Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

পরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়া ,অভিযোগ যাত্রীদের

নিজস্ব সংবাদদাতা তমলুক: সরকারিভাবে বাসের ভাড়া না বাড়ানো হলেও যথেচ্ছভাবে ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠছে বাস মালিকদের বিরুদ্ধে। আর তাতেই তৃতীয় পর্যায়ের করোনা সংক্রমনের মুখে একের পর এক বসায় জড়িয়ে চরম ভোগান্তির মুখে ক্ষুব্দ নিত্য য…

 


নিজস্ব সংবাদদাতা তমলুক: সরকারিভাবে বাসের ভাড়া না বাড়ানো হলেও যথেচ্ছভাবে ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠছে বাস মালিকদের বিরুদ্ধে। আর তাতেই তৃতীয় পর্যায়ের করোনা সংক্রমনের মুখে একের পর এক বসায় জড়িয়ে চরম ভোগান্তির মুখে ক্ষুব্দ নিত্য যাত্রীরা। বিষয়টি নিয়ে তাই দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে ফের রাস্তায় নেমে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পরিবহন যাত্রী কমিটি। একই সঙ্গে মঙ্গলবার এমনই অভিযোগে এসইউসিআই দলের পক্ষ থেকেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাসকের কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিগত প্রায় বছরখানেক ধরে করোনা আবহে লকডাউন পরিস্থিতি এবং রাজ্য সরকারের কড়া নির্দেশিকার জেরে সাধারণ জনজীবন বিপর্যস্ত। কাজ হারিয়ে বহু মানুষজনের পরিস্থিতি এখন অসহায়। অপরদিকে আবার সম্প্রতি পেট্রোল-ডিজেলের ঊর্ধ্বমুখী দামের জেরে সমস্যার মুখে পরিবহন ব্যবস্থাও। এমন পরিস্থিতিতে ফের জন জীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চলতি মাসের শুরু থেকেই কিছুটা হলেও নরম মনোভাব নেয় রাজ্য সরকার। সেইমতো পরিবহন ব্যবস্থা সচল করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারি বাসের পাশাপাশি বেসরকারি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সার্বিক এই পরিস্থিতিতে বিবেচনা করে বাসের ভাড়া বৃদ্ধি না করার সিদ্ধান্তও নেয় রাজ্য সরকার। আর সেই সুযোগেই অসহায় যাত্রীসাধারণের কাছ থেকে যথেচ্ছ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠছে বাস মালিকদের বিরুদ্ধে।

 যাত্রীদের অভিযোগ, সরকারি নির্দেশ মত কিছু কিছু রটে স্বল্প সংখ্যক বাস চালানো হলেও কোনভাবেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এরপর আবার ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে ও কোন হিসাবের কোন বালাই নেই। যেখানে সরকারি ন্যূনতম ভাড়া এখনো অবধি সাত টাকা রয়েছে সেখানে বাসে উঠলেই চাপ দিয়ে ন্যূনতম ভাড়া ১০ টাকা হিসেবে আদায় হচ্ছে যাত্রীসাধারণের কাছ থেকে। এরপর দূরত্বের ক্ষেত্রে বাসের কন্টাকটার যথেচ্ছ ভাড়া দাবি করে আদায় করছে। আর তাতেই বচসায় জড়িয়ে একের পর এক অশান্তি লেগেই আছে যাত্রী সাধারণের মধ্যে। আর এতেই ক্ষোভের পারদ বাড়ছে তরতরিয়ে। আরও অভিযোগ, সরকারিভাবে অর্ধেক পরিমাণ যাত্রী বহনের কথা বলা হলেও বাস্তবে করনা বিধিকে একেবারে শিকে য় তুলে দিয়ে যথেচ্ছভাবে বাসে যাত্রী চাপানো হচ্ছে।ফলে একদিকে বাড়তি ভাড়া এবং অন্যদিকে করোনার আতঙ্কের মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে জনসাধারণকে।

 বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন এসইউসিআই কর্মী-সমর্থকরাও। তাদের দাবি, করোনা ক্লিষ্ট জনসাধারণের ওপর কোনভাবেই বাড়তি বাস ভাড়ার বোঝা চাপানো যাবে না। এস ইউ সি আই এর জেলা সম্পাদিকা অনুরুপা দাস বলেন, প্রয়োজনে সরকার পেট্রোল-ডিজেলের ওপরে বাড়তি প্রত্যাহার করুন। অন্যথায় বাস মালিকদের ভর্তুকি দেওয়া হোক। পেট্রোল-ডিজেলের যে পরিমাণ দাম বেড়েছে সেই হিসেবেই এই ভর্তুকি দেওয়া হোক। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে সরকার ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে অনড় মনোভাব দেখালেও ভেতরে ভেতরে গোপন আঁতাত করছে বাস মালিকদের সঙ্গে। এর ফলে বলি হচ্ছেন সাধারণ নিত্যযাত্রীরা।

তমলুকের ডিমারি এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ দাস বলেন, তমলুকের মানিকতলা থেকে মেচেদা মাত্র ১৩ কিমি রাস্তা যেখানে সাধারণভাবে ১২ টাকা করে নেওয়া হত, এখন করোনা পরিস্থিতিতে প্রথম দিকে ১৫ টাকা ও বর্তমানে সেই ভাই এখন ইচ্ছে খুশি বাড়িয়ে ২০টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। কোলাঘাটের নহলার ফুলচাষী মোহন মাইতি অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই করোনা পরিস্থিতির জেরে দীর্ঘদিন পরিবহন ব্যবস্থা অকেজো থাকায় ফুলের দাম একেবারে তলানিতে নেমে আসে। ন্যূনতম দাম না মেলায় ফুল ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। তাই এমন দুর্দশার দিনে আবার নতুন করে বাস চালু হলেও যেভাবে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে তাতে আমরা বাঁচবো কিভাবে?

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিবহন যাত্রী কমিটির সহ সম্পাদক তথা মুখপাত্র নারায়ন নায়েক বলেন, পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে রাজ্য সরকার বাইরে জনদরদি সেজে আসলে বাসের কন্ট্রাকটারদের সঙ্গে যাত্রীসাধারণের বাচচা লাগানোর চেষ্টা করছে। আমরা চাই করণা পরিস্থিতিতে এই বিভ্রান্তির সুষ্ঠু সমাধান বন্ধ করে হয় রাজ্য সরকার তাদের চাপানো টেক্স প্রত্যাহার করুক। অন্যথায় বাস মালিকদের কিছুটা হলেও ভর্তুকি দিক। আর তা না হলে বাস মালিকরা এই সুযোগে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বেড়েছে বলে তুলনামূলকভাবে বহুগুণ বাড়তি ভাড়া আদায় এর অপচেষ্টা চালিয়ে গেলে সাধারণ মানুষজনই সর্বস্বান্ত হবে।

যদিও এ বিষয়ে ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, পরিবহন ব্যবস্থা সচল করতে আমরা রাস্তায় সাধ্যমত বেশি পরিমাণ বাস চালানোর চেষ্টা করছি। তাই প্রতিবাদীরা সর্বক্ষেত্রেই হওয়া উচিত। শুধু বাসের ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলে এমন অভিযোগ করাটা ঠিক নয়।পরিবহন কর্মীরাও দীর্ঘ সময় ধরে প্রায় অনাহারেই রয়েছেন। তাই আমরাও চাই সরকারি মধ্যস্থতায় এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হোক।