Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

শিল্পী-সাহিত্যিকরা কি মেহনতী মানুষের জীবনে বহিরাগত ?

বিশেষ নিবন্ধ( ধারাবাহিক )#শিল্পী-সাহিত্যিকরা কি মেহনতী মানুষের জীবনে বহিরাগত ?#(এক)এই শ্রেণী বিভক্ত সমাজে যারা শ্রম করে উৎপাদন করে সমগ্র সমাজের জন্য ,সাধারণভাবে তাদেরকে আমরা মেহনতী মানুষ বলি। তারা উৎপাদন করে কিন্তু ভোগ করার অধিকা…

 


 বিশেষ নিবন্ধ( ধারাবাহিক )

#শিল্পী-সাহিত্যিকরা কি মেহনতী মানুষের জীবনে বহিরাগত ?#

(এক)

এই শ্রেণী বিভক্ত সমাজে যারা শ্রম করে উৎপাদন করে সমগ্র সমাজের জন্য ,সাধারণভাবে তাদেরকে আমরা মেহনতী মানুষ বলি। তারা উৎপাদন করে কিন্তু ভোগ করার অধিকার থেকে বঞ্চিত। এই উৎপাদকদের (শ্রমিকের) ক্রয় ক্ষমতা খুবই অপ্রতুল। উৎপাদক শ্রমজীবী মানুষের উৎপাদিত দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য নির্ধারণ করার ক্ষমতা তাদের হাতে থাকে না। মূল্য নির্ধারণ করার ক্ষমতা থাকে ধনিক শ্রেণী বা মালিক শ্রেণীর হাতে। মেহনতী মানুষের বেতন এত কম তাদেরই শ্রমে উৎপাদিত দ্রব্য সামগ্রী কেনার ও ভোগ করার সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত। এই বঞ্চিত মেহনতী মানুষের জীবন যাপন খুবই দুর্বিষহ। "মাঠময় ফসল/ক্ষুধা-তৃষ্ণাহীন মানুষের/শ্মশান সম্বল।" যারা আলো জ্বালে তাদের ঘর থাকে অন্ধকার। জীবন যাপনে ,পরিবারের প্রয়োজনের জন্য দু'মুঠো খাবার যারা আপনজনের মুখে তুলে দিতে পারেনা সেই মানুষগুলোর ব্যথার কাহিনী দরদী মনের লেখক তুলে ধরতে পারেন। এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু বাস্তবে

এই দরদী মন বঞ্চিত অভাবী ক্ষুধাতুর মানুষগুলোর কথা লিখতে গিয়ে সংকুচিত হয়। লেখার জন্য আবেগের স্ফুরণ হোঁচট খায়। তখনই প্রশ্ন দেখা দেয় সাহিত্যের প্রয়োজনে সাহিত্য নাকি জীবনের প্রয়োজনে বাস্তবের ছবি এঁকে চেতনা বিকাশে সাহিত্য সৃষ্টি করা ।

কবি শিল্পী-সাহিত্যিকরা নিঃসন্দেহে কলমের স্বাধীনতা ভোগ করেন। লেখা কতটা মর্মস্পর্শী হবে তা নির্ভর করে লেখকের মেহনতী মানুষ সম্পর্কে অন্তরঙ্গ প্রকাশের উপর। লেখক মেহনতী মানুষের জীবনের সঙ্গে নিজেকে কতটা জড়িয়ে ফেলতে পারে তা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। লেখক এর বাস্তব চেতনা তাকে কলম ধরতে সাহায্য করে। মানুষই লেখার উপাদান। এই মানুষ পিছিয়ে পড়া , হতদরিদ্র মানুষ। পাঠক সমাজের কাছে লেখার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করার জন্য বঞ্চিত হতদরিদ্র মানুষ গুলোর চরিত্র চিত্রিত হয়। লেখকের স্বাধীনতা থাকে ।কিন্তু বঞ্চিত মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকবে এমন কোন কথা নেই। লেখকের মর্জির উপর মানবিকতার উপর নির্ভর করে তিনি কতটা নিজেকে শোষিত বর্গের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করবেন । এখানেই আলোচনাটি দাঁড়িয়ে যায় , লেখক মেহনতী মানুষের রুটি রুজির সংগ্রামের সঙ্গে থাকবেন অথবা তিনি বহিরাগত হবেন। লেখক মেহনতী মানুষের জীবন সংগ্রামে নিজেকে যুক্ত করে তার লেখক সত্তা ও সংগ্রামী সত্তাকে এক করে ফেলতে পারেন। অথবা মেহনতী মানুষের জীবন যন্ত্রণার চৌহদ্দীর মধ্যে প্রবেশ না করেও কলম ধরতে পারেন। এই চিন্তা ভাবনাই আমার আলোচ্য বিষয়।

(চলবে)