বীরাঙ্গনা দিবস স্মরণ , জয়দীপ পন্ডা , তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর : 1942 সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ইতিহাসে 29 শে সেপ্টেম্বর এক ঐতিহাসিক' স্মরণীয় দিন। ঐদিন তমলুক মহাকুমার তমলুক মহিষাদল সুতাহাটা ও নন্দীগ্রাম থানা এবং অন্যান্য সরকার…
বীরাঙ্গনা দিবস স্মরণ , জয়দীপ পন্ডা , তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর : 1942 সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ইতিহাসে 29 শে সেপ্টেম্বর এক ঐতিহাসিক' স্মরণীয় দিন। ঐদিন তমলুক মহাকুমার তমলুক মহিষাদল সুতাহাটা ও নন্দীগ্রাম থানা এবং অন্যান্য সরকারী কর্মকেন্দ্রগুলি আক্রমণ ও অধিকারের দিন স্থির হয়েছিল। ওই দিনটিতে তমলুকে প্রাণ দিলেন 73 বছরের বৃদ্ধা বীরাঙ্গনা মাতঙ্গিনী হাজরা থেকে 14 বছরের বিদ্যুৎ বাহিনীর কনিষ্ঠতম ছাত্র পুরীমাধব প্রামানিক। তমলুক থানায় আগস্ট বিপ্লবী শহীদ হলেন আলিনান গ্রামের মাতঙ্গিনী হাজরা।
আলীনান গ্রামের matangini দেবীর শ্বশুর বাড়ি |
টিয়াখালী গ্রামের রামেশ্বর বেরা , মথুরি গ্রামের লক্ষ্মী নারায়ণ দাস ,পাইক পাড়া গ্রামের ভূষণ চন্দ্র জানা, আলিনান গ্রামের নগেন্দ্রনাথ সামন্ত , নিকাশি গ্রামের বিষ্ণুপদ চক্রবর্তী, তমলুক শহরের নিরঞ্জন জানা, হিজল বেরিয়া গ্রামের নিরঞ্জন পাড়িয়াল, মথুরি গ্রামের জীবনকৃষ্ণ বেরা, কিসমত পুতপুতিয়া চন্দ্র মোহন দিন্দা ও বিপিনবিহারী মন্ডল। মহিষাদল থানার বার অমৃত বেরিয়া গ্রামের শশীভূষণ মান্না, সুরেন্দ্রনাথ দিগার , টোটাবেরিয়া গ্রামের ধীরেন্দ্রনাথ দিগার, সুন্দরা গ্রামের সুরেন্দ্রনাথ মাইতি, মাধবপুর গ্রামের আশুতোষ কুইলা , গোপালপুর গ্রামের সুরেন্দ্রনাথ মাইতি, সুধীরচন্দ্র হাজরা, সিঙ্গুরমারি ক্ষুদিরাম বেরা , ঘাগড়া গ্রামের রাখাল চন্দ্র সামন্ত ,বকশি চক গ্রামের শ্রী হরিদাস , কালিকা কুন্ডু গ্রামের ভোলানাথ মাইতি, সুন্দরা গ্রামের যোগেশ চন্দ্র দাস। হরিখালী গ্রামের পঞ্চানন দাস, রাজারামপুর গ্রামের প্রসন্নকুমার ভূঁইয়া, তাজপুর গ্রামের দ্বারিকানাথ সাহু, ঘাটোয়াল গ্রামের পূর্ণ চন্দ্র মাইতি, খঞ্চি গ্রামের উপেন্দ্রনাথ জানা, চন্ডিপুর গ্রামের সিন্ধুবালা মাইতি। সুতাহাটা থানার দ্বারিবেরিয়া গ্রামের পুরি মাধব প্রামানিক ,পান্না গ্রামের ব্রজগোপাল দাস , দ্বারিবেরিয়া গ্রামের অন্নদাচরণ সামন্ত। নন্দীগ্রাম থানার গৌড় চকগ্রামের তরেন্দ্র নাথ মন্ডল , বামুনারা গ্রামের বানু রানা ও ভূতনাথ সাহু, কুলুপ গ্রামের গোবিন্দ দাস, বাজাবেড়িয়া গ্রামের গৌরহরি কামিলা, ধান্যশ্রী গ্রামের গুণধর সাহু, আমড়াতলা গ্রামের বিহারীলাল করণ, হরিপুর গ্রামের বিহারীলাল হাজরা, মোহাম্মদপুর গ্রামের শেখ আলাউদ্দিন, সন্ধ্যাখালি গ্রামের পুলিনবিহারী প্রধান, বাহাদুরপুর গ্রামের পরেশ চন্দ্র গিরি, ঘাগদা গ্রামের গুনধর হ্যান্ডেল ,বিরুলিয়া গ্রামের মুচিরাম দাস, সৃষ্টিধর বেড়া, আমড়াতলা গ্রামের উপেন্দ্রনাথ দাস, কুলাপাড়া গ্রামের রাশি দাস। ইনারা ছাড়াও বহু কর্মীই আহত হয়েছিলেন ।
2002সালে ভারত সরকার কর্তৃক প্রকাশিত স্বারক ডাক টিকিট এ matongini দেবী এরছবি প্রকাশিত হয়েছে |
বহুজনকে ইংরেজ সরকার নানা ভাবে নিগ্রহ করেছিল। অনেক দেশপ্রেমিককে দীর্ঘদিন কারান্তরালে জীবন অতিবাহিত করতে হয়েছিল। এইভাবে অবিভক্ত তমলুক মহাকুমার 42 এর আগস্ট আন্দোলনের ঐতিহাসিক পদযাত্রা শুরু হয়েছিল 29 শে সেপ্টেম্বর। ওই দিনটি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এক মহান গৌরবময় ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। কারণ এই দিনটিতে করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে গান্ধীজীর এই নির্দেশে গান্ধী বুড়ি নামে সুপরিচিত 73 বছরের বৃদ্ধা বাল্যবিবাহ মাতঙ্গিনী দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্ম বলিদান করেছিলেন। তাই সম্প্রতি তমলুক মহাকুমার বাসি এই দিনটিকে স্মরণ করার জন্য বীরাঙ্গনা দিবসরূপে চিহ্নিত করে ,শহীদ মাতঙ্গিনী দেবীকে সশ্রদ্ধ শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে চলেছেন।
Matangini দেবীর জন্ম ভূমি হোগলা গ্রাম |
আমরা এই দিনটি পালন করব কেবল মাতঙ্গিনী দেবীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে নয় সেই সঙ্গে অবিভক্ত মেদিনীপুরের যেসব বীরাঙ্গনারা স্বাধীনতার মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন জেল খেটেছেন ধর্ষিতা হয়েছেন এবং নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করব। তাদের সবাই এর অকৃত্রিম সংগ্রাম ও কষ্ট ভোগ এর কথা স্মরণ করার জন্য 29 সেপ্টেম্বর দিনটি শ্রদ্ধার সঙ্গে উদযাপিত হওয়া বিশেষ জরুরী বলে আমরা মনে করি। অবিভক্ত তমলুক মহাকুমার নারী সমাজ কিভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সন্তান-সন্ততিদের জানার প্রয়োজন এই দিনটি স্কুল কলেজ বিভিন্ন ক্লাবের সংস্থায় পালিত হওয়া দরকার বলে মনে করি।