Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

তেলের শিশি ভাঙলো বলে খুকুর ওপর রাগ করো। তরুণ চট্টোপাধ্যায় ।কলকাতা ।

তেলের শিশি ভাঙলো বলে খুকুর ওপর রাগ করোতোমরা যে সব ধেড়ে খোকা ভারত ভেঙে ভাগ করো।
এই ভাগ ভাগ কথাটি বেশ কিছুদিন ধরে বাঙলার রাজনীতি তে চলছে। আর তা কখনো উত্তর বঙ্গ আবার কখনো জঙ্গল মহল। মমতা বন্দোপাধ্যায় এই বাংলাতে একুশের নির্বাচনে রেকর্ড …

 


তরুণ চট্টোপাধ্যায়
তেলের শিশি ভাঙলো বলে খুকুর ওপর রাগ করো

তোমরা যে সব ধেড়ে খোকা ভারত ভেঙে ভাগ করো।

এই ভাগ ভাগ কথাটি বেশ কিছুদিন ধরে বাঙলার রাজনীতি তে চলছে।
আর তা কখনো উত্তর বঙ্গ আবার কখনো জঙ্গল মহল।
মমতা বন্দোপাধ্যায় এই বাংলাতে একুশের নির্বাচনে রেকর্ড জয় ছিনিয়ে নেওয়ার পর বিজেপি কার্যত দিশেহারা । হারের পর আর ইস্যু না পেয়ে কখনো দলের কর্মীদের ওপর অত্যাচার ও কখনো বঙ্গ ভঙ্গ নিয়ে বাজার গরম করে আসছেন।
গত 7 জুলাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদ বদলে উত্তর বঙ্গের সাংসদ জন বার্লাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করে নরেন্দ্র মোদীর সরকার সেই দাবিকেই শীল মোহর দিল নাতো। এদিন বাংলা থেকে দুই মন্ত্রী কে অপসারন করে চার সাংসদ কে মন্ত্রী করে কি বার্ত দিতে চাইলেন কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার ।
একটু ময়না তদন্তে আসা যাক। ৭ জুলাই যে চারজন মন্ত্রী হলেন তাঁরা হলেন জন বার্লা,শান্তনু ঠাকুর, নিশিথ প্রামানিক ও সুভাষ সরকার । তবে এঁরা সকলেই প্রতিমন্ত্রী ।
কিছুদিন আগে এই জন বার্লা বলেছিলেন উত্তরবঙ্গকে উন্নয়নের জোয়ারে আনতে হলে বাংলার অপশাসনের বাইরে আনতে হবে। আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রীয় শাসনের আওতায় না আনতে পারলে উত্তরবঙ্গে উন্নয়ন সম্ভব নয়।সেই জন বার্লাকে মন্ত্রী করে কেন্দ্রীয় সরকার যে তাঁকে গুরুত্ব দিলেন একথা অনস্বীকার্য ।
কিন্তু অন্য দিকে একই দিনে যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ দাবি তোলেন জঙ্গল মহল নিয়ে । কারন সেই এক উন্নয়নের প্রশ্ন ।
যদিও সৌমিত্রের ভাগ্য ভাল নয়। ইচ্ছে থাকলেও চারজনের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলেও তার কপালে মন্ত্রীর শিকে ছেঁড়ে নি। ফলে এদিন তিনি যুব মোর্চ থেকে সভাপতির পদ ছাড়তে চেয়ে টুইট ও করেন।
যদিও এই টুইটে তিনি থেমে থাকেন নি। দলের মধ্যে নতূন আসা বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও একহাত নিলেন । তাঁর ঘনঘন দিল্লি যাওয়া নিয়ে ও কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না।
সৌমিত্র খাঁর এই কটাক্ষের জবাব নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি শুভেন্দু অধিকারী । উল্টে বলেছেন ও আমার ভাই এর মতো।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও এদিন বেঁধেন সৌমিত্র । বলেন উনি অর্ধেক বোঝেন বাকিটি বোঝেন না।
তবে কি এসব মন্তব্য করে তিনি কি বার্ত দিলেন দলকে।তার স্ত্রী সুজাতা খাঁ যিনি ভোটের আগে বিজেপি ছেড়ে তৃনমূল দলে যোগ দেন। ভোটে ও অংশ নেন। যদিও তৃনমূলের রমরমা বাজারেও তাঁর জন্য জয় আসেনি। সেই সুজাতা প্রশংসায় পঞ্চমুখ । তবে কি সৌমিত্র পা বাড়িয়ে রাখলেন তৃনমূলের দিকে।
যদিও তৃনমূলের পক্ষ থেকে সে ধরনের আশ্বাস আসেনি।উল্টে তৃনমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সৌমিত্র মন্ত্রী হতে না পেরে হতাশ হয়ে এই সব বলছেন।
সে যাই হোক দুই এর বদলে চার মন্ত্রী পেয়ে বঙ্গ বিজেপি কে খুশি থাকতে হচ্ছে আপাতত।সংখ্যার নিরিখে বঙ্গ বিজেপি যাই বলুক বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী বাদ পড়াতে বিজেপির আভ্যন্তরীণ কোন্দল আবারও জন সমক্ষে চলে এলো।আর এই পরিবর্তনের ঘুঁটি সাজানোর জন্য সব দায় এসে পড়লো অধিকারী বাড়ির মেজ ছেলে শুভেন্দু অধিকারীর ওপরেই। যিনি অল্প দিন বিজেপি দলে যোগ দিয়ে দিল্লির দরবারে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ও বিশ্বাস যোগ্য মুখ হিসেবে তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান ।শুধু সৌমিত্র একাই নন , সদ্য দলে আসা রাজীব বন্দোপাধ্যায় ও ঠারে ঠোরে শুভেন্দু অধিকারীর সমালোচনা করেন। 

নিন্দুকেরা অবশ্য বলছেন,সৌমিত্র ও রাজীবের শুভেন্দু বিরোধিতা শুধুমাত্র তৃনমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় কে খুশি রাখার এক কৌশল। কারন রাজীব বন্দোপাধ্যায় তো ফল বেরুনোর দিন থেকেই তৃনমূলের দিকে পা বাড়িয়ে রেখেছেন। দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে শুধু আটকে গেছেন। তৃনমূল কর্মীরা চান না রাজীব কে দলে ফেরাতে । হাওড়ার গোষ্ঠী কোন্দল যে এই রাজীবকে ঘিরেই দানা বেঁধে ছিল সেকথা স্মরণ করে। তবুও নাছোড়বান্দা অনেকেই তৃনমূল দলে ফিরতে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এই রদবদল চব্বিশের লোক সভা ভোটের দিকে তাকিয়ে ই।ফলে যেখানে যেখানে লোকসভার আসন আসতে পারে সেদিকে নজর দিলেন কেন্দ্রীয় সরকার ।
শান্তনু ঠাকুর কে মন্ত্রী সভায় নিয়ে আসার পিছনে রয়েছে মথুয়া সম্প্রদায়ের ভোট ব্যাঙ্কের গল্প ।নাগরিকত্ব নিয়ে এমনিতেই কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এই সম্প্রদায়ের একটি দড়ি টনাটানি ছিল।আর সেখানে প্রলেপ দিতেই এই সিদ্ধান্ত ।
তবে সব থেকে বেশি জলঘোলা হয়েছে জন বার্লা কে মন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত কে কেন্দ্র করে।কারন এই জন বার্লা উওর বঙ্গ কে ভাগ নিয়ে কদিন আগেই গলা ফাটিয়ে ছেন।ফলে অনুমান তার এই বক্তব্যের ওপর নাকি শীল মোহর দিতেই কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে মন্ত্রী করেছেন।
সে যাই হোক বঙ্গের মানুষ চান না বঙ্গ ভাগ।ফলে কেন্দ্রীয় সরকার যে পথেই হাটুক না কেন রাজ্য বাসী তাঁর বিরোধিতা করবেই।
সেই কথাতেই ফিরে আসা যাক।
তেলের শিশু ভাঙলো বলে
খুকুর ওপর রাগ করো
তোমরা যে সব ধেড়ে খোকা
ভারত ভেঙে ভাগ করো।
তার বেলায়।
সত্যি তাই।অখন্ড বাংলা দেখে আসতে চান বাঙালি ।
জন বার্লা যাই বলুক না কেন।