Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বর্ষা এলো, রূপনারায়ন নদে ইলিশের দেখা নেই , ভোজন রসিক বাঙ্গালীরা আশায় দিন গুণছে এবার হয়তো উঠবে ইলিশ।

ঘন্টু বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুরইলিশ ভাপা, ইলিশের পাতুর, সরষে ইলিশ, ইলিশ বিরিয়ানি এসব শুনলে কার না জিব দিয়ে জল আসে। শ্রাবণ মাস শেষ হয়ে ভাদ্র মাস আগত। মিলছে না রুপালি শস্য। মিঠা জলে ইলিশ থাকতে ভালোবাসে। ইলিশ স…

 


ঘন্টু বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুর

ইলিশ ভাপা, ইলিশের পাতুর, সরষে ইলিশ, ইলিশ বিরিয়ানি এসব শুনলে কার না জিব দিয়ে জল আসে। শ্রাবণ মাস শেষ হয়ে ভাদ্র মাস আগত। মিলছে না রুপালি শস্য। মিঠা জলে ইলিশ থাকতে ভালোবাসে। ইলিশ সাগরের মাছ হলেও ডিম পাড়তে ঝাকে ঝাকে নদীতে ঢুকে । সাগর পেরিয়ে রূপনারায়ন নদে এখনো ইলিশের দেখা নেই। বরাবরই ইলিশ প্রিয় বাঙালির কাছে। বেশ কিছুদিন ধরে ফনি , আমফান, বুলবুল, ইয়াসের মত ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হয় জলোচ্ছ্বাস, এই জলোচ্ছ্বাস এর প্রভাবে ক্ষতি হয়েছে ইলিশ সহ নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন। ২০১৮ থেকে এখন পর্যন্ত বাজারে ইলিশের চাহিদার তুলনায় যোগান অনেকটাই কম। । চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে ইলিশ মাছে আছে ওমেগা ৩ , ফ্যাটি অ্যাসিড, সেলেনিয়াম, জিংক পটাশিয়াম। এই মাছ খেলে হৃদযন্ত্র ভালো থাকে ,মস্তিষ্কের গঠন ভালো হয়। রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। এবং বাথ বা আর্থারাইটিস কম হয়। ইলিশ খেতে ভালবাসে না এমন কোন বাঙালি নেই। মাছের আকার হবে পটলের মত অর্থাৎ মাথা আর লেজ সরু আর পেটটা মোটা ,লাল চোখ আর চোখের চারদিকে লাল গোলাকৃত হলে হবে নোনা জলের ইলিশ। সমুদ্রের নোনা জলের ইংলিশের স্বাদ কম । অন্যদিকে চোখ নীল এবং গোলের ভিতর সাদা বা হলদেটে ইলিশ হল নদীর মিঠা জলের ইলিশ।খেতে খুবই সুস্বাদু ।টাটকা ইলিশের চোখ থাকে স্বচ্ছ, দেখাবে উজ্জল। হিমঘরে রাখা ইলিশের চোখ ভিতরের দিকে ঢুকে থাকবে চোখ ঘোলাটে দেখাবে। টাটকা ইলিশের শরীর যদি বাঁকাভাবে থাকে সেটি টাটকা ইলিশ এর লক্ষণ। ইলিশের মুখ সরু হলে তার স্বাদ বেশি। ইলিশের কানকোয় বোঝা যাবে সেটি টাটকা ইলিশ কিনা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম বৃহত্তর মাছের বাজার মেছেদা। এই মাছের বাজারে রাধাকৃষ্ণ ফিস কোম্পানি, উড়িষ্যা ফিস কোম্পানি এবং বর্মন ফিস কোম্পানি ইলিশ সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের ব্যবসা করে। এইসব মাছ আরৎ গুলিতে হলদিয়া, ডায়মন্ডহারবার ,দিঘা ,উড়িষ্যার পারাদ্বীপ ,২৪ পরগনা বাংলাদেশ থেকে মাছ আছে। রূপনারায়ন নদে একসময় ভালো ইলিশ উৎপাদন হতো। এখন সারাদিনে দু তিন কেজির বেশি ইলিশ রূপনারায়ন থেকে পাওয়া যায় না। যেসব ইলিশ টাটকা ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ বারো তেরোশ টাকা। যেসব ইলিশ কয়েক মাস আগে ধরা বাজার দর ছসাতশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির বেশি ইলিশের দাম পনেরশো থেকে দু হাজার টাকা বিক্রি। ইলিশের আকাল এর জন্যেই এই দাম বৃদ্ধি। মাছ ব্যবসায়ী শংকর মান্না বলেন এখন ঝিরঝির বৃষ্টি নেই তাই সমুদ্র নদী থেকে মাছ উঠছে কম। তবে যে দাম বৃদ্ধি হয়েছে ,সময় যত যাবে তা কিছুটা কমবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেশ কয়েকটি ফিশারির মালিক পিন্টু জানা বলেন গত দু'বছর ধরে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের ফলে মাছ উৎপাদন হওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। উৎপাদন কম হওয়ার জন্যই ইলিশ মাছের দাম এত বেশি। এই এলাকার পরিবেশ প্রেমী সুকুমার মাইতি বলেন বিভিন্ন শিল্প থেকে রাসায়নিক পদার্থ নদী ও সমুদ্রের জলে মেশার ফলে জল দূষনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপকভাবে। এটা সত্য যে স্ত্রী ইলিশ বছরে দুবার ডিম পাড়ে। সমুদ্র থেকে নদীতে এসে ডিম পারতে পছন্দ করে। প্রথম সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে, বাকিটা ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল মাসে। দূষণের ফলে বহু ডিম নষ্ট হয়ে যায়। ইলিশ মাছের উৎপাদন বাড়বে তখনই যদি সমুদ্রে এবং নদীতে দূষণের মাত্রা কমে। এখন দেখার বিষয় শ্রাবণ ভাদ্র আশ্বিনে বাঙালির প্রিয় কাঁচা আম দিয়ে ইলিশ মাছের রোল, করমচা আর ইলিশের ঝোল পাতে আছে কিনা। সেই সঙ্গে আরও অপেক্ষা দুর্গাপূজার নবমীর রাতে ইলিশ রান্না করে দেবীকে ভোগ দেওয়া রীতি রয়েছে বাংলায় বাঙালির সেই আশা পূরণ হয় কিনা।