কোভিডের কোপ।কিন্তু কোভিড আছে বলে তো আর সব ধর্মীয় আচার আচরণ বাদ দেওয়া যায় না।লোকাচার মেনে জনতা কে দূরে রেখে কার্ফু জারি করে গতকাল জগন্নাথ দেবের স্নান যাত্রা সম্পন্ন হলো নজির বিহীন ভাবেই।সেই উপচে পড়া মানুষের স্রোত নেই।নেই আলাদা আড়ন…
![]() |
তরুণ চট্টোপাধ্যায় |
সেই উপচে পড়া মানুষের স্রোত নেই।নেই আলাদা আড়ন্বর ।শুধুমাত্র ধর্মীয় আচার ও অনুষ্ঠান ।এ দৃশ্য কস্মিনকালেও দেখেননি জগন্নাথ ভক্তের দল।কিন্তু কি আর করা যাবে,এই ছিল নবীন পট্টনায়কের সরকারের নির্দেশ। কোভিড যে বড় দায় ।স্নান যাত্রার আগে জগন্নাথ দেব নেমে আসেন তাঁর রত্নখচিত আসন থেকে।তার আগে সোনার ঝাড়ু দিয়ে বেদন পরিমার্জনা করেন পুরীর গজপতি রাজা দিব্যসিংহ দেব।জানা গেল এবার তিনি থাকছেন না।এই রীতি কে বলা হয় ছেরা পহরা।কিন্তু এই ছেরা পহরাতে তিনি অনুপস্থিত থাকার কারন হলো তার পরিবারের করোনা সংক্রমণ ।ফলে তিনি ঘরবন্দি ।
এতে কি অসুবিধা হবে কিছু।ছেরা পহরাতো উনিই করেন।
জগন্নাথ মন্দিরের বর্ষীয়ান সেবায়েত ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রামচন্দ্র দয়িতাপতিজানান,রীতিমাফিকই রাজার একজন প্রতিনিধি তাঁর হয়ে এই ছেরা প্রহরার কাজটি করবেন।তিনি অবশ্যই রাজ পরিবারের সদস্য ।
আগে থেকেই পুরী প্রশাসন এলাকায় কার্ফ জারি করায় এই স্নান যাত্রা তে সাধারনের প্রবেশ নিষেধ।
গত বছর জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা নিয়ে জল গড়িয়ে ছিল সুপ্রিম কোর্ট অবধি।এবার অবশ্য করোনা বিধি মেনে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার অনুমতি দিয়েছেন উড়িষ্যা সরকার ।রথের টান ও হবে সোসাল ডিসটেন্ট ও করোনা নেগেটিভ বিধি মেনেই।উড়িষ্যা তে আর কোন রথের টানের অনুমতি মেলে নি।শুধুমাত্র পুরীর জগন্নাথ ছাড়া ।পশ্চিমবঙ্গের লাখো মানুষের স্মৃতি তে ধরা আছে এই ছবি।কিন্তু এবার পর্যটক হীন।ফলে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাবেন এ রাজ্যের মানুষ ও।
লোকবিশ্বাস মতে 108 ঘড়া জলে জগন্নাথ দেবের স্নানের পর তাঁর জ্বর আসে।তিনি অন্তরালে চলে যান।তখন কজন বাছাই পুরোহিত ছাড়া আর কেউ বিগ্রহের কাছে যেতে পারেন না।জ্বর আসে বলরাম ও সুভদ্রার ও।জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার সুস্থ হওয়ার পর হয় রথযাত্রা ।এবার সেই রথযাত্রা হবে 12 জুলাই তারিখে।
এদিন জগন্নাথ দেব ও বলরাম সুভদ্রার রথের দড়ি তে টান পড়বে।লাখো লাখো ভক্তের সমাগম ছেড়ে করোনা পরিবেশে সেদিন ও রথ টানবে কিছু মানুষ ।জগন্নাথ দেবের স্নান যাত্রা সম্পন্ন হলো ।তবে এই অনুষ্ঠানে আচার বিধি পালন করলেন মাত্র পাঁচশো জন সেবায়েত।অবশ্যই করোনা পরীক্ষায় পাশ করার পরেই।কড়া নজর প্রশাসনের ।
যদিও উড়িষ্যা তে করোনা গ্রাফ এখন নিম্নমুখী ।তবুও আগাম সতর্কতা নিয়ে ই প্রশাসন।কারন কদিন আগেও ভুবনেশ্বর ও কটকের কিছু জায়গায় করোনা পজিটিভ কেস ধরা পড়েছে।
পুরীর জগন্নাথের রথের পরেই পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুরের মাহেশের রথের খ্যাতি ।মহিষাদলের রথেও ভক্ত সমাগম হতো।কিন্তু করোনা কালে এক অতিমারির প্রকোপ এই সব রথেও ছায়া ফেলেছে।
তবে পুরীর জগন্নাথের রথের ভক্ত সমাগমছিল দেখবার মতো।দেশ বিদেশের নানা পর্যটক রথের রশি টানতে চলে আসতেন জগন্নাথ ধামে।
করোনা কালে সব বন্ধ ।শুধু নমো নমো করে আচার অনুষ্ঠান পালন।
কোভিডে র কোপে এবার রাজাহীন পুরীর জগন্নাথের স্নানযাত্রা ।
তবুও রথ চলবে বিধি মেনেই।অবশ্যই করোনা বিধি।
তরুণ চট্টোপাধ্যায় ।