"ঠাকুরঘর"রবীন্দ্রনাথ হালদার।কবিতা।১১/০৭/২০২১.++++++++++++++++++হয়েছিল গৃহনির্মাণের প্রয়োজন,তাই আজ করা হয়েছে গৃহপ্রবেশের আয়োজন।আমন্ত্রিত সকলেই এসেছে গৃহের প্রবেশদ্বারে,তখনই খুঁজছেন তারা ঠাকুঘরের অবস্থান বারে-বারে।অতি…
"ঠাকুরঘর"
রবীন্দ্রনাথ হালদার।
কবিতা।
১১/০৭/২০২১.
++++++++++++++++++
হয়েছিল গৃহনির্মাণের প্রয়োজন,
তাই আজ করা হয়েছে গৃহপ্রবেশের আয়োজন।
আমন্ত্রিত সকলেই এসেছে গৃহের প্রবেশদ্বারে,
তখনই খুঁজছেন তারা ঠাকুঘরের অবস্থান বারে-বারে।
অতি উৎসাহীজন এসেছে যারা,
প্রাসাদপ্রতীম ঘরের কোথাও ঠাকুর ঘরের খোঁজ পায়নি তারা!
আড়ালে-আবডালে তারা সমালোচনা করে বলে,
এত বড় ঘরে,ঠাকুরঘর না করলে চলে ?
গৃহকর্তা এমনই মীরজাফর,
এত পেরেছে কিন্তু পারেনি করতে একটা ছোট্ট ঠাকুরঘর!
যার অপার করুণায় মানব জন্ম পেলে,
বড়লোক হওয়ার পরে তাঁর কথা বেমালুম ভুলে গেলে!
এ যদি বেঈমানি না হয়,
তবে আর মীরজাফর কারে কয়!
অবশেষে অতি উৎসাহী কিছুজন জিজ্ঞাসিল গৃহকর্তার কাছে,
আপনার ঘরের কি কোথাও ঠাকুরঘর আছে ?
উত্তরিলা গৃহকর্তা~আছে-আছে।
" এবার তোমরা সবাই চলে এসো আমার পাছে-পাছে"।
সবাইকে নিয়ে হাজির হন তিনি যেথায় আছে সবচেয়ে সেরা ঘর,
সবাই দেখলেন তাকিয়ে গৃহকর্তার বৃদ্ধ পিতা-মাতা আসীন আছেন গর্ভগৃহের পর।
সবাই সমস্বরে চিৎকার করে উঠে বলল, "এ নয়তো কোনো ঠাকুরঘর,"
"এ তো দেখছি তোমার বৃদ্ধ মাতাপিতা আসীন আছেন গর্ভগৃহের পর"।
এটা নিশ্চয়ই তোমার পিতা-মাতার ঘর হবে,
তুমি ঠাকুরঘর বানালে কোথায় তবে ?
গৃহকর্তা তখন হাসিয়া কয়, "সবাই শোনো আমার কথা,খুলিয়া তোমাদের দুটি কান"।
পৃথিবীর বুকে মা-বাবার চেয়ে বড় আছে কি কোনো ভগবান ?
আমি সব দেব-দেবতাকেই জানি,
তাঁদেরকে আমি ঈশ্বর বলেও মানি।
তাঁরা সবাই আছেন আমার হৃদয়জুড়ে কিন্তু তাঁরা আছেন আমার পিতা-মাতার পর,
তাইতো আমি সবার আগে বেঁধেছি মোর পিতা-মাতার ঘর।
"যে যাই বলুক লোকে,
দেখুক আমায় মন্দ চোখে",
"তাতে আমার কোনো ভ্রুক্ষেপ নাই"!
আমার জীবনে একটাই সত্য আছে ভাই,
সবার উপরে পিতা-মাতা সত্য তাহার উপরে কোনো দেবতা নাই।
আমি ঘরের যেখানেই থাকি,
আমার গৃহের সর্বোত্তম মন্দিরে আমি আমার পিতা-মাতাকেই দেবো রাখি।
এ নিয়ে আমার নেই কোনো লোকলজ্জার ডর,
পিতা-মাতার বাসস্থান তাই আমার কাছে একমাত্র ঠাকুরঘর।
প্রথা ভাঙ্গার তরে তোমরা কিন্তু আমায় নিন্দা করতে পারো ভাই,
আমার কিন্তু তাতে কোনো ভ্রূক্ষেপ নাই।
আমি আমার ঠাকুরঘরের দেবদেবী হিসেবে শুধু পিতা-মাতাকেই দেখতে চাই।