Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন#যদি_এমন_হত#কেয়া_মুখার্জী
-- চায়ে গরম চায়ে।উঠুন ম্যাডাম আপনার বেড টি যে ঠান্ডা হয়ে গেল...
শুভর গলার আওয়াজে চোখ কচলাতে কচলাতে বিছানার ওপর উঠে বসলাম।আড়চোখে জানলা দিয়ে একবার বাইরেটা দেখে নিলাম।নাহ সব ঠিক ই তো আছে।ই…

 


#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন

#যদি_এমন_হত

#কেয়া_মুখার্জী


-- চায়ে গরম চায়ে।উঠুন ম্যাডাম আপনার বেড টি যে ঠান্ডা হয়ে গেল...


শুভর গলার আওয়াজে চোখ কচলাতে কচলাতে বিছানার ওপর উঠে বসলাম।আড়চোখে জানলা দিয়ে একবার বাইরেটা দেখে নিলাম।নাহ সব ঠিক ই তো আছে।ইয়ে মানে রবিদা তো যথারীতি তাঁর নিজের স্থানে মানে পূবদিকেই বিরাজ করছেন, তাহলে আমার এই সৌভাগ্যের কারণ....

কিছুই বোধগম্য হলনা।কিন্তু ঘরের লক্ষ্মীর মত যেচে আসা সৌভাগ্য কে তো অবজ্ঞা করতে পারিনা।তাই চায়ের কাপে চুমুক দিলাম।বাহ্ বেশ বানিয়েছে তো চা টা।ওদিকে একজন পরীক্ষার্থীদের মত ফলাফল জানার অপেক্ষায় আমার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে আছে।

-- কি হল এবার তো তোমার চা টা ঠান্ডা হবে।চা টা মন্দ হয়নি।মাঝে মাঝে বানালেই তো পারো একটু।


সকালের রোদ খেলে গেল শুভর মুখে।বলল তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিতে ব্রেকফাস্ট ও নাকি ওই বানাবে।হয়ে গেল! যে কোনোদিন রান্নাঘরের চৌকাঠ মাড়ায়নি সে কি বানাবে কি জানি।

যাক ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে আসতেই দেখি ব্রেকফাস্ট রেডি।টোস্ট, ওমলেট,আর মিষ্টি।

-- আমি এটুকুই পেরেছি,চলবে তো?

-- মনটা আজ লুচি লুচি করছিল তা থাক গে, যা বানিয়েছো তাতেই হবে।


বেশ মৌজ করেই খেলাম।এরকম আদর করে মুখের সামনে দেওয়া খাবার সোনামুখ করে না খেলে ঠাকুর পাপ দেবে যে।


-- আচ্ছা এবার বল লাঞ্চে কি বানাবো?চিকেন খাবে নাকি মাছ?

-- মানেটা কি?তুমি লাঞ্চ ও বানাবে নাকি?কিন্তু কেন?

-- আহা!আমার কি একদিন ইচ্ছে করতে পারেনা আমার একমাত্র বৌটাকে একটু নিজের হাতে রেঁধে খাওয়াতে?তুমি না হয় একটু হেল্প করে দেবে।যদিও আমি তো কোনোদিন ই তোমাকে রান্নায় হেল্প করিনা।আজ রবিবার তাই তোমার আজ ছুটি।ইচ্ছেমত সময় কাটাও।মাসে একটা দিন না হয় একটু রিলাক্স করলে।


এ আমি কি শুনছি?নিজের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারছিনা।ভগবান কবে থেকে আমার ওপর এত সদয় হলেন কে জানে....


তারপর চলল শুভর রান্নাঘর অভিযান।আমি অবশ্য একটু সাহায্য করে দিলাম।কিন্তু রান্নাবান্না পুরোটাই একা হাতে করল।আর আমি অবাক হয়ে দেখলাম।এই প্রথম দুজনে মিলে কোনো কাজ করার আনন্দ উপভোগ করলাম।আজ আমার প্রকৃত অর্থে রবিবার।এমনকি গুছিয়ে খেতেও দিলো।সত্যি এত সৌভাগ্য আমার হবে কোনোদিন ভাবতেও পারিনি।


    সবে তরকারি দিয়ে খাওয়া শেষ করে লেগপিসটা মুখে তুলেছি হঠাৎ দেখি শুভ জোরে ঝাঁকুনি দিচ্ছে আমাকে।

 -- আরে একটু শান্তি করে খেতে দাও না.....

 -- তাড়াতাড়ি ওঠো, আট টা বেজে গেছে, আমার বেড টি টা দেবে তো....

ধড়মড়িয়ে উঠে বসলাম বিছানায়।নিজের গায়ে চিমটি কাটলাম একটা।

উফফ্...

হায় ভগবান! আমি তার মানে এতক্ষন স্বপ্ন দেখছিলাম....

তাইতো বলি আমার এত সৌভাগ্য হল কি করে?

যথারীতএকটু ফ্রেশ হয়েই নিত্যদিনের কর্মযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়লাম।গৃহবধূদের  রবিবার শুধু স্বপ্নেই হয়।আর পতিদেবতার হাতের বানানো খাবার সকলের কপালে থাকেনা।অন্তত আমার কপালে যে নেই সে আমি ভালোই বুঝলাম।