নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: মহিলাদের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে আরো এক ধাপ এগোল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। সিএডিসি র তত্ত্বাবধানে বিড়ি কলাই থেকে বড়ি প্রস্তুত করে রীতিমতো স্বনির্ভরতার পথ দেখছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিলারাই।
মাত্র মাস…
নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: মহিলাদের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে আরো এক ধাপ এগোল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। সিএডিসি র তত্ত্বাবধানে বিড়ি কলাই থেকে বড়ি প্রস্তুত করে রীতিমতো স্বনির্ভরতার পথ দেখছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিলারাই।
মাত্র মাস তিনেকের ব্যবধান। চন্ডিপুর ব্লকের অন্তর্গত হলদি নদীর চরে ভগবান খালি মৌজায় পরীক্ষামূলক ভাবে মাত্র ১০ কেজি বিড়ি কলাই বুনেছিলেন স্বনির্ভর দলের মহিলারা। আর সেখান থেকেই খুবই স্বল্প সময়ে এই বিড়ি কলাই উৎপাদন হয় প্রায় ২ কুইন্টাল। যা এখন অনেকটাই আশার আলো দেখাচ্ছে মহিলাদের।
কারণ, এমনিতেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার গহনা বড়ি থেকে শুরু করে লোভনীয় স্বাদের জিভে জল আনা টপা বড়ির চাহিদা একেবারে তুঙ্গে। আর এই চাহিদাকেই হাতিয়ার করে নিজেদের উৎপাদিত বিড়ি কলাই থেকে যতটা সম্ভব গহনা বড়ি ও টোপা বড়ি উৎপাদন করে তা বিপণনের সিদ্ধান্ত নেয় সি এ ডিসির কর্তারা।
সেইমতো তমলুকের রণসিনহায় বিপুল পরিমাণ এই বড়িকে প্রসেসিং এর মাধ্যমে জলে ভিজিয়ে পেস্টিং করে তা বড়ি প্রস্তুতের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গহনা বড়ি প্রস্তুতের ক্ষেত্রে তমলুকে চারটি স্বনির্ভর দলের মোট ৪০ জন মহিলা দিবারাত্রি পরিশ্রম করে চলেছেন।
গহনা বড়ির ক্ষেত্রে পস্তুর সঙ্গে অধিক মাত্রায় তিল এবং সুজি ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার উল্টোদিকে টোপা বড়ি তৈরির ক্ষেত্রে বিড়ি কলাই এর সঙ্গে প্রয়োজনমতো মেশানো হচ্ছে আদা, জিরে, কাঁচা লঙ্কা ও লবণ। যা কিনা আগামী দিনে বাজার জুড়ে বেশ সাড়া ফেলতে চলেছে বলে দাবি জেলার প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের।
তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়িয়ে রৌদ্রজ্জল পরিবেশের মধ্যেই এই বড়ি তৈরি এবং তা শুকিয়ে সংরক্ষণ এর মাধ্যমে বিপণনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই নমুনা হিসেবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার স্বনির্ভর দলের এইসকল মহিলার হাতে তৈরি প্রায় ১০০ পিস গহনা বড়ি এবং দু কেজি টোপা বড়ি বিপণনের জন্য কলকাতার মৃত্তিকা ভবনে পাঠানো হয়েছে। এক্ষেত্রে অবশ্য প্রতিপিস গহনা বড়ির দাম ধার্য করা হয়েছে সাড়ে তিন টাকা পর্যন্ত। এবং টোপা বাড়ির ক্ষেত্রে কেজিপ্রতি প্রায় ২২৫ টাকা করে বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আর তাতেই যেন স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে এখন অনেকটাই আশার আলো দেখছেন পূর্ণিমা, কাকলি, বাসন্তী, সুচিত্রা, মধুমিতার মত এই সকল গ্রামীণ মহিলারা। তাদের দাবি, বাজারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এইসকল লোভনীয় সাধের বড়ির চাহিদা থাকলেও এতদিন অবধি প্রশাসনিকভাবে বিপণনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কিন্তু দেরিতে হলেও অবশেষে সিএডিসির তৎপরতায় জেলার এই কুটির শিল্প অনেকটাই গতি আসবে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরাও।
সিএডিসির তমলুক প্রকল্প আধিকারিক উত্তম কুমার লাহা বলেন, এতদিন অবধি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বাড়ির মহিলারা একসাথে বসে বড়ি প্রস্তুত করলেও তা প্রশাসনের উদ্যোগে এ ধরনের বিপণনের উদ্যোগ এই প্রথম। মূলত গ্রামীণ মহিলাদের আরো বেশি করে অর্থনৈতিক শ্রী বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্বনির্ভর করে তুলতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।