সাধ্যমতো লেখা চেষ্টা করেছি, পড়ার অনুরোধ রাখলাম ধৃষ্টতা মার্জনীয় 🙏🙏
পাঞ্চালীসুমিতা সরকার ঘোষ (ম্যাহেক)।০৮.১.২০২২
যাজ্ঞসেনী ভালবেসেছিল অর্জুনকে,বোঝেনি আরও এক প্রেমিকের ব্যথা।
নীরবে ভালবেসেছিল কর্ণ,পাঞ্চালীকে হয়নি বলা সে কথা।
তাই বীরশ…
সাধ্যমতো লেখা চেষ্টা করেছি, পড়ার অনুরোধ রাখলাম ধৃষ্টতা মার্জনীয় 🙏🙏
পাঞ্চালী
সুমিতা সরকার ঘোষ (ম্যাহেক)।
০৮.১.২০২২
যাজ্ঞসেনী ভালবেসেছিল অর্জুনকে,
বোঝেনি আরও এক প্রেমিকের ব্যথা।
নীরবে ভালবেসেছিল কর্ণ,
পাঞ্চালীকে হয়নি বলা সে কথা।
তাই বীরশ্রেষ্ঠ হয়েও ইচ্ছেতে
পরাজিত হয়েছিল অর্জুনের কাছে,
ভালবাসার বলি নীরবে দিল,
কি জানি?? জানাজানি যদি হয় পাছে।
এইভাবে কি কর্ণেরা চিরদিন ভালবেসে যাবে?
পাঞ্চালীরা শুধুই অর্জুনের,
কখনও কি কর্ণদের কথা ভাবে??
পর্ব- (২)
পাঞ্চালীর বাসর শয্যা
অস্ত্রাগারের আলো আধারিতে শয্যা রচনা যার,
যুধিষ্ঠির আর পাঞ্চালীর যোগসূত্র একাকার।
পঞ্চ স্বামীতে এক একটি বছর মিলন নির্দিষ্ট সময়,
বাকী চারের বনবাস হবে, সাক্ষাৎ যদি হয়।
দৃঢ়চেতা, প্রত্যয়ী, নারী, অন্তর-চোরা-কুঠুরীতে রেখেছিলেন ভীতি,
কোন সাধারন তিনি নন, অসাধারনত্বের সিঁড়িতে পা রাখা এক দেবী।
যিনি সমতা বলতে বুঝতেন সৃষ্টি, প্রতিপালন, লয়, স্থিতি।
সেজেছে লোহিত বস্ত্রে কৃষ্ণা,
সুরভিত চন্দন, কুমকুম দানে আল্পনা।
নীলাচূর্ণে আয়ত দীঘল নেত্র,
বেনী বন্ধনে গাঁথা, আধ ফোটা বেলী, বিন্দু বিন্দু মুক্তদানা।
স্বর্ণ চাঁপার অলঙ্কারে বিছিয়ে আছে শরীরশয্যা,
অজস্র প্রশ্নবানে ঢেউয়ের মত সাজিয়েছে তার লজ্জা।
উথাল-পাথাল ঢেউয়ে বিচরণ,
কখনও ডুবে আর ভেসে থাকা,
ব্যাসদেব বরে প্রতি সঙ্গম শেষে কুমারীত্ব পুনরায় ধরে রাখা।
কেন এই বর?? কি প্রয়োজন?? অভিশাপ না আশীর্বাদ??
বিচিত্র খেলায় কাপে যে হৃদয়, মনে শান্তি পাবার বড়ো সাধ।
সাদা ফেনিল শয্যায় অঞ্জন আকা কৃষ্ণ-নেত্র-নারী,
আঁধারের এক বিচিত্র ছায়া, যেন অলক্ষ্যে বলে, আমি সব ধূলিস্যাৎ করতে পারি।
দিয়েছিলেন তো পার্থর গলে মালা,
তবে যুধিষ্ঠির কেন??
এরপর একে একে দ্বিতীয়, তারপর ক্রমে তৃতীয়তে, ঠাঁই, মৃত্যুসম যেন।
অভিমান, রাগ, দুঃখ, অনুভবে_
ঠিক তখনি বলিষ্ঠ হস্ত আলিঙ্গন,
ভাবনা সমুদয় সম্বিত ফেরায়,
সামনে যুধিষ্ঠির মৃদু হেসে তখন।
দু হাতে টেনে নিল তাকে,
বাহু মাঝে শুধুই কৃষ্ণা,
অন্তর জুড়ে শুধুই প্রশ্ন-চিহ্ন,
রেখাপাতে বস্ত্র- সম্পর্কিত ওড়না।
তীব্র, নির্দয়, ভয়ানক অগ্নিতে দগ্ধ হলো পদতল,
সহ্যের আর এক নাম নারী, শূন্য থেকে করতে হবে পূর্ণ শেখাল আমায়,
হিসেবী বাস্তবের রেখা অসীম, গভীর, অতল।
ধূলো মাঝে গেলাম পড়ে, অসহনীয় যন্ত্রণা,
কোলে তুলে নিলে মুহূর্তে তুমি,
যেন আঁজলা ভরা জলকণা।
তোমার বুকে মাথা রাখতে দেখি গভীর ক্ষত চিহ্ন,
পরিচিত হলাম অর্জুন নামে, অন্তর হলো ছিন্নভিন্ন।
একটু একটু করে মিশে গেলাম তোমা-মাঝে,
ছিলনা দুঃখ, ভয়, যন্ত্রণা, সীমারেখা,
খুশি ভীষণ খুশি, আমি তখন
কখন যেন ভাগ্যের নির্দিষ্ট পরিহাসে বরণের আশ্রয় ছেড়ে হলাম পাঁচ ভাগ নিরূপণ।
সম্বিৎ ফেরে যখন,
পঞ্চস্বামী আর আশ্চর্য অনিশ্চিত জীবনের উপঢৌকন।
বরমাল্যের এমন উপহাস দেখল সারা জগৎ, রইল চুপ, বিদীর্ণ আমার মন।
যন্ত্রণায় নীলকন্ঠ, বীরশ্রেষ্ঠ তুমি দিলে পরিচয়,
কাল যুধিষ্ঠিরের সাথে আমাকে দেখার পরেই কি অস্থির তোমার হৃদয়??
তাই কি সত্য রক্ষার্থে যেতে চাও অরণ্যে? বন মাঝে?
সম্পর্কের এই গোলোক জ্বালে রেখে যেওনা আমায়, এত কঠিন শাস্তি কি তোমায় সাজে??
দু বছর মানে এক যুগসম, অনন্ত যাত্রা, কিসের দন্ড?? কি দোষ আমার তায়??
লিখে চলেছেন মহীয়সী, -
দাসীর কাছে খবর পেলেন চলে গেছেন অর্জুন,
যুধিষ্ঠির আজ রাত্রে দ্রৌপদীর প্রতীক্ষায়।
স্তব্ধ কৃষ্ণা, চিঠিতে ঝরে, বড়ো বড়ো অশ্রুবিন্দু,
ধুয়ে গেল শব্দ, গলে গেল সব,
যেন ডুবে যাচ্ছে নৌকো, অতলতায় বিশাল সিন্ধু।
আকাশপানে চেয়ে পাঞ্চালী,
গোধূলি পড়েছে ঢলে।
দাসীরা সাজায়, বলে প্রস্তুত হও, সময় এগিয়ে চলে।
মহাভারত অনুযায়ী পঞ্চপাণ্ডব স্বামী নয়, দেবর, ভাসুর -
কি বিচিত্র সম্পর্কের মায়াজাল?
এটা কোন চিঠি নয়,
মানবীয় মনের কল্পনা প্রসূত ইচ্ছে।
মননে আমিঃ (দ্রৌপদী)
কৃষ্ণাঃ কৃষ্ণ বর্ণা,
মহাভারতীঃ মহাভারতের এক চরিত্র,
যাজ্ঞসেনীঃ যজ্ঞের আগুন থেকে উৎপন্ন নারী,
সৈরিন্ধ্রীঃ অজ্ঞাতবাসের পরিচয়,
দ্রৌপদীঃ দ্রুপদ রাজার কন্যা,
পাঞ্চালীঃ পাঞ্চাল রাজ্যের কন্যা
দ্রৌপদীর পাঁচ স্বামী আবার পুত্রের সংখ্যাও পাঁচ,
মহাভারতে দ্রৌপদী অন্যতমা। তাঁর পাঁচজন পুত্র তাদের নাম যথাক্রমে-
১. প্রতিবিন্ধ্য
২. সুতসোম
৩. শ্রুতকর্মা
৪. শতানীক
৫. শ্রুতসেন।
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের শেষে গুরু দ্রোণপুত্র অশ্বত্থামা কর্তৃক ঘুমন্ত অবস্থায় নির্মম ভাবে তারা নিহত হন।