Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

ছোট গল্প:- অপেক্ষা 🖋ইন্দ্রনীল কর তারিখ:-১০\০৮\২১চুচুঁড়া 
💙❤💜🧡💚💛৹অপেক্ষা৹💛💚🧡💜❤💙       🌸🍀🌸🍀🌸ইন্দ্রনীল🌸🍀🌸🍀🌸 
          আজ সোমবার। ২০১৯ সালের ২২ এ এপ্রিল। খুব সুন্দর সকাল। তবে সূয্যি মামা রাগ করছেন। খুব গরম পরেছে …

 


ছোট গল্প:- অপেক্ষা 

🖋ইন্দ্রনীল কর 

তারিখ:-১০\০৮\২১

চুচুঁড়া 


💙❤💜🧡💚💛৹অপেক্ষা৹💛💚🧡💜❤💙

       🌸🍀🌸🍀🌸ইন্দ্রনীল🌸🍀🌸🍀🌸 


          আজ সোমবার। ২০১৯ সালের ২২ এ এপ্রিল। খুব সুন্দর সকাল। তবে সূয্যি মামা রাগ করছেন। খুব গরম পরেছে । তবে কিছু করার নেই। কলেজে যেতেই হবে। বি কম সেকেন্ড ইয়ারের আজ প্রথম ক্লাস ইন্দ্রের । মনটা একটু এক্সাইটেড হলেও ততোটা ভালো না। ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষার রেজাল্ট ততোটা ভালো হয়নি। যতটুকু সে আশা করেছিল।


        থাক এইসব চিন্তা বাইরে ঠেলে সে কলেজের জন্য বাড়ি থেকে বের হলো। অল্প একটু যেতেই হঠাৎ কে যেন পেছন থেকে ডাকল । সে ভাবলো তাকে তো কেউ চেনে না এখানে । হয়ত অন্য কাউকে ডাকছে। কিন্তু আবার সে ডাকটা শুনল..

-- এই যে শুনছেন

-- পেছন দিকে ঘুরে...

-- আমাকে বলছেন

-- এখানে আপনি ছাড়া আর কেউ কি আছে ?

-- না আমি ভাবলাম যে আমাকে তো এখানে কেউ তেমন চেনে না । তাই আর কি

-- তাই বলে আপনি পেছনে ফিরে দেখবেন না।

-- আচ্ছা দিদি সরি । এখন বলুন কেন ডাকছেন?

-- আমি আপনার দিদি কবে থেকে হলাম। হ্যাঁ

-- আমি মেয়েদের কে দিদি বলেই ডাকি ।

-- আপনার বউকেও কি দিদি ডাকবেন না কি ?

-- সেটা পরে দেখা যাবে । এখন বলুন ডাকছেন কেন, আমার কলেজের দেরী হয়ে যাচ্ছে ।

-- আজকে কলেজে যেতে হবে না.

-- সেটা আমি বুঝবো। এখন বলুন কেন ডাকছেন?

-- আচ্ছা আপনি কি ছোট বেলা থেকেই এমন ত্যারা।

-- আমাকে নিয়ে আপনাকে না ভাবলেও হবে. আপনি কি বলবেন, যে কেন ডেকেছেন ।

-- এই আপনার মুখ দিয়ে কি এছাড়া আর কিছু বের হয় না।

-- ধুর। অযথা সময় নষ্ট।

এটা বলেই ইন্দ্র হাঁটা শুরু করে । ঠিক তখনই মেয়েটা ইন্দ্রের হাতটা ধরে টান দেয় আর বলে...

-- এই আপনি চলে যাচ্ছেন কেন?

-- আপনি কিছু না বললে কি করব?

-- আচ্ছা আপনি আজকে অসিত স্যারের কাছে পড়তে যাননি কেন?

-- একটু শরীর খারাপ ছিল তাই.

-- কেন কি হয়েছে আপনার?

-- আমাকে নিয়ে আপনকে ব্যস্ত হতে হবে না । এখন বলুন তো আমার অসিত স্যারের কাছে যাওয়া না যাওয়াতে আপনার কি ?

-- অনেক কিছু,

-- অনেক কিছু মানে ?

-- কি করে বলব বলুন ? আর না বললে তো আপনিও বুঝবেন না। (একটু লজ্জা পেয়ে)

-- আর লজ্জা পেতে হবে না। এখন বলে ফেলুন আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে।

-- আপনি জানেন গত তিন মাস ধরে আমি আপনাকে ফলো করছি।

-- এতে জানা না জানার কি আছে। এটা আপনার বিষয় কাকে ফলো করবেন না করবেন। তাতে আমি কি করতে পারি।

-- ধুর ভাল্লাগে না । আপনি এমন কেন?

-- আমি আমার মতো । কারো মতো নই তাই।

-- আচ্ছা আর ঘোরাতে পারব না । বলেই ফেলি । I love you

-- হুম ধন্যবাদ ।

-- শুধু এটুকুই আর কিছু বলবেন না।

-- আর কি বলার আছে। এটা আপনার বিষয় । আপনি কাউকে ভালবাসতেই পারেন। তাতে আমি কি করতে পারি ।

-- আপনি কি না করতে পারেন। পুরোটাই তো আপনার ওপর ।

-- মানে ..

-- আপনি আমাকে ভালবাসেন কি না বলুন ?

-- না

-- কেন

-- আমি আপনাকে চিনি না।

-- আমি সায়েরি। বি এস সি ১ম বর্ষে পড়ি। বাড়ি আপনার বাড়ির পাশের টা । এবার বলুন.

-- তাও নয়.

-- কিন্তু এখন নয় কেন?

-- দেখুন আমি এইসব একদম পছন্দ করি না।

-- তো এখন থেকে পছন্দ করা শুরু করুন । আমি আর কিছু জানি না । শুধু এতটুকু জানি যে আমি আপনাকে ভালবাসি সো আপনাকেও আমাকে ভালবাসতে হবে।

-- দেখুন আমি আপনাকে কিছু বলতে চাই। তা শোনার পরও যদি আপনার মনে হয় যে আপনি আমাকে ভালবাসেন, তাহলে আমি ভেবে দেখব .

-- ওকে বলুন

-- Firstly we are same age.so আমি জানি না same age relationship এর ভবিষ্যত কি ? তাই আমি এই কিছু দিনের জন্য কারোর মায়ায় জড়াতে চাই না। কারণ কিছু দিন পর আপনার বিয়ে হয়ে যাবে তখন আপনার শোকে আমি হাতে মদের বোতল নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে পারব না।


Secondly আমার পুরো পরিবার আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের প্রতি আমার একটা দায়িত্ব আছে। আমাকে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে এবং তা যে কোনো মূল্যেই । তাই একটা সম্পর্ক কন্টিনিউ করতে আমাকে সময় দিতে হবে । যা আমি পারব না। আর তাতে আপনি আমাকে অনেক কিছু বলবেন। যার ফলে আমি depression এ ভুগব। আমার লেখা পড়াতে ব্যাঘাত ঘটবে। যা আমি একদম চাই না।


Thirdly.এই মূহুর্তে আমি আপনাকে ভালো করে চিনি না। আপনার প্রতি আমার কোন feelings নেই। so relation এর প্রশ্নই আসে না। তাছাড়া আমি যদি প্রতিষ্ঠিত না হই এই তোমাকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না।


And finally এই সব প্রেম ভালবাসা আমার পরিবারে support করে না। তাই আপনার সাথে যদি আমার relations এর পর বিয়েও হয় আমরা সুখি হতে পারব না। তাই একজন দায়িত্বশীল মানুষ হয়ে আমি এটা করতে পারব না।


মেয়েটা কথা গুলো শুনে স্তব্ধ হয়ে গেছে। তার চোখ দিয়ে জল পরছে । সে ভাবতে পারছে না যে তাকে এভাবে কেউ এ কথা গুলো বলতে পারে ,আর ওইদিকে ইন্দ্র চলে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে । ঠিক ওই সময় সায়েরি বলে উঠল..


-- তাহলে আমি কি করতে পারি । সেটা বলে যাও .

ইন্দ্র ওর দিকে তাকাতেই দেখল মেয়েটার চোখ দুটো জলে ছলছল করছে । ওর ভেতর কি যেন একটা অনুভূতি কাজ করছে। ওর খুব ইচ্ছে হচ্ছে মেয়েটার চোখ দুটো মুছে দিতে। না তাকে নরম হলে চলবে না। তারপর ইন্দ্র বলল

-- জানি না

-- না তা বললে হবে না। আমি তোমাকে ভালবাসি মানে তোমাকেই। এই জায়গাটা আমি কাউকে দিতে পারব না। এখন বলো আমি কি করব।

-- সত্যি যদি ভালবেসে থাকেন । তাহলে অপেক্ষা করবেন।

-- কিন্ত সেটা কতদিন,

-- হতে পারে ৫ বছর, ১০ বছর বা তারও বেশি।

-- কিন্তু আমি তোমাকে কোথায় পাবো।

-- যদি ভালবেসে থাকেন তাহলে ভয় করবেন না আপনার ভালবাসা আপনার কাছেই ফিরবে.

-- ওকে । আর কিছু বলব না। তবে একটা আবদার করব । রাখবে

-- হুম বলুন চেষ্টা করব.

-- আমাকে জড়িয়ে ধরবে । আর কিছু না.

-- এখানে

-- হ্যাঁ ।

-- এটা বলেই সায়েরি ইন্দ্রের বুকে জায়গা খুঁজে নেয়। আর কানের কাছে মুখটা নিয়ে বলে এই মনটা যেন শুধু আমারই থাকে । আর কিছু বলব না । হ্যাঁ তবে আরেক বার বলব আমি সত্যিই তোমাকে ভালবাসি।


   এটা বলে সায়েরি ইন্দ্রকে ছেড়ে দিয়ে চোখটা মুছতে মুছতে অন্যদিকে হাঁটতে শুরু করে। আর ইন্দ্র দাঁড়িয়ে থেকে তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে । তারপর আর কোনো দিল ঐ রাস্তায় সায়েরি কে দেখা যায়নি। তবে ইন্দ্রের চোখ দুটো তাকে খুঁজতো ঠিকি ইইইই। কিন্তু শূন্যতা ছাড়া আর কিছু পায়নি। ওও ধীরে ধীরে সায়েরিকে ভালবেসে ফেলে । কিন্তু কিছু করার নেই। সে নিজে হাতে তার ভালবাসা কে ফিরিয়ে দিয়েছে। এভাবেই চলতে থাকে দিন গুলো।


আজ ঠিক ৪ বছর ১১ মাস ২৯ দিন পর ইন্দ্র একজন লেফটেনেন্ট। তার নামের পূর্বে লে:কর্ণেল ইন্দ্রনীল যুক্ত হয়েছে।

হ্যাঁ সে সফল। তার বাবা মায়ের স্বপ্ন সে পূর্ন করতে পেরেছে। সবার কাছে সে একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব। আজ বাড়িতে ফিরছে সে। বাড়িতে সবাই তাকে সাদরে গ্রহণ করল। সবাই ডাইনিং টেবিলে বসে আছে খাবারের জন্য । হঠাৎ ইন্দ্রের বাবা বলে উঠলেন..

-- বাবা ইন্দ্র । অনেক তো হলো । এবার বিয়েটা করে নে..

ইন্দ্র কোনো উত্তর দিল না। সে না খেয়েই চলে গেল সেখান থেকে।

নদীর পারে বসে আছে ইন্দ্র । হাল্কা হাওয়া বইছে। সে ভাবছে আজ আমার কাছে সব আছে। কিন্তু একটা জিনিস নেই। হ্যাঁ এটা তোমার ভালবাসা ।আজকে কেন নেই তুমি ? তাহলে কি তোমার ভালবাসা মিথ্যে ছিল? তাহলে কেন বলেছিলে অপেক্ষা করবে ? আর আমাকেও কেন তোমার আশায় রাখলে ? আচ্ছা মেয়েরা কি এমনই ? কিন্তু তোমার চোখ দুটো তো বলেছিল তুমি এমন নও..


     না আর ভাবতে পারছে না ও। মনটা ধীরে ধীরে খুব খারাপ হয়ে আসছে। হঠাৎ সে তার কাঁধে কারুর স্পর্শ অনুভব করলো। সে পাশ ফিরে তাকাতেই দেখল একটা মেয়ে..তারপর বলল..

-- হ্যাঁ, কিছু বলবেন

-- হ্যাঁ অনেক কিছু।

-- কিন্তু আপনি কে?

-- কি আমি কে ? আমাকে ভুলে গেছ?

এবার সে মেয়েটার চোখ দুটোর দিকে তাকালো । হ্যাঁ সে চিনতে পেরেছে। এটাই ওর সায়েরি। ওকে দেখলে বোঝা যাবে না। এই পাঁচ বছরে ওর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু ওর চোখ দুটো আগের মতোই আছে । তাকালে মনে হবে কোনো বিশাল সাগরে ডুবে যাচ্ছি। তখন আবার সায়েরি বলে উঠল

-- কি কিছু বলবে না..এভাবে তাকিয়েই থাকবে ।

ইন্দ্র কিছু বলেনি । সে শুধু উঠে দাঁড়িয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে। অনেক্ষন আগলে রাখে সায়েরিকে নিজের বাহুডোরে আর কান্না করতে থাকে। তখন সায়েরি বলে.

-- এই পাগল কাঁদছ কেনো ?

-- নিশ্চুপ

-- এই পাগল। আমি তো ফিরে এসেছি। কি ভেবেছিলে আমি আসব না।

-- আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না।

-- কেন?

-- সত্যি আমি ভাবিনি তুমি আমার জন্য এত দিন এভাবে অপেক্ষা করবে । আর ফিরে আসবে আমার কাছে।

-- আমার ভালবাসা ঠুনকো নয়.মিষ্টার। ভাল একজনকেই বাসা যায় । আর আমি তোমাকে বেসেছি । তো এই জায়গাটাতে অন্য কাউকে কীভাবে বসাই বলো।

 

ইন্দ্র আর কিছু বলেনি। সে আবার ওকে জড়িয়ে ধরে । ছোট বাচ্চাদের মতো খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। আর কোথাও যেতে দেবে না সে তার ভালবাসাকে । আজ সে পরিপূর্ন.

হ্যাঁ সত্যিই সে পরিপূর্ন।


ভালো থাকুক না এই ভালবাসা গুলো প্রতিটা হৃদয়ে হৃদয়ে। সবার চোখের মণি হয়ে। কেননা আজকের এই সময়ে এই ভালবাসা যে খুব অপ্রতুল। সবাই যে নিজের সার্থটাই খোঁজে ।


                                         🍁ইন্দ্রনীল🍁


🧡💜❤💙💛💚🧡💜❤💙💛💚🧡💜❤     

       💕☘💕☘💕ইন্দ্রনীল💕☘💕☘💕