Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

লেখিকা পৃথা ব্যানার্জীর গল্প

লেখিকা পৃথা ব্যানার্জী লিখতে ও কবিতা আবৃত্তি করতে ভালো বাসেন। বই একমাত্র সঙ্গী। পেশায় শিক্ষিকা ছিলেন এখন তাঁর নেশা লেখালেখি করা।:---গল্প-আশার আলোপৃথা ব্যানার্জীদিপ্তী সকলের অমতে দুলাল কে বিয়ে করেছিল। না প্রথমেই বিয়ে নয়, দেড় …

 


লেখিকা পৃথা ব্যানার্জী লিখতে ও কবিতা আবৃত্তি করতে ভালো বাসেন। বই একমাত্র সঙ্গী। পেশায় শিক্ষিকা ছিলেন এখন তাঁর নেশা লেখালেখি করা।

:---গল্প-আশার আলো

পৃথা ব্যানার্জী

দিপ্তী সকলের অমতে দুলাল কে বিয়ে করেছিল। না প্রথমেই বিয়ে নয়, দেড় বছর প্রেম চালাবার পরে। কারোরই মত না থাকার কারণ হচ্ছে দুলালের কোনো ভালো চাকরি নেই। তেমন কিছু পাশের ডিগ্রি ও নেই যে আশা রাখবে ভবিষ্যতে ভালো চাকরি হবে।

দিপ্তীর বাবা পরেশ হালদার অতি সাধারণ একটা কাজ করেন। দুই ছেলেমেয়ে, মা, বৌ নিয়ে সংসার। বিয়ের বাজারে বড় মেয়ে দিপ্তী চলনসই। মোটামুটি সুন্দর দেখতে। ওর কাজ আর কথার মধ্যেও বেশ বুদ্ধির ছাপ থাকে। কলেজে ভর্তি হবার পর কয়েকটা টিউশন করে নিজের খরচ নিজেই চালিয়েছে।


তাই পরেশ বাবুর ভরসা ছিল একটু ভালো ঘরেই হয়তো বিয়ের যোগাযোগ করতে পারবেন। 

সেই দিপ্তী যখন দুলালের মতো ছেলের সঙ্গে চলে গেল খুবই আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। প্রতিজ্ঞা করলেন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আর রাখবেন না।


দুলাল অনেক পরিশ্রম করেও লেখাপড়ায় তেমন ভালো রেজাল্ট করতে পারেনি। তাই তার চাকরিও তেমন ভালো নয়। তবে ছেলে হিসেবে খুবই ভালো।

দিপ্তীর চোখে পড়েছিল মানুষ দুলাল। যে অত্যন্ত সৎ। 

দুলাল বারবার দিপ্তী কে বলেছিল তার মতোন ছেলের সঙ্গে কেন সে জড়াচ্ছে নিজেকে। 

দিপ্তী হেসেছিল।

---"তুমি হাসছো! হাসির মতো কথা বলেছি কি"?

---"বড় চাকরি করা বর হলেই যে সে ভালো জীবন সঙ্গী হতে পারবে তা ভুল। ছোটো ঘরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে জীবন টা কিন্তু বেশি সুখের হয়"। 

পরেশ বাবুর কানে দুলালের সঙ্গে মেয়ের মেলামেশার কথা এসেছিল। মেয়েকে বোঝাতে গিয়ে দেখলেন জল অনেক দুর গড়িয়ে গিয়েছে। তাই সে চেষ্টা না করে উপযুক্ত পাত্র খোঁজায় মন দিলেন।

দিপ্তী সে কথা শুনে মাকে জানিয়ে দিল,

---"আমি দুলাল কে ভালোবাসি।

বিয়ে করলে দুলাল কেই বিয়ে করবো"।

মা সে কথা শুনেই একদম খড়গ হস্ত। এক কথায় বলে দিল,

---" এমন অবিবেচকের কাজ তুমি করবে না।

নিজের জীবন টাকে এমন ভাবে অন্ধকারের মাঝে কেন টেনে নিয়ে যাচ্ছো? তোমার জন্য খুব ভালো পাত্র খোঁজা হচ্ছে। যেখানে তোমার সুন্দর ভবিষ্যৎ আছে"।


---"তোমাদের হিসেবে পাত্রের ভালো মন্দ বিচারের একমাত্র মাপকাঠি হলো তার চাকরি। থাকনা সেই ভালো ছেলের দু একটা গার্লফ্রেন্ড, একটু আধটু মদে আসক্তি, বা রাগের মাথায় বৌয়ের গায়ে হাত তোলার অভ্যেস"! 

----"সে সব খোঁজ না নিয়ে বিয়ে ঠিক করবো! আমাদের ওপর তোর এই ভরসা"?

রাগের মাথায় দিপ্তি একটু জোরেই বললো,

---"কেন তোমরা জেদ করছো। আমার জীবন আমি বুঝবো"। 

----"তাহলে আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করেই তুমি তোমার পথে হাঁটবে। অভাবের সংসার যখন তোমার গলা টিপে ধরবে তখন যেন আবার ফিরে এসো না"।


নিজের ভালোবাসা কে স্বীকৃতি দিতে দিপ্তী ঘর ছাড়লো। তৈরি করলো তাদের ভালোবাসার ঘর।

ভালো চাকরি না থাকার জন্য অভাব অনটন লেগেই থাকলো। ওরা বুঝতে পারলো সামান্য চাকরির সাথে এইভাবে বেঁচে থাকা যায় না। অন্য কিছু একটা রাস্তা দেখতেই হবে।

সামান্য মুলধন দিয়ে বাড়িতেই শুরু করলো তেলে ভাজার দোকান। হোম ডেলিভারি টিফিন ও চালু করলো সেই সঙ্গে। কয়েক মাসের মধ্যেই আশার আলো দেখতে পেলো ওরা। সেই আলোর পথে ওরা দোকানটাকে আরও বড় করলো নানা রকম ফাষ্ট ফুড খাবার দিয়ে।

অনেক দিন আগের সেই আশার আলোটা এখন ঝলমলে রোশনাই হয়ে আলোকিত করেছে ওদের জীবন।

****************_______**************