: বিভাগ--কবিতাশিরোনাম---মায়াজালকলমে--সেনগুপ্ত কথামালাতারিখ--২৬/৫/২০২১
কৃষানু, ক্রমশ তোমার কথার মায়াজাল ছিন্ন বিচ্ছিন্ন।
প্রতি রাতে---- ঢাকা দেয়া খাবারের গন্ধ বেডরুম অবধি ধাওয়া করে।জোড়া খাটের কাশ্মীরি চাদরকে জড়িয়ে ধরে।
নেশাগ্রস্ত ম…
: বিভাগ--কবিতা
শিরোনাম---মায়াজাল
কলমে--সেনগুপ্ত কথামালা
তারিখ--২৬/৫/২০২১
কৃষানু, ক্রমশ তোমার কথার মায়াজাল ছিন্ন বিচ্ছিন্ন।
প্রতি রাতে---- ঢাকা দেয়া খাবারের গন্ধ বেডরুম অবধি ধাওয়া করে।
জোড়া খাটের কাশ্মীরি চাদরকে জড়িয়ে ধরে।
নেশাগ্রস্ত মানুষের গন্ধ বিচার মৃত ???
মুক্তির আকাঙ্খায় প্রতিদিন চিঠি লিখি নিজেকে------
ঝাঁ চকচকে খাবার ঘরের আসবাব পর্দা সবাই চাপা স্বরে হেসে ওঠে।
উচ্চস্বরে হাসলে বনেদিয়ানায় আঘাত লাগে !!!
চুরমার হয়ে বিদেশি ফুলদানিরা।
একটি নিটোল ফর্সা, নিরেট সোনার চুড়ি পরা হাত
নিঃশব্দে নকল ফুল গোছাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে।
বিহান বেলায় কাঁটা চামচের টুং টাং
ধুলোমাখা বীণার তার গুমড়ে কাঁদে
চিঠির সংখ্যা বাড়তে থাকে।
বাড়তে থাকে বিদেশির সাথে দেশি ফুলদানি ভাঙার শব্দেরা।
কৃষানুর মায়াজাল অচেনা কাশ্মিরী চাদরে খাবারের গন্ধ ছড়ায়।
🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺
অনুগল্প--- এক ফোঁটা লাল দাগ
কলমে--সেনগুপ্ত কথামালা
তারিখ--9/3/2021
মায়ের চিৎকারে চমকে ওঠে বারো বছরের বৃন্দা, মা ডাকে বিন্দি। ওলো ও মুখপুড়ি দিলি ভাইয়ের বই টো ছুঁয়ে তুই না অশুচি হইছিস। ইবার গঙ্গাজল দিতে হবেক ভাইয়ের বই খাতায়।
মা স্বরস্বতী বটে ঐগুলান বুঝলি মুখপুড়ি। অবাক চোখে ভাই মাকে প্রশ্ন করে-- - - ক্যানে মা অশুচি ক্যানে ? মাঠে গেইছিল? তা বাদে জামাটো ছাড়ে নাই ?
মা স্নেহের সাথে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিয়ে খেতে বসায় আর মেয়ের উদ্দেশে বাক্যবান--- কুয়াতলায় বাসনগুলান ঢেরাইন আছে মাজ ক্যানে তাড়াতাড়ী, বৃন্দা অশুচি হাত দিয়ে বাসনের কালিমা ঘোচাতে ব্যস্ত। মা গজগজ করতে থাকেন তিন কেলাস পড়াইন ভুল কাইরেছি হা কপাল আমার।
অশুচি শব্দের অর্থ বোঝে শহর, গ্রাম,গঞ্জের সকল মেয়েরা, কিন্তু ভাই বোঝেনা তাই দিদিকে জড়িয়ে ধরে চুমু দেয় অশুচি গালে, গলা জড়িয়ে ধরে দোল খায়। ছাই মাখা হাত ধরে আবদার দিদি চল স্কুলের গল্প বলব, ফর্সা দিদিমণি অংক খাতায় লাল কালিতে কি লিখেছে দেখবিনা দিদি ? ঝটকা দিয়ে হাত ছাড়াল বৃন্দা তার মাথায় ঘুরছে "অশুচি" শব্দটি।
স্কুলের দিদিমনিদের, তা ছাড়া যেখানে যত মেয়ে মানুষ আছে সবাই ত মাসে একবার অশুচি হয় কিন্তু কেন? অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মাথায়, তাড়াতাড়ি কাজ সেরে ছুটল স্বাস্থ্য অফিসে কম্পাউন্ডার দিদিমনির কাছে। খুবই ব্যস্ত তিনি বলতে গেলে হাফ ডাক্তার, তবুও কাজল চোখের বুদ্ধিমতী মেয়েটিকে খুব ভালবাসেন সবসময় তার সকল প্রশ্নের উত্তর দেবার চেষ্টা করেন। জড়িয়ে ধরে বললেন-- আয় বল কি হল ? কাঁদছিস কেন?বৃন্দা অঝোর ধারায় কাঁদতে -কাঁদতে বলে, আমাকে শুদ্ধ কর দিদিমণি "আমি আর অশুচি হব না।" "হারান কাকার ছেলে কানাই তো আমার বয়সী তবে সে কেন অশুচি হয়না" ????
হয়ত সব মেয়েদের মনে এই প্রশ্ন এসেছিল একদিন।
"মাআআ বল --- আমি কেন অশুচি" !!!!!
আমার কি অপরাধ!!!!!
ছোঁব না ঠাকুর, হাত দেবনা কুলের আচারে, খেলবনা মাঠে, পিছন ফিরে বার বার দেখব আছে নাকি জামায় "একফোঁটা লাল দাগ"।
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
বিষয়--কবিতা
শিরোনাম--রূপসাগর
কলমে--সেনগুপ্ত কথামালা
তারিখ--১৪/৭/২০২১
জ্যোৎস্না ছড়ানো এক পূর্ণিমা রাত।
খোয়াইয়ের হাটে প্রথম দেখা,
পেলব আলোয়, মায়া মাখা দুটি চোখ।
বাউলের একতারাতে স্বপ্ন সুর ----
দেখেছি রূপসাগরে মনের মানুষ কাঁচা সোনা------
রূপসাগরের ঢেউয়ে ভাসে
মুগ্ধ অবাক দৃষ্টি।
পূর্ণিমার ঝিম ধরা আলোয়,
বাউলের সুরের তারে,
কড়ি গেঁথে সাজিয়ে নিলাম
আমার জ্যোৎস্না মাখা অঙ্গখানি।
প্রতি পূর্ণিমার সোনালী জ্যোৎস্নায়
কড়ির-মালা সাতনরি হার।
ভেসে আসে লাল মাটির গন্ধমাখা,
বাউল সুরের যাদুমন্ত্র
দেখেছি রূপ সাগরে-----💐💐💐