সংসদ ভবনের মধ্যেই শ্লোগান উঠলো খেলা হবে,খেলা হবে।সত্যিই কি খেলা হতে চলছে।হয়তো তাই,নতুবা নয়।তবে 2024 এর লোকসভা নির্বাচন কে কেন্দ্র করে যে খেলা হবে স্লোগান,বঙ্গের সীমানা ছাড়িয়ে দিল্লির দরবারে আছড়ে পড়বে তা নিয়ে কোন সংশয় নেই।পশ্চিমবঙ…
![]() |
তরুণ চট্টোপাধ্যায় |
পশ্চিমবঙ্গের বিধান সভা ভোটে এই খেলা হবে স্লোগান টি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃনমূল দলকে যথেষ্টই উজ্জীবিত করেছিল।ঘন ঘন দিল্লি বিজেপির নেতা নেত্রী এসেও সে খেলা বন্ধ করতে পারেন নি।এমন কি খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘন ঘন বঙ্গ বিজেপির পাশে দাঁড়িয়ে ও সে খেলা থেকে বিচ্যুতি ঘটাতে সক্ষম হননি।পশ্চিমবঙ্গের ভোটে খেলা শেষ করে এবার লক্ষ্য দিল্লি দখলের।এক পায়ে খেলেও মমতা বন্দোপাধ্যায় দেখিয়ে দিয়েছেন বঙ্গের মাটি দুর্জয় ঘাঁটি বুঝে গেছে বিজেপি।তাই তল্পি তল্পা নিয়ে ফিরেও গেছেন।
মমতা বন্দোপাধ্যায় দিল্লি সফরে গিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে এক প্রস্ত কথাও সেরেছেন।এমনকি কংগ্রেসের হাই কমান্ড সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে ও তাঁর কথা হয়েছে।কথা হয়েছে ছোট বড় বিরোধী দল গুলির সঙ্গে ও।
তবে কি 2024 এর লোকসভা ভোটে বিরোধীরা এক কাট্টা হয়ে মোদী সরকারের অপসারন চাইবেন।সেটিই স্বাভাবিক ।কোভিড পরিস্থিতিতে লেজে গোবরে হওয়া বিজেপি দল কে সরাতে যে বিরোধীরা আদা জল খেয়ে মাঠে নামবেন একথা অনস্বীকার্য ।কেউ এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বেন না বিজেপি সরকার কে।আর তা বুঝেছেন নরেন্দ্র মোদির সরকার ।তাই বিজেপিও কোমর বাঁধছেন ।যেমন করেই হোক দিল্লি যেন হাতছাড়া না হয়।বঙ্গ জয়ের স্বপ্ন তো সখাত সলিলে ডুবে মরি হয়ে গেল।এখন দেখাযাক দিল্লি নিয়ে কি হয়।
পশ্চিমবঙ্গের খেলা হবে স্লোগান টি এখন বিরোধী দের মুখে মুখে ।কারন এই শ্লোগান পেরেছে পশ্চিমবঙ্গের মাটি থেকে বিজেপি কে আটকাতে ।আর সৌজন্যে মমতা বন্দোপাধ্যায় ও তাঁর তৃনমূল দল।
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীরা অবশ্য মমতা বন্দোপাধ্যায়ের এই খেলা হবে শ্লোগান কে পাত্তা দিতে নারাজ ।বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তো বলেই দিলেন,খেলা হবে শ্লোগান বন্ধ করে বলুন চাকরি হবে।পশ্চিমবঙ্গ তো চলছে দান ও খয়রাতি নিয়ে ।
আরো একটা লাখ টাকার প্রশ্ন উঠে আসছে।খেলা হবে তো বুঝলাম, কিন্তু মোদীর বিকল্প মুখ কে হবেন।প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসবেন কে।সেটি কি কংগ্রেসের রাহূল না তৃনমূলের মমতা।
সমগ্র ভারতে রাহুল গান্ধীর কোন ক্যারিশমা চোখে পড়ছে না।বিরোধীরা বলছেন মমতাই সঠিক মুখ।পশ্চিমবঙ্গ এই মুখকে সামনে তুলে এনেই তৃতীয় বার তৃনমূল কে জয় দিয়ে ছেন।তবে ভোট বাজারে বিধান সভা ও লোক সভা ভোটের ফারাক অনেক।লোকসভা ভোটে ভোট দেন সমগ্র ভারতবাসী।যদিও ভোটের এখনো অনেক বাকি।তাই সে প্রশ্ন এখন তোলা আছে।
মমতার ভোট সঙ্গী আই প্যাকের কর্মী রা ইতিমধ্যেই ভারতে ছড়িয়ে পড়েছেন।ত্রিপুরা তে কোভিড বিধি ভঙ্গের অপরাধে তাঁদের সমন ও দেওয়া হয়েছে।এক ঝাঁক তৃনমূল নেতৃত্ব ও সেখানে রয়েছেন।মমতা বন্দোপাধ্যায় সেখানে পৌঁছে গেলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না।
যদিও বিজেপি সাংসদ ও বিধায়করা এক যোগেই দাবি তুলেছেন ,পশ্চিমবঙ্গের মমতা সরকার কোভিড বিধি দেখিয়ে তাঁদের ত্রান দিতে দেয় না।এতো নিজের বেলায় আঁটিশুটি পরের বেলায় দাঁত কপাটি।ত্রিপুরা সরকার যা করেছেন তা সঠিকভাবে ই করেছেন।এর মধ্যে মিথ্যা রাজনীতি দেখছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃনমূল দল।
উড়িষ্যার ক্ষেত্রে ও দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারা সেখানে ঢুকতে গেলে বাঁধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন ।অথচ উড়িষ্যা বাসী পশ্চিমবঙ্গের সীমানা পেরিয়ে আসছেন রোজই ।
সে যাই হোক কোভিড বিধি সকল রাজ্যের ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে আলাদা আলাদা ।সমগ্র ভারতজুড়েই এক বিধি থাকাটাই কাম্য।কিন্তু বাস্তবে তা লঙ্ঘন করা হচ্ছে ।
কোভিড 2024 এ থাকবে কি থাকবে না তা এখন থেকে আঁচ করা সম্ভব নয়।তবে পশ্চিমবঙ্গের খেলা হবে স্লোগান টি যে বহাল তবিয়তে রাজ করবে তা তো বলাই যায় ।ইতিমধ্যেই সংসদ ভবনের মধ্যেই তৃনমূল সাংসদেরা আওয়াজ তুলে দিয়ে ছেন খেলা হবে।
আর তা নিয়ে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারা খুব চটেছেন।কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানী নিজেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন।অনুরাগ ঠাকুর ও একহাত নিয়েছেন ।
একেতো পেট্রোল ও গ্যাসের দাম নিয়ে বিজেপি সরকার মহা ফাঁপরে।পেট্রলের দাম সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে এখন আকাশ মুখী।আর এ অবস্থায় খেলা হবে শ্লোগান টি ভাবিয়ে তুলছে কেন্দ্রীয় সরকারকে ।ফলে সেই শ্লোগানের পাল্টা খুজছেন তাঁরা ।
এই মূহুর্তে ভোটের ইকুয়েশন কি হবে তা বলা শক্ত ।কারন এটি লোকসভার ভোট।আরো নানা ইস্যু আসবে ক্রমে ক্রমে ।
মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ হয়ে দাঁড়ায় কিনা তাও সময় বলবে।জ্যোতি বসুর টাটকা স্মৃতি আজও বাঙালির মনে দাগ কাটে।সেখানে বাংলা থেকে কেউ সেই চেয়ারে বসলে পশ্চিমবঙ্গ বাসীর আনন্দের সীমা থাকবে না।তবে বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসন সংখ্যা বিন্যাস কেমন হয় সেটি ও দেখার।তাই অপেক্ষা আমাদের করতেই হবে।
খেলা হবে ,খেলা হবে।সত্যি যদি সে খেলা হয় ও বিজেপি সরকার কে গদিচ্যুত করা যায় তখনই প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার নিয়ে কথা উঠবে।ভোটের আগেই নিশ্চয় তা ঠিক হয়ে যাবে।
পশ্চিমবঙ্গের বামেরা অবশ্য এখনো পর্যন্ত যে অবস্থান নিয়ে ছেন তাতে করে বিজেপি ও তৃনমূল তাদের কাছে সমান শত্রু ।এখন তাদের হাই কমান্ড কি অবস্হান নেন সেটি দেখার।
বিরোধীরা যদি সঠিক ভাবে এক কাট্টা হতে পারেন তাহলে খেলা কিন্তু জমে যাবে।
খেলা হবে পৌঁছে যাবে বঙ্গের সীমানা পেরিয়ে দেশের সীমানায়।
খেলা হবে আর রাজ্যের চৌহদ্দিতে আটকে থাকবে না।ভারত জুড়েই আওয়াজ উঠবে খেলা হবে ,খেলা হবে।