Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে পরিবেশ গবেষণা ও ইকো অডিটিং নিয়ে বিশেষ কর্মশালা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর.......পরিবেশ গবেষণা সংস্থা "টিয়ার" এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো পরিবেশ গবেষণা বিষয়ক বিশেষ এক দিবসীয় কর্মশালা। রবিবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বি এন শাসমল সভাগৃহে পরিবেশ গবেষণা এবং পরিবেশের…



নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর.......পরিবেশ গবেষণা সংস্থা "টিয়ার" এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো পরিবেশ গবেষণা বিষয়ক বিশেষ এক দিবসীয় কর্মশালা। রবিবার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বি এন শাসমল সভাগৃহে পরিবেশ গবেষণা এবং পরিবেশের উপাদান গুলির সঠিক ব্যবহার, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার নীতি নির্ধারণ ও তার প্রয়োগ ইত্যাদি বিষয়ের ওপর একটি বিশেষ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো। কর্মশার শিরোনাম ছিল 'পরিবেশের গবেষণা এবং ইকো অডিটিং'। কর্মশালার আয়োজন করেছিল স্বনামধন্য এবং প্রতিষ্ঠিত পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ট্রপিক্যাল ইনস্টিটিউট অফ আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ ( মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম)। এদিনের কর্মশালায় প্রায় চল্লিশ জন শিক্ষক,শিক্ষিকা, অধ্যাপক ,অধ্যাপিকা ,গবেষক-গবেষিকা এবং ছাত্র-ছাত্রী যোগ দেন। বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে ও চারাগাছে জল দিয়ে কর্মশালার সূচনা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ডিসটেন্স ওপেন এডুকেশনের অধিকর্তা অধ্যাপক ড. প্রকাশ চন্দ্র ধারা।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কনসালট্রেইন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসের মুখ্য পরিবেশ অডিটর সঞ্চিতা ভট্টাচার্য , বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপিকা নীলাঞ্জনা দাস চ্যাটার্জী, অধ্যাপিকা ড.জয়া দে, আয়োজক সংস্থার সভাপতি ড. বিনয় কুমার চন্দ এবং সম্পাদক অধ্যাপক ড, প্রণব সাহু। কর্মশালায় শেষে সবুজায়নের বার্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের পিছনে আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে পাঁচটি অমলতাস গাছের চারা ও পনেরটি পলাশ গাছের চারা লাগানো হয়। এদিনের কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান গুলি সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা- পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণার মাধ্যমে তাদের ব্যবহার, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার নীতি নির্ধারণ করা। এই বিষয়ে মুখ্য পরিবেশ অডিটর অধ্যাপিকা সঞ্চিতা ভট্টাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং স্কুল অর্থাৎ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই পরিবেশের উপাদান গুলির সঠিকভাবে ব্যবহার, ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণের নীতি নির্ধারণ ইত্যাদি বিষয়গুলো লিপিবদ্ধ আকারে রাখা দরকার। তিনি ইকো অডিটিংয়ের পদ্ধতি ও উপায়গুলি বিশেষ ভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ , বাহ্যিক এবং প্রশাসনিক তিনটি স্তরে পরিবেশের উপাদান গুলির সঠিক অডিটের প্রয়োজন তবেই পরিবেশের গুণগত মান গুলির সঠিক সূচক পাওয়া যাবে। প্রধান অতিথি অধ্যাপক প্রকাশচন্দ্র ধারা বলেন , এদিনের এই কর্মশালা মূলত পরিবেশ ব্যবস্থাপনার নীতি নির্ধারণ বিষয়ক এবং গবেষণা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে খুবই প্রাসঙ্গিক বিষয়। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সমাজ ও ছাত্র-ছাত্রীরা এই সঠিক পদ্ধতি ও উপায় গুলি কাজে লাগাতে পারবে। 


বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ড. নীলাঞ্জনা দাস চ্যাটার্জী বলেন বনভূমির ব্যবহার, বনজ সম্পদ সংগ্রহ এবং জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয় গুলি আদিম উপজাতিবর্গ যে রূপে ও প্রথাগত ভাবে করে থাকেন আমাদেরও সেই পদ্ধতি গুলি অনেক খানি অনুসরণ করা প্রয়োজন। মূলত প্রাকৃতিক সম্পদকে প্রকৃতির সামঞ্জস্য ও নিয়মে ব্যবহার করা বিশেষ প্রয়োজন। কাপগাড়ি সেবাভারতী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা সংস্থার সম্পাদক প্রণব সাহু, বলেন ভারতবর্ষের পরিবেশ গুণগত সূচক মানের দিক থেকে বিশ্বের মাঝে অনেকখানি পিছিয়ে। তার মূল কারণ বায়ু দূষণ অর্থাৎ বায়ুর গুণগতমান হ্রাস। বায়ুর গুণগত মান এতটাই নিম্নমানের হয়ে গেছে যার ফলে বিশুদ্ধ বাতাস ও মুক্ত বাতাসের যথেষ্ট অভাব। তার কারণ হিসেবে তিনি গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি শিল্পাঞ্চলের জ্বালানি এব গৃহস্থালির জ্বালানির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন,কিছু অসচেতন মানুষ খড়, নাড়া,জঙ্গললের পাতা , বাজি ও নানান বস্তু পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন দূষিত গ্যাস বায়ুর গুণগত মানকে কমিয়ে দিচ্ছে। অধ্যাপক সাহু আরও জানান মেদিনীপুর শহর এবং ঝাড়গ্রাম শহরে ঘিঞ্জি ও বদ্ধ বাজার এলাকায় দৈনন্দিন মানুষের আনাগোনা এবং দিবাকালীন জনসংখ্যার বৃদ্ধির কারণে মানুষের নিঃশ্বাসের উৎপন্ন কার্বন ডাই অক্সাইড( হিউম্যান রেস্পিরেশন গ্রীনহাউস কার্বন-ডাই-অক্সাইড) যে পরিমাণ জমা হয় এবং বৃদ্ধি পায় তাতে দিনের শেষে কার্বন-ডাই-অক্সাইড লেভেল ৪৬০ পিপিএম এর ওপরে ওঠে এবং অক্সিজেন লেভেল ২০ শতাংশের নিচে নেমে যায় ,সেই কারণে আমাদের বমি ভাব, মাথা ধরা শ্বাসকষ্ট এবং কিছুটা শারীরিক দুর্বলতা ও স্বাস্থ্য হানি বিশেষভাবে দেখা যায় । তাই অধ্যাপক সাহু বলেন ঘিঞ্জি, বদ্ধ এবং অভ্যন্তরীণ জায়গাগুলিতে বেশি পরিমাণে ইনডোর প্লান্টস এবং যতটা সম্ভব ছাদ বাগান, দেয়ালে বাগান ইত্যাদি গড়ে তোলা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে জলের জলের পুনর্ব্যবহার পদ্ধতি আগামী দিনে আমাদের প্রত্যেকের বাড়িতে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে তুলতে হবে। শেষে সংস্থার সভাপতি ড.বিনয় চন্দ বলেন,পরিবেশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার দিক গুলি সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং আগামী দিনে ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মানের আলোচনা সভার আয়োজন করা প্রয়োজন। সংস্থার পক্ষ থেকে এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ড. মৌসম মজুমদার,শিক্ষক ড. শুভেন্দু ঘোষ, শিক্ষিকা শাশ্বতী ঘোষ,কোষাধক্ষ্য শিক্ষক নরসিংহ দাস , অধ্যাপক শিক্ষক ড.চন্দন করন, সুপ্রকাশ দাস, শিক্ষক মনিকাঞ্চন রায়, শরৎ চ্যাটার্জী ও সঞ্জীব মাহাতোসহ অন্যান্যরা।