি,সঙ্গে সঙ্গে বাংলার বেশ কিছু বিধানসভা আসনেও ভোট সংখ্যার নিরিখে এগিয়ে ছিলেন।কিন্তু একুশের ছবি তো একেবারেই আলাদা ।তবে কি এবার বলা যেতে পারে বামের ভোট তৃনমূলে।

অবশ্য একথা বলার সময় এখনো আসেনি।ভোট গননা শেষ হয়ে এখনো চব্বিশ ঘন্টা ও কাটেনি।ফলে ভোটের ময়নাতদন্তের কাজ এখনো শুরু করা যায় নি।তবে ভরাডুবি বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস একথা তো পাতে গরম সত্যি ।কারন আব্বাস সিদ্দিকী র সেকুলার দল একটি আসন পেলেও বাম ও কংগ্রেস একেবারে ভরাডুবি ।তবে কি বামের সমর্থক রাও আব্বাস সিদ্দিকীর মতো একজন ধর্ম গুরুর আগমন কে খোলা চোখে মানতে পারেন নি।

ভোটের আগে বামও কংগ্রেস জোটের বিগ্রেডের ছবিটি চোখের সামনে ভাসছে।এতদিন বামেদের ডাকা বিগ্রেডে সমাবেশ এক অন্য মাত্রা পেতো।এমনকি বেশ কিছুদিন আগে অশক্ত শরীরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এসেছিলেন এই বিগ্রেডে।আর তাঁর উপস্থিতি বিগ্রেড কে অন্য মাত্রা এনে দিয়েছিল।অথচ এবারের বিগ্রেড কেমন যেন হাইজ্যাক হয়ে গিসলো ধর্ম গুরু আব্বাস সিদ্দিকীর হাতে।যেন পুরো বিগ্রেড ঘিরেই একটি ধর্মের অন্ধতা কাজ করেছিল।পাকা চুলের বিমান বসু থেকে তাবড় বামপন্থী নেতারাও তাকিয়ে ছিলেন আব্বাস সিদ্দিকী কি বলেন।আর শয়ে শয়ে যুবক এসেছিলেন বিগ্রেড ভরাতে ভাইজান কেই সঙ্গী করে।কৃষক শ্রমিকের সেই বিগ্রেড সেদিন পরিনত হয়ে ছিল আব্বাস সিদ্দিকীর বিগ্রেডেই।আর সেদিন থেকেই বোধহয় পাইপ লাইন থেকে সরতে চলেছিল আম জনতা।যে বামপন্থীদের এতদিন মানুষ ধর্মের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসা চরিত্র বলেই জেনে ছিলেন সেই বামপন্থীদের ধর্ম গুরুর কাছে আত্মসমর্পণ কোন সম্প্রদায়ের মানুষকে ই খুশি করতে পারেন নি বলেই অনুমান ।

এবারের ভোটের ফলাফল বলছে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হলো বাম ও কংগ্রেস দল।ভাইজান রাজনিতীর মানুষ ছিলেন না।ফলে এই পরাজয়ের আঁচ হয়তো তাঁর গায়ে তেমন ভাবে লাগবে না।কিন্তু বামেদের তো ভাবতেই হবে।

এবারের ভোটে বেশ কিছু তরুন ও তরুনীর উজ্জ্বল মুখ ভোট বাজারে এনে বাজিমাত করতে চেয়ে ছিলেন বামপন্থী নেতৃত্ব ।ভেবেছিলেন কংগ্রেস ও ভাইজানের সেকুলার ফ্রন্টের জোরে পালে হাওয়া বইতে পারে।কিন্তু হাওয়া যে একেবারে উল্টো পথে বইবে একথা টি জানা ছিল না।ফলে যাদবপুর শিলিগুড়ির মতো আসনেও প্রবীন বামপন্থীদের পরাজয় ঘটলো।আর এ থেকে পরিত্রাণের পথ না খুঁজতে পারলে অদূর ভবিষ্যত যে দলটিকে ভোগাবে তাতো পরিস্কার ।

করোনা আবহে পাড়ায় পাড়ায় ক্যান্টিন তৈরি করে মানুষের পাশে থেকেও বামপন্থী দের এরকম ভরাডুবি তাঁরা নিজেরাও মানতে পারছেন না।কিন্তু ইভিএমের রায় কে তো মানতেই হবে।

নতূন ছেলে মেয়েদের কথা না হয় বাদ দিলাম।শুধু তারুন্য কে ভর করে তো আর ভোট জেতা যায় না।সঙ্গে ভোট যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ও জরুরি ।কিন্তু প্রবীনদের এই পরাজয় কেন।

আগেই বলেছি এবারের ভোট হাওয়া ঘরের মেয়ে মমতার পক্ষে সাইক্লোন হয়ে বাংলার মাটিতে আচড়ে পড়লো।সকাল থেকেই শুভেন্দু অধিকারী এগিয়ে থেকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয় লাভ করলেও শেষ হাসি হাসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী পাঁচ বছর পশ্চিমবঙ্গের শাসন ভার নিজের ক্ষমতায়  রেখে। মিনাক্ষী এখানে ঝড় তুললেও তেমন কোন দাগ কাটতে সম্ভব হলেন না।

তৃনমূল দলে মমতা পোস্ট বাকি ল্যাম্প পোস্ট ।আবার প্রমান হলো এই বাংলা তে মমতার বিকল্প মুখ আজও নেই।

কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট কে আবার ও ভাবতে হবে কোন ধর্ম গুরুকে দলে টেনে রাতারাতি বাংলা পাল্টে দেওয়া যায় না।

অনুব্রত মন্ডল আজও বললেন মমতা বন্দোপাধ্যায় অধিনায়ক, তিনিই কোচ।তিনি দল সাজিয়েছিলেন।দল জয়ী।

ভাঙড়ে আব্বাস সিদ্দিকীর দল খাতা খুলেছেন।এটিই একমাত্র শান্ত্বনা ।

কি ভাববেন বামপন্থীরা ।বিজেপি দলের জয় প্রকাশ মজুমদার তো বললেন আমরা প্রধান বিরোধী দল হয়েছি।আমরা ভুল ত্রুটি বিচার করে দেখবো।

মমতার এই জয় পিছিয়ে দিয়ে গেল বাম ও কংগ্রেসের স্বপ্ন কে।

মমতার বিকল্প মুখ যতদিন না উঠে আসছে বাংলায় ততদিন ঘাসফুল ঝড়কে আটকানো যে যাবে না তাতো তৃতীয় বার জয় নিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন।

রাজীবের এই পরাজয় প্রমান করে দিলো ব্যক্তি ইমেজ নয়।দলের ইমেজ বিশেষ করে মমতার ইমেজ ই ছিল জয়ের কারিগর।

তবে কি বামপন্থীরা এবার জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিকল্প মুখ খুঁজতে শুরু করবেন।ক্ষমতায় ফিরতে হলে সংগঠনের সঙ্গে সঙ্গে মুখের ও দরকার ।

মমতা যা করে দেখালেন।