নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: "জওয়াদ'এর ক্ষতিপূরণে প্রলেপ দিতে তড়িঘড়ি করে কৃষক বন্ধুর আরো একদফা প্রায় ২৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় সবকটি ব্লকের ১০ লক্ষ ৬৮ হাজার চাষী এই বিপুল…
নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: "জওয়াদ'এর ক্ষতিপূরণে প্রলেপ দিতে তড়িঘড়ি করে কৃষক বন্ধুর আরো একদফা প্রায় ২৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় সবকটি ব্লকের ১০ লক্ষ ৬৮ হাজার চাষী এই বিপুল পরিমান কৃষক বন্ধুর টাকা পেতে চলেছেন।
জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে উত্থিত "জওয়াদ'এর নিম্নচাপের প্রভাবে আবারো চাষ-বাস এর ক্ষেত্রে বেশি খানিকটা ক্ষতির মধ্যে পড়তে হয় কৃষি নির্ভরশীল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দাদের। ইতিমধ্যেই টানা দু'দিনের বৃষ্টির জেরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কৃষি ক্ষেত্রে এই ক্ষয়ক্ষতির একটি প্রাথমিক রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে,গত দুইদিনের জেলার গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ৫৬ দশমিক ২ মিলিমিটার। আর তার জেরেই এই বিপুল ক্ষয় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাই জেলার অধিকাংশ আমন ধান মাঠ থেকে ঘরে তোলা সম্ভব হলেও আমন ধান চাষের ক্ষেত্রে আরও প্রায় ২৯৪৬০ হেক্টর, খেসারি ৫৯৪৫, মসুর ১২৫২ হেক্টর, ছোলা ৪৪৬ হেক্টর, আলু ১০০ হেক্টর, এবং সরষে ২২০৯ হেক্টর এলাকা নিম্নচাপের বৃষ্টির জলে ডুবে ক্ষয়ক্ষতি সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে বৃষ্টির জল এখনো মাঠে দাঁড়িয়ে থাকায় ব্লক ভিত্তিক এই ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত রিপোর্ট এখন অবধি তৈরি করে উঠতে পারিনি জেলা কৃষি দপ্তর। স্বাভাবিকভাবেই একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে নতুন করে এই অকাল বৃষ্টিপাতে চাষবাসের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় চিন্তায় মাথায় হাত পড়ে জেলার চাষীদের। স্বাভাবিকভাবেই জওয়াদ'এর ক্ষতিপূরনের দাবীতে কৃষি ও উদ্যানপালন দপ্তরের মন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়ে দরবার শুরু করে জেলার কৃষকরা। সারা বাংলা ফুলচাষী ও ফুলব্যবসায়ী সমিতি এবং কৃষক সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে অবিলম্বে ওই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবী জানিয়ে রাজ্যের কৃষি ও উদ্যানপালন দপ্তরের মন্ত্রীকে সোমবার ই.মেল মারফত একটি স্মারকলিপি পাঠানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের অন্যতম কৃষক বন্ধু প্রকল্পের বিপুল পরিমাণ টাকা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার খবরে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে। কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৮৮ হাজার কৃষকের মধ্যে এই টাকা বিলিবণ্টন এর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরপরে বাকি টাকা পর্যায়ক্রমে পরবর্তী ক্ষেত্রে কৃষকদের একাউন্টে পৌছে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই ফাঁড়া কাটিয়ে আগামী শীতকালীন রবি শস্য চাষের ক্ষেত্রে এই বিপুল পরিমাণ টাকা অসহায় প্রান্তিক চাষীদের ক্ষেত্রে অনেকটাই অক্সিজেন যোগাবে বলে মনে করছেন জেলার কৃষি আধিকারিকরা। এ বিষয়ে জেলা যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) মৃণালকান্তি বেরা বলেন, জওয়াদ'এর প্রভাবে বিগত দুদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার যে সমস্ত এলাকায় চাষবাসের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে তার একটি প্রাথমিক রিপোর্ট ইতিমধ্যেই রাজ্যে কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে এর মধ্যেও চাষীদের কাছে স্বস্তিদায়ক হিসেবে রাজ্যের বরাদ্দ কৃষক বন্ধুর আরো একদফা প্রায় ২৫৭ কোটি টাকা ধাপে ধাপে সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে।