Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

সৃষ্টি সাহিত্য যাপন
বিভাগ প্রবন্ধকৃষক ও কৃষিকাজমঞ্জুশ্রী মণ্ডল১৮/৬/২০২১
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা যতবারই খাই না কেন পেটের ক্ষুধা নিবারণের খাদ্য কৃষকরাই উৎপাদন করে থাকে। তাদের দ্বারা উৎপাদিত শস্যকণা আলু থেকে নানা রকম ভাবে প্রক্রিয়…

 


সৃষ্টি সাহিত্য যাপন


বিভাগ প্রবন্ধ

কৃষক ও কৃষিকাজ

মঞ্জুশ্রী মণ্ডল

১৮/৬/২০২১


সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা যতবারই খাই না কেন পেটের ক্ষুধা নিবারণের খাদ্য কৃষকরাই উৎপাদন করে থাকে। তাদের দ্বারা উৎপাদিত শস্যকণা আলু থেকে নানা রকম ভাবে প্রক্রিয়াজাত করে অন্যান্য খাদ্য বানানো যায়। ভাত, মুড়ি ,রুটি যেমন সরাসরি খেতে পাই বা খাওয়া হয় সেই শস্যকণা প্রক্রিয়াকরণ করে নানা রকম মুখোরোচক খাদ্য বানানো হয়ে থাকে। কিন্তু এই পেটের খোরাক যারা যোগান দেয় যে কাজের মধ্য দিয়ে আমরা ওই খাদ্য পেয়ে থাকি আমরা কখনও সেই ভাবে কৃষক ও কৃষি কাজের মূল্যায়ন করিনি।

কৃষিজাত দ্রব্য থেকে প্রক্রিয়াকরণের কাজটি কিন্তু যেখান থেকে হয় সেটা হল শিল্প। এবং কৃষি কাজ ও কৃষিজীবীদের মূল্যায়ন কোনদিন করা হয় না বলেই মানুষ আজ কৃষি কাজ ছেড়ে অন্য কাজে তথা পেশায় যুক্ত হতে যাচ্ছে।

কৃষিকাজে যে ধরনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন খরচ খরচাদি হয় সেগুলো হলো বোনা,রোপন ,নিড়ানি জলসেচ, শ্রমিক ,সার ,বীজ ,পরিবহন ইত্যাদি ইত্যাদি। এতগুলো ভাবে যেভাবে কৃষি জাত দ্রব্যটি ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় আসে ততগুলোতে থাকে প্রচুর খরচ  কিন্তু সেই খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের লাভ খুব খুব কম হয় ।যার জন্য কৃষকের উন্নতি কখনো সেভাবে হয়নি অথচ এই কৃষিজ ফসল ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে যে দাম লাগে তার দশভাগের একভাগ বা আট ভাগের এক ভাগ দাম কৃষক পেয়ে থাকে ।যার জন্য কৃষকের আর্থিক উন্নতি কখনই বিশেষভাবে হয় না। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ফসলের ক্ষতি হলে হয়তো বীমা স্বরূপ কৃষক কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করতে পারে অবশ্য যদি কৃষকের নিজস্ব পর্চা দলিল থাকে। এই জায়গায় প্রান্তিক চাষী একেবারেই বঞ্চিত হয়ে যায় কারণ প্রান্তিক চাষী মূল চাষীর অধীনে কাজ করে তাই তার নিজস্ব পর্চা দলিল থাকে না। নিজস্ব পচা দলিল না থাকার কারণেই তার ক্ষয়ক্ষতি আরো আরো বেশি হয়। ভারত কৃষি নির্ভর দেশ ।বেশিরভাগ মানুষই কৃষিকাজে নির্ভরশীল ,তাই কৃষকের উন্নতি যদি না হয় সামগ্রিক উন্নতি কখনোই সম্ভব নয়। মানবিক দিক দিয়ে উপাদান খরচ বাদ দিয়ে যদি  ফসলের ন্যায্য দাম পায় এবং সার ,বীজ, জলসেচ সবকিছুর উপর ভর্তুকি দেওয়া হয় তবে কৃষক দুটো পয়সার মুখ দেখতে পায়।

বর্তমানে কৃষকের সন্তানেরা কৃষি কাজ ছেড়ে অন্য কাজে যুক্ত হতে বাধ্য হচ্ছে কারণ কৃষিকাজে উপযুক্ত আয় না থাকায় কৃষিকাজে অনীহা থাকাই স্বাভাবিক।

কৃষিকাজে যে ধরনের খাটুনি হয় সেই জায়গায় কৃষকদের উপযুক্ত মর্যাদাও দেওয়া হয় না , উপযুক্ত সম্মানও করা হয় না। পায় না উপযুক্ত মজুরি। সবদিক দিয়ে কৃষক ও কৃষি কাজের অবস্থা সঙ্গীন।সরকারি ও প্রশাসনিক ভাবে কৃষককে উপযুক্ত সাহায্য সহযোগিতা না করলে কৃষক যে তিমিরে আছে সেই তিমিরেই থাকবে।রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে খোলা মাঠে কৃষকের যে কায়িক পরিশ্রম দিতে হয় তা প্রাপ্ত আয় যৎসামান্য মাত্র। একটি দেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি কৃষিজাত দ্রব্য। এই কৃষিজাত দ্রব্য শিল্পজাত হয়।

কৃষক এবং কৃষিকাজ দেশের চালিকা শক্তির মূল ধারা। তাই কৃষকের উন্নতি না হলে অর্থনৈতিক তথা রাষ্ট্রের উন্নতি সম্ভব নয়।