Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

ছোট গল্প:- দজ্জাল পিসি শাশুড়ি 🖋ইন্দ্রনীল কর তারিখ:- ১৪\০৭\২১চুচুঁড়া 
❤🧡💛💚  দজ্জাল পিসি শাশুড়ি  💚💛🧡❤        ♨️🌿♨️🌿♨️ইন্দ্রনীল♨️🌿♨️🌿♨️  
       বন্ধু তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে হেভী খাওয়ানোর পর বলল, ইন্দ্র আমাকে বাঁচা।আমি চিন্ত…

 


ছোট গল্প:- দজ্জাল পিসি শাশুড়ি 

🖋ইন্দ্রনীল কর 

তারিখ:- ১৪\০৭\২১

চুচুঁড়া 


❤🧡💛💚  দজ্জাল পিসি শাশুড়ি  💚💛🧡❤

        ♨️🌿♨️🌿♨️ইন্দ্রনীল♨️🌿♨️🌿♨️  


       বন্ধু তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে হেভী খাওয়ানোর পর বলল, ইন্দ্র আমাকে বাঁচা।

আমি চিন্তিত হয়ে গেলাম, শোভন আমার স্কুল জীবনের বন্ধু, বদটাকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি। তার এই আমাকে বাঁচা মানে হচ্ছে ‘তুই মরে আমাকে বাঁচা’। তাই আমার উচিৎ এখনই কেটে পড়া, কিন্তু একটু আগে খাসির রেজালাটা সেই রকম ছিলো, চট করে নেমক হারামি করা যায় না। বললাম, কি হয়েছে?

-- ইন্দ্র আমার পিসি শাশুড়ি আসছে কাল লন্ডন থেকে কলকাতায় একদিন থেকে শিলিগুড়ি যাবে। তাকে এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করতে হবে কিন্তু কাল আমার নতুন বায়ারের সাথে মিটিং কোনোভাবেই এয়ারপোর্টে যেতে পারব না।

-- তো? আমাকে যেতে হবে রিসিভ করতে? আচ্ছা যাবো যা। বন্ধুর জন্য এইটুকু করব, যা কথা দিলাম।


-- জানি ইন্দ্র তুই পারবি। একটু প্রবলেম হচ্ছে আমার ড্রাইভার ছুটিতে কিন্তু সেটা পিসিকে কোনোভাবেই জানানো যাবে না, পিসি একটু অন্যরকম জানিস তো, ড্রাইভারদের ছুটির কথা শুনলেই ভীষণ রেগে যান, ড্রাইভারদের ব্যাপারে ওনার এলার্জি আছে। এমনিতে আমি যেতে পারব না তারপর যদি এই সময় ড্রাইভারকে ছুটিতে পাঠাই উনি ভাববেন এটা ইচ্ছে করে করেছি!!

-- তো?

-- ইন্দ্র তুই একদিনের জন্য আমার ড্রাইভার সাজ।

-- হোয়াট? তোর মাথা খারাপ। আমার পরিচিত লোকজন দেখলে কি বলবে? নো ওয়ে।

এইবার বন্ধু পত্নী রিনা মঞ্চে এসে গেলো।

-- ইন্দ্র দা প্লীজ। পিসি আমাদের পার্ক স্ট্রিটের ফ্লাটটা লিখে দিয়ে যাবে এইবার, আপনি কি চান পিসি রাগ করে সেটা বাতিল করুক। চিন্তা করে দেখুন লেকের দিকে তাকিয়ে আপনি খাসির রেজালা খাচ্ছেন, কি চমৎকার ব্যাপার । 

শোভন কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল,

--  এই বিপদে তুই ছাড়া আর কে আছে আমার বল ? প্লীজ হেল্প।

অগত্যা অনুরোধে ঢেকি থুক্কু খাসির রেজালা গিলে আমি এয়ারপোর্টের দু নম্বর টার্মিনালে গিয়ে দাঁড়ালাম। শোভন পই পই করে বলে দিয়েছে পিসি পার্ক স্ট্রিটে তার নিজের ফ্ল্যাটে যাবে নাকি শোভনের বাড়িতে যাবে সেটা পিসির ওপর ছেড়ে দিতে, উনি যেখানে যেতে চান সেখানেই নিয়ে যেতে হবে বাড়তি কথা বলা যাবে না। পিসি নাকি মারাত্মক খতরনাক, একটু বেচাল হলেই বিরাট মুশকিল।

এয়ারপোর্টে পিসিকে চেনানোর জন্য আমার হাতে একটা প্লাকার্ড ধরা, সেখানে লেখা

'রানি পিসি এইদিকে '

কিছুক্ষণের মধ্যে একটা ট্রলি ঠেলে একজন মহিলা আমার সামনে এসে বললেন, হ্যালো আমি রানি। দেখে মনে হলো বয়স আন্দাজ পঞ্চান্ন থেকে ষাট। সঙ্গে একটা কিশোরী মেয়ে।

আমি হাসি মুখে বললাম , হ্যাঁ । আপনাকে নিতে এসেছি, চলুন। কোথায় যাবেন, পার্ক স্ট্রিট ?

হ্যাঁ পার্ক স্ট্রিটই তো। বলে উনি ওনার স্যুটকেস টানতে শুরু করলেন। আমি তাড়াতাড়ি, ছাড়ুন ছাড়ুন বলে স্যুটকেস টেনে গাড়িতে ওঠালাম।


পার্ক স্ট্রিটে পৌঁছে পিসির কাছ থেকে ঠিকানা শুনে সেখানে পৌঁছে দিলাম। পিসি গাড়ি থেকে নেমে বিশাল থ্যাংকস দিলেন, বললেন প্রায় পাঁচ বছর পর দেশে এলাম। দেশ সত্যিই অনেক এগিয়ে গেছে। জিন্স সানগ্লাস পরা তোমার মতো স্মার্ট ড্রাইভারও এখন এই দেশে আছে। গুড। সুজয়কে বলে দিও আমি খুব খুশী হয়েছি। আজ তোমাকে এন্টারটেইন করতে পারলাম না কিন্তু কাল সুজয়কে নিয়ে যখন আসবে তখন তোমার জন্য গিফট থাকবে।

আমি খুশি মনে গাড়িতে স্টার্ট দিলাম। মনে একটু খটকা লাগলো, সুজয়টা কে? নিশ্চয়ই শোভনের আরেকটা নাম। ব্যাটা কতো নামে নিজেকে চালায় কে জানে!!

ফোন বাজতেই দেখি শোভনের ফোন। ধরেই বললাম,

যা ব্যাটা তোর পিসি শ্বাশুড়িকে ঠিকমতো পৌঁছে দিয়েছি। উনি খুব খুশী। আর ওনাকে তো চমৎকার হাসিখুশি মহিলা লাগলো তুই খামোখা ভয় দিলি।

শোভন চাপা গলায় বলল, 

--  ইন্দ্র তুই কাকে কোথায় নামালি? পিসি তো তোকে এয়ারপোর্টে না পেয়ে বাড়িতে এসে পড়েছে ট্যাক্সি নিয়ে, শীগগির আয়।

আমি দ্রুত শোভনের বাড়িতে হাজির হয়ে দেখি বাড়ির নীচে দুটো বিশাল স্যুটকেস নিয়ে ভয়ংকর চেহারার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে, সঙ্গে শোভন আর রিনি। শোভন আমাকে চোখ দিয়ে ইশারা করতে আমি ঢোক গিলে পিসিকে গিয়ে একটা প্রনাম করলাম। 

-- আমার বিরাট ভুল হয়ে গেছে।

পিসি কঠিন চোখে তাকালেন, সম্ভবত ড্রাইভার পিসি বলবে সেটা উনি হজম করতে পারছেন না, বললেন, লাগেজগুলো লিফটে ওঠাও।

শোভন সাহায্য করতে এলো, পিসি গম্ভীর গলায় বললেন, উহু শোভন এটা ড্রাইভারের কাজ। শোভন পিছিয়ে গেলো। 

আমি ভয়নংকর চেহারার লাগেজের দিকে তাকিয়ে ঢোক গিললাম। টানতে গিয়ে দেখি নড়ে না। 

পিসি বললেন,

--  ট্রলির চাকা ভেঙ্গে গেছে, টেনে নিয়ে যেতে পারবে না, পিঠে করে তুলতে হবে।

আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। আমি শোভনকে মনে মনে গালি দিয়ে পিঠে করে লাগেজগুলো লিফটে ওঠালাম। মনে হলো লন্ডন থেকে ইট ভরে আনা হয়েছে- এতো ভারী।

ওপরে উঠে কেবল ভাবছি পিসি তো সত্যিই  ডেঞ্জারাস, তখন শুনি পিসি বলছে, 

-- কি ড্রাইভার রেখেছ শোভন, বলেছিলাম বুড়ো দেখে ড্রাইভার রাখতে, রেখেছ এক বেয়াদবকে। পিসি পিসি করে ডাকছে, ভব্যতা নেই, জিন্স সানগ্লাস পরে আছে। আমাকে আনার নাম করে ও নিশ্চিত দেখো কোন খেপ থেকে টাকা কামিয়ে এসেছে। এই বদগুলোকে আমি হাড়েহাড়ে চিনি। নাহ রিনি আর শোভন আমি হতাশ হলাম। সামান্য একটা ড্রাইভার মেনটেইন করতে পারো না, তোমরা তো পার্ক স্ট্রিটের ফ্ল্যাট মেনটেইন করতে পারবে না। 

শোভন আর রিনি হাউহাউ করে উঠলো, 

-- স্যরি পিসি।

-- উহু, তোমার ড্রাইভারকে ডাকো, ওকে বলো কান ধরে আমাকে সরি বলতে, দেখি তোমাদের কতোটুকু কন্ট্রোল ড্রাইভারের ওপর । তারপর সবকিছু বিবেচনা করবো।

হোয়াট!! কি শুনছি৷ আমি চট করে দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম, এক্ষুনি কেটে পড়তে হবে। চোখের কোণ দিয়ে দেখছি শোভন আমাকে আটকাতে দৌড়ে আসছে সঙ্গে রেজালার বাটি হাতে রিনি।


                                            🍁ইন্দ্রনীল🍁 


💛🧡❤💚💜💙💛🧡❤💚💜💙💛🧡❤

       ❣☘❣☘❣ইন্দ্রনীল❣☘❣☘❣