Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বাবার দায়িত্ব নিতে অপারগ সন্তানরা

শিশু অবস্থা থেকে বাবা-মা অনেক কষ্ট করে সন্তানদের বড় করে। আজ বৃদ্ধ বয়সে সন্তানরা আদালতের কাছে আবেদন করছে পিতার খাবারের যোগান তারা দিতে পারবে না। সমাজের একি পরিস্থিতি! আজ বিচারপতির আসনে বসে এটাও দেখতে হচ্ছে বৃদ্ধ বাবা-মাকে খাবারে…

 


শিশু অবস্থা থেকে বাবা-মা অনেক কষ্ট করে সন্তানদের বড় করে। আজ বৃদ্ধ বয়সে সন্তানরা আদালতের কাছে আবেদন করছে পিতার খাবারের যোগান তারা দিতে পারবে না। সমাজের একি পরিস্থিতি! আজ বিচারপতির আসনে বসে এটাও দেখতে হচ্ছে বৃদ্ধ বাবা-মাকে খাবারের জন্য সন্তানদের কাছে ভিক্ষা করতে হবে। মন্তব্য বিচারপতি রাজশেখর মান্থার।


তমলুকের বাসিন্দা তিনকড়ি মিত্র। বর্তমান বয়স ৮৪ বছর। তিনকড়িবাবুর দুই পুত্র ও দুই কন্যা। দুই পুত্রের মধ্যে এক পুত্রের মৃত্যু হয়েছে অপর পুত্র নিখোঁজ। ২ কন্যা বিবাহিত। বিবাহের পর থেকে দুই কন্যা শিপ্রা সাউ ও শম্পা দত্ত তিনকড়িবাবুর বাড়িতে বসবাস করেন। তিনকড়িবাবু স্ত্রীও মারা গেছেন ।স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই তিনি কন্যাদের সঙ্গে থাকতেন।


২০১৮ সালে তিনকড়িবাবু দুই কন্যার নামে বাড়িটি গিফট ডিড করে দেন।

তিনকড়িবাবুর আইনজীবী সুমিত গাঙ্গুলি আদালতে জানান, তিনকড়িবাবুর মেয়েরা জোর করে তার কাছ থেকে গিফট ডিড করিয়ে নিয়েছে। এই বিষয়ে তিনি তমলুক আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন। সেই মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে।


আইনজীবী গাঙ্গুলি হাইকোর্টে সওয়াল পর্বে আরও জানান, গিফট ডিড করার পর  থেকে দুই কন্যা তিনকড়িবাবুর ওপরে অত্যাচার শুরু করে। ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি দুই কন্যা তিনকড়িবাবু কে বাড়ি থেকে বার করে দেন। ৮৪ বছরের তিনকড়িবাবু কে আশ্রয় দেন তার বন্ধু দিলীপ বারিক। ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার এ বন্ধুর বাড়িতেই থাকতে শুরু করেন তিনকড়িবাবু।

নিজের বাড়িতে ফিরতে চেয়ে তমলুক থানায় তিনি আবেদন জানান। রাজ্যের গর্মেন্ট প্লিডার অনির্বাণ রায় আদালতে জানান, পুলিশ বারংবার প্রচেষ্টা করেও বিফল হয়েছে।

বিচারপতি রাজ শেখর মান্থা দুই কন্যার আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, আদালতের কর্তব্য একজন প্রবীণ নাগরিক তার বাসস্থানে ফিরিয়ে দেওয়া। পাশাপাশি আদালতের কর্তব্য যাতে ওই প্রবীণ নাগরিক তার শেষ বয়সে শান্তিপূর্ণ ভাবে কাটাতে পারে।

আদালতের নির্দেশ অবিলম্বে তিনকড়িবাবু কে তার তমলুকের বাসস্থানে ফিরিয়ে দিতে হবে। এই বিষয়ে তমলুক থানার পুলিশ আদালতের নির্দেশ কে বাস্তবায়িত করবে।

আদালতের নির্দেশের পরই *দুই কন্যার আইনজীবী আদালতে  বলেন, তিনকড়িবাবু তার বাড়িতে ফিরলে তার দৈনন্দিন খাবারের জোগার তাকে নিজেকেই করে নিতে হবে। তারা কোন রকম ভাবে তার বাবাকে খাবারের যোগান দিতে পারবেন না।* পাশাপাশি আইনজীবী আরও দাবি করেন তিনকড়িবাবু ছাড়া তার ওই বন্ধু ও বন্ধু পরিবারের কেউ ওই বাড়িতে প্রবেশ করতে পারবেন না।


আইনজীবী সওয়ালে হতচকিত হয়ে পড়ে কলকাতা হাইকোর্টের ১৩ নম্বর এজলাসে উপস্থিত সকলে। *বিচারপতি মান্থা আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি কি বলছেন! একজন বাবাকে তার সন্তানরা খেতে দেবে না। যে বাবা তিল তিল করে এই সন্তানদের বড় করে তুলেছে। সমাজের একি হাল হলো! বিচারপতির আসনে বসে আজ এটাও শুনতে হলো যে একজন বাবাকে খাবারের জন্য সন্তানদের কাছে ভিক্ষা করতে হবে।* আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বিচারপতিদের মন্তব্য বাবাকে ভালো করে রাখুন দেখবেন বাবার সঙ্গে সঠিক করলে আপনাদের ভালো হবে। তমলুক থানাকে বিচারপতির নির্দেশে ওই বাড়িতে যাতে তিনকড়িবাবু শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করতে পারেন সে ব্যাপারে অবশ্যই পুলিশ লক্ষ্য রাখবে।