Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

সুখ সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় শব্দ। কখনো ধরা দেয়, কখনো ধরা দেয় না। অনেকটা রবি ঠাকুরের গানের লাইনের মত, সে কেবল পালিয়ে বেড়ায়, দৃষ্টি এড়ায়, ডাক দিয়ে যায় ইঙ্গিতে..... সত্যিই সুখ যে কি, এটা বুঝতে বুঝতেই জীবন চলে গেলো। সুখকে নিয়…

 


সুখ সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় শব্দ। কখনো ধরা দেয়, কখনো ধরা দেয় না। অনেকটা রবি ঠাকুরের গানের লাইনের মত, সে কেবল পালিয়ে বেড়ায়, দৃষ্টি এড়ায়, ডাক দিয়ে যায় ইঙ্গিতে..... সত্যিই সুখ যে কি, এটা বুঝতে বুঝতেই জীবন চলে গেলো। সুখকে নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে, এখনো হচ্ছে, সে বড় জটিল সব তত্ত্ব, পড়েই আমার মাথা ঘুরে গেছে, অত বুঝে যদি সুখকে বুঝতে হয়, তাহলে আমার আর সুখ বুঝে কাজ নেই। তবে আমার এই মোটা মাথায় যেটুকু বুঝেছি সেটুকুই আজ বলবার চেষ্টা করবো।

আমার কাছে মনে হয়েছে, সুখ কোনও অবস্থা নয়, বরং এক মানবিক অনুভুতি। আমার কাছে যাতে সুখ, সেই সুখ আবার আরেকজনের কাছে কোনো মানে রাখে না। আসলে সুখ হলো, মনের এমন এক অনুভূতি যা ভালবাসা, তৃপ্তি, আনন্দ অথবা উচ্ছাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সুখ একটি ক্ষণিকের অভিজ্ঞতা যা স্বতঃস্ফূর্তভাবে উত্থিত হয় এবং ক্ষণস্থায়ী হয়।প্রতিটি মানুষ সুখের প্রত্যাশী। পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যে সুখী হতে চায় না। কিন্তু সবাই কি সুখী হতে পারে? এই সুখ শব্দটা নিয়ে কত গান, কত কবিতা লেখা হয়েছে। মান্না দে গেয়েছিলেন "সবাই তো সুখী হতে চায়, তবু কেউ সুখী হয়, কেউ হয়না।" সত্যি পৃথিবীতে এমন কেউ নেই যারা জীবনে সুখী হতে চায় না। কিন্তু কেউ কি জানে সুখ কোথায় গেলে পাওয়া যাবে? বা কি পেলে আমরা সুখী হব? কে প্রকৃত সুখী? সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে যেমন গুপী গাইন বাঘা বাইন কে ভূতের রাজা তিনটি বর দিয়েছিলেন, আজ যদি ভূতের রাজা আমাদের কাউকে এমন তিনতে বর দিতে আসে আমরা কি সত্যি বলতে পারি আমরা কি তিনটে বরে সারাজীবন সুখী থাকব? আমার তো মনে হয় তিনটে বরে আমরা সারাজীবন সুখী হতে পারি না। আর যদিও তিনটে বর চেয়ে ফেলি কিছুক্ষণ পর মনে হবে এটার বদলে ওটা চাইলে ঢের ভাল হত।

আসলে সুখের সংজ্ঞা বিভিন্ন লোকের কাছে ভিন্ন। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, যাতে একজন সুখী, অন্যজন তাতে অসুখী। সুখের ব্যাপারটি একই সঙ্গে মানসিক ও পারিপার্শ্বিক। আসলে অনেকে মনে করেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান নিশ্চিত হলেই মানুষ সুখী হয়। তার সাথে যদি আবার সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয় তবে সোনায় সোহাগা। কিন্তু আসলে কি তাই? মানুষের আশা-আকাঙ্খার শেষ নেই। আজ কেউ যা পেয়ে নিজেকে সুখী ভাবছে কাল হয়ত তা না ও হতে পারে, কাল হয়ত আমাদের আরো অন্য কিছু চাই। আমরা কেউ অল্পে সন্তুষ্ট থাকি না। পৃথিবীতে এই অল্পে সন্তুষ্টি থাকা মানুষের সংখ্যা খুবই কম। অধিকাংশ মানুষই অসুখী ও অসন্তুষ্ট।

একবার বাদশা আকবর নাকি বীরবলকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘আচ্ছা বীরবল, বলো তো জগতে প্রকৃত সুখী কে? বীরবল একটু উত্তর দিলেন, ‘এ জগতে কোন মানুষই সুখী নয়। একমাত্র মানুষ সুখী হয় মৃত্যুর পরে, তার আগে নয়।’ না আমি বীরবলের মতের সঙ্গে সহমত নই, তবু বীরবলের উক্তিটা দিলাম, কারণ জ্ঞানী গুণী মানুষরা কি ভাবেন, সেটাও আমাদের জানা উচিত। তবে আমরা সবাই যে ভাবি, আমাদের চারপাশে যে মানুষ গুলো আছে ওরা হয়ত আমার থেকে অনেক সুখী, কিন্তু কে জানে কার মনের খবর। আবার কেউ কেউ আমরা ভাবি, হয়ত আমাদের কপালেই সুখ নেই। তাই হয়ত শত চেষ্টা করে ও সুখী হতে পারি না।

যেমন আরেক জ্ঞানী গুণী ব্যক্তি, হুমায়ুন আহমেদের কথায়, একটা মানুষ সুখী না দুঃখী সেটা চট করে বলে ফেলা যায়। উনি বলেছেন, ভালোমতো তাকে লক্ষ করে দেখতে, যদি দেখা যায় সে বেশি কথা বলছে তাহলেই বুঝে নেবেন, সে সুখী মানুষ। আর যদি দেখেন কথাবার্তা কম বলছে তাহলেই বুঝে নেবেন লোকটার মনের মধ্যে অনেক দুঃখ। এরপরেই উনি মোক্ষম যুক্তি দিয়েছেন। বলেছেন, বলুন দেখি সবচেয়ে বেশি কথা বলে কারা? একমাত্র পাগলরা। সারাক্ষণই এরা কথা বলে। আশেপাশে মানুষ থাকলে কথা বলে। আশেপাশে কেউ না থাকলে নিজের মনেই বিড়বিড় করে। তাহলে এই দুনিয়ায় সবচেয়ে সুখী মানুষ কারা? একদম ঠিক ধরেছেন, একমাত্র পাগলরাই সুখী। অতএব একবার কষ্ট করে পাগল হয়ে যেতে পারলেই খুবই মজা। আর কোনো দুঃখ নাই। শুধুই সুখ। এইসব ভেবেই পাগল হয়ে যেতে ইচ্ছে করে। হে হে হে হে। তবে হুমায়ুন আহমেদের যুক্তিকে যদি মান্যতা দিতে হয়, অর্থাৎ বেশি কথা বলাই সুখের লক্ষণ, তাহলে আমি বলবো মহিলারাও তাহলে সুখী। কেন? তাহলে এবার আমার গুরু, তারাপদ রায়ের স্মরণ নিই। তারাপদ রায়ের একটি অভিজ্ঞতা বললেই বোঝা যাবে যে মহিলারাও সুখী মানুষ কারণ তারা প্রচুর কথা বলেন। 

তারাপদ রায় এক ছুটির দিনে বন্ধুর বাড়িতে গেছেন আড্ডা দিতে। গিয়ে দেখেন বন্ধু একমনে খবরের কাগজ পড়ে যাচ্ছে আর বন্ধুপত্নী টেলিফোনে কারো সঙ্গে কথা বলছেন। তারাপদ রায় যাবার কত আগে থেকে বন্ধুপত্নী টেলিফোনে কথা বলছিলেন সেটা তিনি জানেন না, তবে তারাপদ যাবার প্রায় চল্লিশ মিনিট পরেও বন্ধুপত্নী কথা চালিয়ে যাচ্ছেন এটা উনি স্বচক্ষে দেখেছেন। চল্লিশ মিনিট হবার পরে তারাপদ শুনলেন বন্ধুপত্নী টেলিফোনের ওপাশে থাকা ব্যক্তিকে বলছেন, এক সেকেন্ড দাঁড়া! এতক্ষণ কথা বলার পর ডান কানটা ব্যথা করছে আমি ফোনটা ডান কান থেকে বাঁ কানে নিই। আর ফোনটা বাঁ কানে নেবার পর আরো প্রায় পঁচিশ মিনিট কথা বলার পর বন্ধুপত্নী বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে, এবারে রাখি, কেমন?

এই বলে ফোনটা রেখে বন্ধুপত্নী বসার ঘরে এসে বসলেন। তারাপদ আশায় ছিলো এবারে তাহলে এক কাপ চা মিলবে, কিন্তু আবার ফোন বেজে ওঠায় বন্ধুপত্নী উঠলেন ফোন ধরতে। বন্ধু তারাপদকে বললো, আবারও এক ঘন্টা চলবে, আজ আর আমার চা মিলবে না মনেহয় বুঝলি? কিন্তু বন্ধুর ভবিষ্যৎ বাণীকে অমলুক প্রমাণ করে বন্ধুপত্নী কুড়ি মিনিটের মধ্যে ফোন ছেড়ে দিয়ে এসে বসলেন বন্ধুর পাশে। বন্ধু প্রায় চোখ কপালে তুলে বলে উঠলো, হ্যাঁ গো, তোমার শরীর খারাপ নাকি? এত তাড়াতাড়ি কথা বলা শেষ হয়ে গেলো? বন্ধুপত্নী অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে বললেন, যত সব ফালতু কথা! আমার শরীর খারাপ হতে যাবে কোন দুঃখে! এটা রং নম্বর ছিলো, রং নম্বরের সঙ্গে কতক্ষণ কথা বলা যায়? 

আমি জানি, আমার কথা শুনে মহিলারা ভুরু কুঁচকে ফেলেছেন। কিন্তু এতে আমার কোনো দোষ নেই, আমি বোকাসোকা লোক, বেশি কথা বলা লোকেরা সুখী হন কি হন না, আমি জানি না, জ্ঞানী গুণী লোকেরা যা বলে গেছেন, সেগুলোই আউরে গেলাম শুধু।

আমার আরেক গুরু পরিমলদাও বলে, মেয়েরা অনেক বেশি সুখী। আর এই ব্যাপারে পরিমলদার যুক্তি, তুই পরিসংখ্যান নে, দেখবি মেয়েদের কখনো হার্টের অসুখ হয় না, বরং বৌদের চাপে বরদের হার্টের রোগ ক্রমশ বেড়ে চলছে। শুধু পরিমলদা কেন, আমার এক মাস্টারমশাই একদিন স্কুলে প্রশ্ন করেছিলেন, পৃথিবীতে কারা বেশি সুখী, তাতে এক ছাত্র বলেছিলো, স্যার, মেয়েরা বেশি সুখী, কারণ বিয়ের পরে ওদের বউ থাকে না। বোঝো কান্ড! আর মাস্টারমশাই ছাত্রকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, তুই বড় হয়ে নামকরা দার্শনিক হবি রে!

ইয়ার্কি থাক, এবারে আমি আবার মূল আলোচনায় ফিরে আসি। মিউনিখের একজন সাইকোথেরাপিস্ট স্টেফান লেরমারের বক্তব্য অনুযায়ী, শোক ও ‘অসুখ' মানুষের জীবনেরই অঙ্গ৷ আলো ও ছায়ার মতো৷ সুখ খুঁজতে হলে প্রয়োজন আত্মআবিষ্কার৷ ‘‘মানুষের নিজের চাহিদাটা জানতে হবে৷ জানতে হবে আমি কী চাই? আমার কাছে কী গুরুত্বপূর্ণ? ভোগ মানুষকে সুখী করতে পারে না৷ এটা বলা যায়, অন্যের সঙ্গে তুলনা করা সুখকে ধ্বংস করতে পারে৷ অন্যকে সুখী করতে পারলে নিজেও সুখ পাওয়া যায়৷''

শেষ করি সুখ কাকে বলে এটা নিয়ে একটা দার্শনিক গল্প বলে। জানি না গল্পটা আপনাদের পছন্দ হবে কিনা, তবু বলি। খুবই দুঃখ দুর্দশার মধ্যে দিয়ে জীবন কাটানো এক বণিক, শেষ বয়সে এসে তার ছেলেকে বললেন, জীবনে সুখের গোপনীয়তা খুঁজে বের করতে। বাবার কথায় ছেলেও বেরিয়ে পড়লো। জ্ঞানী মানুষের খোঁজে সে দিনের পর দিন রাতের পর রাত ঘুরে বেড়াতে লাগলো সাগর নদী মরুভূমি পেরিয়ে। এরকম ঘুরতে ঘুরতে একদিন এক পাহাড়ের উপরে এক জ্ঞানী মানুষের সন্ধান পেলো।

অনেক কষ্ট করে পাহাড়ের উপরে এক সুন্দর দূর্গের মধ্যে গিয়ে পৌঁছল। দূর্গের মধ্যে গিয়ে সে একটা হলঘরে অপেক্ষা করতে লাগলো। একদম শান্তশিষ্ট পরিবেশ। কেউ উচ্চবাচ্য করছে না। জ্ঞানী মানুষটির কাছে অনেক লোকের আনাগোনা। বিষাদ মুখ নিয়ে এসে অনেকেই হাসি মুখে ফিরে যাচ্ছে।

জ্ঞানী মানুষটি একটি বাদ্যযন্ত্র হাতে নিয়ে খুব মৃদু তালে টিং টিং শব্দ বের করছেন আর ভিড় করা মানুষের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন হাসি মুখে। বণিকের ছেলের মনে হলো সে এবারে সঠিক জায়গায় এসে পড়েছে। এবার জ্ঞানপুরুষকে জিজ্ঞেস করবে, জীবনের সুখের রহস্য কী? কী করে জগতের সমস্ত সুখের অধিকারী হওয়া যায়।

বণিকের ছেলেটি কয়েকঘন্টা অপেক্ষা করলো ভিড় কমে যাওয়ার আশায়। তারপর ভিড় কমে গেলে সে এগিয়ে গেলো জ্ঞানী মানুষটির কাছে। গিয়ে সব কথা খুলে বললো। জানতে চায়লো, কী করে চিরসুখী হওয়া যায়। এই দুঃখ দুর্দশা ভরা পৃথিবীতে কিভাবে সুখের অধিকারী হওয়া যায়।

সব শুনে, জ্ঞানী লোকটি বললো, 'দেখো বাবা এখন তো এইসব বুঝিয়ে বলার সময় নেই আমার কাছে, আমার খাবার সময় হয়ে গেছে। আমি যতক্ষণ ফিরে না আসি ততক্ষণ তুমি আমার পুরো দূর্গের ভেতরটা ঘুরে এসো। দেখার মত অনেক জিনিস আছে। যাওয়ার আগে এক কাজ করো' এই বলে জ্ঞানী লোকটি বণিকের ছেলের হাতে একটি চা চামচে ভর্তি করে তেল ঢেলে দিলেন। বললেন,' এই তেল ভর্তি চামচটি নিয়েই দূর্গ ঘুরতে হবে এবং খেয়াল রাখবে চামচ থেকে যেন তেল পড়ে গিয়ে দামী কার্পেট নষ্ট না হয়ে যায়।'

এরকম একটি অদ্ভূত ধরণের কাজের নির্দেশ পেয়ে, বণিকের ছেলে আশ্চর্য্য হয়ে গেলো। যাই হোক, সে দূর্গের মধ্যে বিভিন্ন সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করে দূর্গ ঘুরতে লাগলো। সে একবারও চামচের উপর থেকে নিজের নজর সরালো না। ঘন্টা দুয়েক পর সে ঘুরে এলো পুরো তেলভর্তি চামচ নিয়ে। মনে মনে সে খুব খুশি হল যে এক ফোঁটাও তেল সে ফেলেনি।

জ্ঞানী লোকটির কাছে ফিরে এসে সে তেলভর্তি চামচ দেখিয়ে বললো, সে পুরো দূর্গ দেখে ফেলেছে।

জ্ঞানী লোকটি বললেন, তুমি কি আমার বাগানটা দেখেছ যেটা তৈরী করতে ১০ বছর সময় লেগেছে। তুমি কি বারান্দার পেন্টিংগুলো দেখেছ যেগুলো প্রায় দুই হাজার বছর পুরোনো। তুমি কি আমার লাইব্রেরীর বই সম্ভার দেখেছ?

বিব্রত হয়ে বণিকের ছেলে স্বীকার করলো যে সে কিছুই দেখেনি। তাঁর একমাত্র উদ্বেগ ছিল যাতে জ্ঞানী লোকটির দেওয়া তেলে চামচ থেকে নীচে না পড়ে যায়।

'তুমি আবার ফিরে যাও.. আমার বাড়িই যদি চিনতে না পারো তাহলে আমাকে কী বুঝবে.. আর আমাকে বুঝতে না পারলে আমার উপদেশও তোমার মনে ধরবে না..' এই বলে আবার জ্ঞানী লোকটি চামচে তেল ঢেলে দিলেন। বণিকের ছেলেটি এবার চামচটি হাতে নিয়ে আবার দূর্গের মধ্যে ঘুরে বেড়াল। এবার সিলিং, দেয়াল বাগান, লাইব্রেরি সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মন দিয়ে দেখতে লাগলো। জ্ঞানী লোকটির সংগ্রহ দেখে সে আশ্চর্য হয়ে গেলো।

এবার সে খুব আনন্দের সাথে ফিরে এসে নিজে থেকেই বিস্তারিত ভাবে জ্ঞানী লোকটিকে তার অভিজ্ঞতা জানাতে লাগলো। বাগান, পেন্টিং, লাইব্রেরি সম্বন্ধে সবকিছু সে আগ্রহ নিয়ে শুনিয়ে দিলো।

জ্ঞানী লোকটি ধীর কন্ঠে বললেন, "তবে আমি যে তোমাকে চামচ ভর্তি তেল দিয়েছিলাম সেটা কোথায়?"

চামচের দিকে তাকিয়ে যুবকটি বুঝতে পারল যে সে চামচের তেলের দিকে খেয়াল রাখে নি, তাই তেল কোথায় যে পড়ে গেছে সেও জানে না।

জ্ঞানী লোকটি বলতে শুরু করলেন, "দেখো বাবা, এই একটি উপদেশই আমি তোমাকে দেবো.. পৃথিবীর সমস্ত আশ্চর্যগুলোই হলো 'সুখ' আর সেগুলো চোখ-কান-নাক ও স্পর্শের মাধ্যমে অনুভব করার মধ্যেই সুখের রহস্য নিহিত আছে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে প্রত্যেকটা মানুষের তার নিজের প্রতি, তার পরিবারের তার প্রতি সমাজের প্রতি অনেক অনেক দায়িত্ব আছে, অনেক অনেক কর্তব্য আছে - সেগুলোও পালন করে যেতে হবে।

বিশ্বের সমস্ত বিস্ময়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে যেন চামচের দু'ফোঁটা তেলের মতো দায়িত্ব কর্তব্য কখনই ভুলে না যাও....... "


------অমিত রায়