কবি সুব্রত মিত্র
এই বঙ্গ দ্বেষসুব্রত মিত্র
এই বঙ্গে অনেক বুদ্ধিজীবীদের দেখতে পাই।এই বঙ্গে অনেক মহাকবিদের দেখতে পাই।এই বঙ্গে অনেক সম্প্রীতির বার্তা বাহককে দেখতে পাই।এই বঙ্গে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কথা বলার মত-- অনেক মুখরোচক নেতাদের …
এই বঙ্গ দ্বেষ
সুব্রত মিত্র
এই বঙ্গে অনেক বুদ্ধিজীবীদের দেখতে পাই।
এই বঙ্গে অনেক মহাকবিদের দেখতে পাই।
এই বঙ্গে অনেক সম্প্রীতির বার্তা বাহককে দেখতে পাই।
এই বঙ্গে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কথা বলার মত-- অনেক মুখরোচক নেতাদের দেখতে পাই।
যা দেখেছি সব ভুয়ো বাতাস, সব নিঃস্বতায় পোড়া এক রত্তি ছাই।
এই বঙ্গে অন্যায়ের প্রাতিবাদ না করে শুধু সম্মান হারানোর ভয়ে-----
লেজ গুঁটিয়ে পালানোর মত অনেক মহাপুরুষদের দেখতে পাই।
আমি খুব ছোটখাটো মানুষ অথচ আমি মস্ত বড় ছোটলোক হয়েও------
উনাদের দেখে বড় কষ্ট পাই ,ওনাদের দেখে বড় লজ্জা পাই।
এই বঙ্গে ঝুলিয়ে সম্প্রীতির মালা
শালারা মা-বোনের ইজ্জত বেচে দেয়---
তারাই আবার দেশপ্রেমের উন্মুক্ত চেতনার ভাষণে মঞ্চ আওড়ায়।
এই বঙ্গে ঐ কান্ডারীর দল কেড়ে নেয় ইমোশন; ফাঁটকাবাজের শক্তিমান হয়ে পকেটে ভরে প্রমোশন,
সম্প্রীতির নামে নিজের স্বার্থে এখানে-----
ভেসে যায় আমার মা-বোনের সম্ভ্রম।
এই বঙ্গে ভাইয়ে-ভাইয়ে, বাবা-কাকায় হয়ে যায় কত হানাহানি
এই বঙ্গেই আমি দেখি; সব জেনেশুনেও জনস্বার্থে নেতারা করেনা কানাকানি,
শুধু বলে; "সম্প্রীতি, সম্প্রীতি, সম্প্রীতি"।
আমি যদি বলি ওহে নেতা, কেন হচ্ছে তবে সমাজের এত অবনতি?
স্বাধীনতার এত বছর পরেও এই বঙ্গের হয়েছে কি সংস্কার?
চারিদিকে হিংসার দুর্বার, এই বঙ্গ ঐ বঙ্গ ভেঙে হচ্ছে ছারখার
কি প্রয়োজন হয়েছিল ওদের আজ হিন্দুদের ঘরবাড়ি; মন্দির পোড়াবার?
তোমরা নাকি মুসলমান;
তোমাদেরওতো ধর্মের আছে অনেক মান সম্মান
তবে কেন অন্য ধর্মের ক্ষতি করে নিজের ধর্মকে করো অপমান?
আমি বিগ্রহ চিত্তে মালা ছিড়ে ফেলি সব নেতাদের সব রাজনৈতিক দলের------------------
সব হিংস্রতার; সব নোংরা মানসিকতার।
আর যে সকল কবি সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা------
বুদ্ধির ঢেঁকি মাথায় নিয়ে চুপটি করে তামাশা দেখে--
তোমাদের আক্কেল হওয়া চাই,
তোমাদেরও আছে মা বোন, আছে ভাই।
তবে আজ তোমাদের কলম কোথায়?
হে কবি, হে বুদ্ধির ঢেঁকিওয়ালা বুদ্ধিজীবী .. .... ... ..
তোমাদের মানবিকতাও বিক্রি হয়েছে নাকি ঐ নেতাদের গোপন পকেটে?
নাকি তোমার ধর্মটাও বিক্রি হয়ে গেছে স্বার্থের হাটে?
তুমি জানো কি ?আমাদের জাতিটাও আজ ভেসে যেতে বসেছে সস্তার ঘাটে।
শুনে রাখ, শুনে রাখ, শুনে রাখ সকল বুদ্ধিজীবীগণ.......
সকল জাতির জাতীয়তাবাদ, সকল ধর্মের ধর্ম প্রবাদ
সকল দেশের দেশাত্বতা, সকল মনের মহানুভবতা
সকল মনের কামনা-বাসনায়; স্পর্শতা থাকুক স্বাধীনতায়।
আমাদের দুই বঙ্গের আপন সিন্ধু সেই তো মোদের বঙ্গবন্ধু
তারেই বলি মোরা জাতির জনক,
সেতো আজ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি মোদের অহংকারের মাইলফলক।
সে যে শিখিয়ে গেছেন একই ভাষায় দুই বঙ্গের আলিঙ্গন
শিখিয়েছেন ভালবাসতে; শিখিয়েছেন কাছে আসা আসি
সেই তো মোদের রবীন্দ্রনাথের কন্ঠকে জাতীয় সংগীতে স্থাপন করেছেন--
"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি"।
জাগো; জাগো; জাগো;.. .. ... জাগো মহাবীর
এই বঙ্গমাতার নিঃস্ব খাতায়-------
রাখিবো আবার অটুট ছবি আমার বঙ্গের সংস্কৃতির।
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
: নিভৃত রণন
কবি সুব্রত মিত্র
মুহূর্তেরা এভাবেই ফিরে আসুক বারে বারে
সেদিন কারা যেন-- -- --
কারা যেন ভুলবুঝেছিল আমারে,
আমি আজও আছি দেখো হেসে কলমেরে ভালোবেসে,
দিও নাকো বন্ধু মোরে দূরে ঠেলে--
চাহি যে আরও ভালো বাসিতে--------
হয়তবা তাহারই চিহ্ন রাখিতে-----–-–
করি ঘোরাঘুরি তোমাদেরই আশেপাশে।
কাহারো লাগিয়া আঁকিছিনু বিরহ; আজ তাহা মনে নাই মনে নাই
মোর সাধনা অকারণে বেদনায় আজ কাঁদে নাই কাঁদে নাই,
বাতাসের দিবালোক চরণ ধরিয়াছে আকাশের
উদার আকাশ দেখে প্রেমের তরীখানি মুক্তির প্রকাশের,
চিরস্মরণীয় এই সন্ধিক্ষণ যারা করেছিল জ্ঞাপন
নাহি ভুলিবো তাহাদের কভু; তারা যে মোর বড় প্রিয়; বড় আপন।
সুখে ভরা পৃথিবীতে দুঃখ তো আসবেই
ভরা জোয়ারের সুন্দর যৌবনে কভু কভু ভাঙ্গা তরী ভাসবেই
আমি সত্য; তুমি সত্য;সত্যের তথ্য কাঁধে নিয়ে ছুটে চলে ইতিহাস
আমি তুমি; তুমি আমি; কলহ যাপনের সেই নবকল্লোল গিয়েছিল বুঝি ডুবে অতলে---
ব্যথায় নৈশ যাপন করেছিল মোদের সহবাস।
তন্দ্রার সাক্ষীতে চন্দ্রের ভূমিকাও জোসনাকে বেঁধেছিলো
কৃষ্ণপক্ষের গাঢ় অন্ধকার ভেদ করে তবু সেদিন পূর্ণিমার চাঁদ আকস্মিক জেগেছিল
ভুলব না সে রাতের তারাদের জাগরণ
ভুলবোনা; ভুলবোনা তবু তোমার প্রেমের মহা রণন।
🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻
শূন্যপথে
সুব্রত মিত্র
পথ চলি একা একা
কোথাও দেখি সুন্দর আলোকিত উজ্জ্বল মরীচিকা;
মাঝে মাঝে দেখি খানাখন্দ; দুর্গম প্রস্তর
মাঝে মাঝে দেখি তৈলাক্ত মসৃণ সড়ক
মাঝে মাঝে দেখি অপমানের সুন্দর মোড়ক।
আমি বিনোদন বিমুখ অসুখ
আমি যেন সত্যের দর্শক
এখন এই নতুন পৃথিবীর গায়ে নতুন আকাশ আঁকার স্বপ্ন দেখা বারণ,
নিদারুণ প্রকাশের বাতাসে দেখি উলঙ্গ মহারণ।
এখন আমার বিদ্রুপ আঁকা ছবি নক্ষত্রের প্রত্যায়িত বলয় দেখে।
মহা সঞ্চারের অষ্টধাতুতে মোড়া নবজাগরণের আছি অপেক্ষায়,
পৃথিবীর শেষ প্রান্তে পড়ে থাকা মরীচিকার সাথে দেখা করার আছি অপেক্ষায়।
মেঘ-গ্রহের অর্থনীতি;চাঁড়াল মেঘের দুর্নীতি;
দেয়নি এনে সভ্য মনোবৃত্তি
উদীয়মান পথিকের বেশ ধরে স্বতন্ত্র মরীচিকা দাঁড়ায়ে,
রাক্ষসে দাবানল রয়েছে হাত বাড়ায়ে।
ছুটে ছুটে যাবে তারা; পাবেনা যে.... কোনো কিছু
আমিত্বের বহু বাদে বসে আছে তারা সব; করে মাথা উঁচু।
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
বিদায় --২০২১
সুব্রত মিত্র
দেখেছি কত ভাঙ্গন;
দেখেছি কত জোড়া না লাগা সম্পর্কের বাঁধন
দেখেছি কত বিচ্ছেদ;
দেখেছি কত অর্থহীন অনুচ্ছেদ।
দেখেছি কত মেকি কান্নায় বোনা ব্যথার মহড়া
দেখেছি কত হারিয়ে যেতে স্বপ্নময় পথের দিশা অতি সহসা,
দেখেছি কত ভুল বোঝাবুঝির সাগরের ঢেউ
তারই মাঝে আছি আমরা একই সাথে----------
মোদের বিচ্ছেদ করিতে পারে নাই কেউ----।
বিংশ শতাব্দীর পরবর্তী দুটি দশকের-------
শেষ দিনেও আমরা দুজন একসাথে আছি;
আজও বলিনাই মোরা কভু কেউ কাউকে ভালোবাসি,
তবুও কিছুতো আছে মোদেরই মাঝে কোন গুপ্ত অনুভূতি
হয়তো তারই টানে -----------
যুগ হতে যুগান্তর একই সাথে বেঁচে আছি।
ভাঙবার নয় বুঝি এই বাঁধন
ভাঙবার নয় বুঝি এই অনু কম্পন,
আমি পরলোক হতে আসিব ছুটি এই ইহলোকে বারংবার
আমি পুনরায় একই সাথে পথ চলিবার-----------
করিয়া গেলাম আবার সেই অঙ্গীকার।
ভালো থেকো সকল বন্ধুবর
তোমরাও বাঁধো এমনই ঘর;
পাওয়া না পাওয়ার কথা ভুলে যাও সব
যাও ভুলে কে আপন কেইবা পর।
সম্পর্কের সাধনা করে যাও; করে যাও জীবন ভর
সম্পর্ক যে যায়না হাতে গড়া-------
সম্পর্ক হয় নির্মাণ দিয়ে সময়ের উপর ভর।
🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️🏵️
আমি এক পরাস্ত কবি
সুব্রত মিত্র
কবি ছোটে খিদে পেটে
এক বিস্ময়;এক লহময় গতিপথে কারা যায় হেটে
চেতনার ধ্বংসস্তূপ ক্রমশ হেসে ওঠে
মেতে ওঠে অবলীলায় জৌলুস বাসনা
অধরা নীতির কাছে পরাস্ত হয়ে যায় সব নীতিবান চরিত্র।
বক্ষাঘাত বিনিদ্র দেবতার গান শোনায়
মরে যাওয়া প্রাণ অকাল প্রার্থনার সঞ্চার দরবেশ সাজায়
অঘোষিত মনোমালিন্য তোমাকে জাগ্রত করবে একদিন
আমি নিশ্চিহ্ন পদছাপ রেখে গেলাম এই গতিময় জগৎপথে
বাসনাহীন তারারাও জেগে আছে নিশিদিন
এক আপন বৃত্তের বাইরে ঘূর্ণাবর্ত প্রতি মুহূর্ত
বৃত্তের এপারে এক সাজানো সংসার
জীবন যেন এক সাজানো পাতাবাহার।
অকস্মাৎ আগন্তুক কুয়াশারা ঢেকে ফেলে সব ইতিহাস
সব ইতিহাস আমাকে সরিয়ে নিয়ে যায় জীবন হতে বহুদূর,
মাঠের গায়ে একটা কবির ছবি আঁকা
গাছেদের ছালে কবিদের কথা বলা
তবু কেন নিশ্চিহ্ন আবহেও একজন নিঃস্ব কবির হেটে চলা?
এখনো মেঘের আকাশে উঁকি দেয় পুলকিত সূর্য
এখনো চলন্ত ট্রেনের গায়ে ঘুমন্ত পৃথিবীটা অনবরত ঘুরন্ত।
আমি নির্বাক কবি'
আমি পরাস্ত; আমি ক্ষান্ত;
আমি ক্লান্ত; আমি আজ শান্ত।