Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

তক্ষক আজ এক বিরল প্রজাতি

কক্ কক্ দিয়ে শুরু করে তক্ ক্কা ।এই ডাক এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা শুনেছে কিনা আমার জানা নেই।তবে আমাদের প্রজন্মের অনেকেই যে জেনে না জেনে এই ডাক শুনেছেন তা কিন্তু হলফ করে বলতে পারি।বিশেষ করে গ্রাম বাংলায় যারা মানুষ হয়েছেন।ছেলে বেলায়…


তরুণ চট্টোপাধ্যায় 
কক্ কক্ দিয়ে শুরু করে তক্ ক্কা ।এই ডাক এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা শুনেছে কিনা আমার জানা নেই।তবে আমাদের প্রজন্মের অনেকেই যে জেনে না জেনে এই ডাক শুনেছেন তা কিন্তু হলফ করে বলতে পারি।বিশেষ করে গ্রাম বাংলায় যারা মানুষ হয়েছেন।

ছেলে বেলায় আমার ধারনা ছিল এটি একটি বিষধর সাপ।তাই চোখে দেখলেও সে ভাবে সাহস করে কাছে যেতে পারিনি।কারন গ্রামে মানুষ হলেও আজও সাপ থেকে দশ হাত দূরেই থাকি।কিন্তু আজ জেনেছি এটি একেবারেই সাপের গোত্র নয়।গল্প শুনেছিলাম বুড়ো সাপ নাকি লেজ খসে তক্ষক হয়।যা একেবারেই মিথ্যা ।তবুও ছেলে বেলার ধারনা।তাই লিখলাম ।

ইংরেজি gecko.বৈজ্ঞানিক নাম Geeko gecko.ভাঙাচোরা বাড়ির আনাচে কানাচে,পরিত্যক্ত জায়গায় এদের হাঁটাচলা ।এটি গিরগিটির একটি প্রজাতি ছাড়া আর কিছু নয়।বিষধর তো নয়ই ।গেকোনিডি গোত্তের এই তক্ষক।অথচ পুরানে ও এটিকে সাপ হিসাবেই গল্প পড়েছি।

যাক সে কথা।আমার লেখার উদ্দেশ্য হলো পাঠকদের কাছ থেকে আরো কিছু জানা।কারন পাঠকেরা হয়তো আমার থেকেও বেশি কিছু জানেন এই তক্ষক সন্পকে ।

তক্ষকের পিঠের দিকটি ধূসর নীলচে, বা বেগুনী ধূসর।সমগ্র শরীর জুড়ে লাল ও সাদার ফোঁটা ।দেখতে চমৎকার বলেই তো মনে হয়।

মাথা বড়,নাকের ডগা চোখা ও ভোঁতা ।চোখ দুটি বড় বড়।যা ভয়ের সঞ্চার করে।মনিটি ফালি গড়নের।

দৈর্ঘ্য নাকের ডগা থেকে পা পর্যন্ত প্রায় 17 সেমি।লেজ ও প্রায় ততটা।ফলে সাপের সঙ্গে চেহারার সাদৃশ্য তো রয়েছেই।তাই ভুল তো হতেই পারে।

কীট পতঙ্গ, টিকটিকি, ছোট পাখি ও ছোট ছোট সাপ খেয়েই এদের জীবন ধারণ ।

এটি বিষাক্ত সরীসৃপ কিন্তু একেবারেই নয়।ভুল ধারনা থেকেই এটিকে আমরা বিষাক্ত ভাবি।

মায়নামার, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওস,কাম্পুচিয়া,মালয়েশিয়া, ইনেদানেশিয়া, চীন ও ফিলিপাইন এ প্রায় 600 প্রজাতির তক্ষক এক সময় মিলতো।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে নাকি ওষুধ তৈরির কাজে এই তক্ষক কে ব্যবহার করা হয় যথেচ্ছ ভাবে।আর তার ফলশ্রুতি এদের নিধন।

আজ গ্রাম গুলি শহর হচ্ছে, ফলে এদের সংখ্যা ও যথেচ্ছ ভাবে ক্রমহ্রাসমান ।

কক্ কক্ তক্ ক্কা শব্দটি যা ছেলেবেলায় কানে বাজতো,আজ তা আর বাজে না।

কত কিছুই তো হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের চারিপাশ থেকেই।

একদিন তো আমরাও হারিয়ে যাব।

তবুও ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখবে নব প্রজন্ম ।

তক্ষক সাপ নয়।এটি বিষাক্ত ও নয়।

তবুও সর্প ভেবে ছেলে বেলার সেই ভয় আজও আমাদের কুরে কুরে খায় ।

নিরীহ এই প্রানীটিকে আজ বড় দেখতে ইচ্ছে করে।কিন্তু সব ইচ্ছে কি পূরন হয়।না হয়না।

তাই বই এর পাতায় জায়গা নেওয়া তক্ষক নিয়ে ই আজকের এই প্রতিবেদন।

তক্ষকেরা আজও হয়তো আছে।তবে তা সংখ্যায় অল্প ।

থাকুক না।প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় জীবজগতের উপস্থিতি তো দরকার ।

তক্ষক ও থাক আমাদের মননে।ছেলেবেলার ডাইরিতে।