Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

মোমবাতি শিল্প আজ শুধু স্মৃতি

দীপাবলীর আগের দিন ছাদের কার্নিশ থেকে শুরু করে বারান্দা রোয়াক সর্বত্রই মোমবাতির আলোর রোশনাই।আর এই আলো জ্বলে দীপাবলির সপ্তাহ ধরেই।ছোট বড় বাতিতে সেজে ওঠে গৃহস্থের অঙ্গন।কিন্তু আজ সে বাতি আজ আর চোখে পড়ে না।সেই জায়গায় এসেছে সুদৃশ্য …


তরুন চট্টোপাধ্যায়
দীপাবলীর আগের দিন ছাদের কার্নিশ থেকে শুরু করে বারান্দা রোয়াক সর্বত্রই মোমবাতির আলোর রোশনাই।আর এই আলো জ্বলে দীপাবলির সপ্তাহ ধরেই।ছোট বড় বাতিতে সেজে ওঠে গৃহস্থের অঙ্গন।কিন্তু আজ সে বাতি আজ আর চোখে পড়ে না।সেই জায়গায় এসেছে সুদৃশ্য টুনি ল্যাম্প এর আলো।বাতি আজ অদৃশ্য ।আজ আর চোখে পড়ে না মোমবাতি থেকে ঝরে পড়া মোম সকল।

অথচ এমন তো ছিল না।শহর থেকে শুরু করে গ্রাম গঞ্জে গড়ে উঠেছিল মোমবাতির কারখানা।বাজার থেকে মোম এনে সেই মোমে পলতে লাগিয়ে তৈরি হতো ছোট বড় নানা আকারের নানা রঙের মোমবাতি ।এর সিংহ ভাগই ছিল সাদা।মোমবাতি নামক কুটির শিল্পের আলোয় ঝলমল করতো গ্রামের মোম শিল্প ।কিন্তু সে গ্রামের ছবি আজ অদৃশ্য ।সরকারী সাহায্য প্রাপ্ত সেই সব কারখানা কবেই ঝাঁপ বন্ধ করেছে।

ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে এই শিল্পের মালিক রা আজ দিন গুনছে।অন্য দিকে এই শিল্পের কারিগরদের অবস্থা আরো শোচনীয় ।কর্ম হীন হয়ে অন্য পেশার খোঁজে এদের অনেকেই আজ গ্রাম ছাড়া ।

দীপাবলী এলে মনে পড়ে এই সব মানুষের মুখ।আলোর নীচেটা যেমন অন্ধকার হয় ঠিক সেই রকম অন্ধকার নিয়ে জীবন কাটাচ্ছে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন।

মোমের বেশির ভাগটাই আসতো প্যারাফিন থেকে।মৌমাছির মৌচাকও যোগান দিতো মোম।এছাড়া আরো নানা ভাবে বাজার চলতি মোম ছিল এই শিল্পের কাঁচামাল।প্রথম দিকে হাতে মোমবাতি তৈরি হলেও পরের দিকে ছোট ছোট মেসিন এসেছিল মোমবাতি তৈরির।সে সব সরঞ্জাম এখন বদ্ধ ঘরে তালাচাবির মধ্যে থেকে থেকে অকেজো হয়ে পড়েছে।

ঘরের আলো নিভলে এই বাতি ছিল ভরসা।কিন্তু আজ ইনভাটার ও এমারজেন্সি লাইটের দৌলতে মোমবাতির প্রবেশ নিষেধ হয়েছে।

দীপাবলী আসে দীপাবলী যায় ।কিন্তু মোমবাতি শিল্পের মানুষজন দুঃখের বারমাস্যা বুকে ধরে আজও সেই অন্ধকারে ।

নীল খামে ভরা চিঠির মতোই মোমবাতি আজ স্মৃতির অতলে।দীপাবলী এসে সেই স্মৃতির দরজায় কড়া নাড়ে।এই আর কি।