Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

" কবর " ০৪.০৮ ২০২৩
ইছামতি চোখের নাভী মূলে তখন মৌরলা উজ্জ্বলতা।রোদ পড়লে যেমন করে নড়ে ওঠে গুটি মল্লার,জাল ফেলার ছপাৎ শব্দে মনটা কেমন সঙ্গে সঙ্গে উঠোন মুখো হয়ে উঠলো।জল কলমীর ঠোঁটে তখনও ঘাটের বারংবার চুমু।ঘেসো গন্ধে ঝিমল…


 " কবর " 

০৪.০৮ ২০২৩


ইছামতি চোখের নাভী মূলে তখন মৌরলা উজ্জ্বলতা।রোদ পড়লে যেমন করে নড়ে ওঠে গুটি মল্লার,জাল ফেলার ছপাৎ শব্দে মনটা কেমন সঙ্গে সঙ্গে উঠোন মুখো হয়ে উঠলো।জল কলমীর ঠোঁটে তখনও ঘাটের বারংবার চুমু।ঘেসো গন্ধে ঝিমলির কথাও মনে পড়ে গেলো।মেলে দেওয়া ওর জামায় কদিন আগে কলাবতী ছোপ দেখেছিলাম।সাথে একটা সেফটিপিন লেগে আছে দ্বিতীয় ঘরে।

মাঠের সামনে টায় দাঁড়িয়ে একটু দূরের কাশবন দেখলে আমার মনে হয় ওর পেছনে শুয়ে আছে ঝিমলি। এখানে বারোমাস কাশ।বারোমাস নদী, জল , স্রোত, ভাঙন আর ঝিমলির শুয়ে থাকা।

দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল, বিকেল পেরিয়ে গোধূলি। আমার উঠোন মুখো মন তখন সত্যি সত্যি ঝিমলির শুয়ে থাকা ভুলে যায়। মাঝরাতে কান পাতলে শোনা যায় কোন কোনো সময়.... নদীটা এখনও হাঁটছে। চলার শব্দে কান পাতলে ঝুমুর গানের দু চার কলিও কানে ভেসে আসে। মনে হয়... ঝিমলি যেনো আর শুয়ে নেই এখন।

ভোর রাতে ট্রেন থামার শব্দে ঘুম ভেঙে যায়।রাতের ট্রেন যেনো কেমন!! ঠিক দিনের ট্রেনের মতো নয়। আফ্রিকার কালো জনজাতিদের যাপনের মতো মনে হয় রাতের ট্রেনটাকে। কিন্তু দিনের সেই একই ট্রেন....ঘর ছাড়া করে। বৈরাগী হতে বলে। 

ভোরের শুরুতেই এক এক করে হাঁড়ি গুলো নামে গাছ থেকে।সারি সারি নেশাতুর মাথার মতো দেখতে হাঁড়ি গুলো থেকে গন্ধ বেরোয় বাসি রাতের। দূরে সরে আসি।দেখি....জল কলমীর ঠোঁট গুলো আরও বাড়িয়ে রেখেছে। কিন্তু ঘাটের কোনো উত্তেজনা নেই।শিহরণ নেই।চুপ করে বসে থাকি নদীর পাশে, কাছে।ওর পিঠের দিকটা তখনও কালো। কিন্তু বুকটা বেশ ফর্সা হয়ে এসেছে। বুকের দিকে তাকিয়ে উবু হয়ে বসে থাকি।নড়ছে...অল্প অল্প করে নড়ে নড়ে বয়ে যাচ্ছে নদীর বুক। তাকিয়েই থাকি। আলতো করে বার কয়েক ছুঁয়ে দিই সেই বুক। পেছনের কাশ বনে কি যেনো একটা নড়ে উঠলো। ঝিমলি নয় তো!! ওর ঘুমটা কি ভেঙে গেলো তবে!! অপেক্ষা করি। পেছনে তাকাই না। শীতের রাতের মতো কি যেনো একটা বেয়ে ওঠে তখন আমার পিঠ জুড়ে।আমি শিথিল হয়ে আসি, আলগা হয়ে আসে মাটির নীচ, সরসর করে কি যেনো একটা মাটির নীচে এগোতে থাকে। কানের চারপাশে ঘুম এসে লাগে, মনে হয়.... এখুনি বোধহয় বুকের ওপর পড়ে যাবো, কিন্তু --- না। তেমন তো কিছু নয়। একটু পরেই বুকটা চকচক করে ওঠে। শুনতে পাই স্তন বৃন্ত ঠোঁটে নিয়ে কেউ যেনো শুষে নিচ্ছে কিছু একটা ---পরাগ, নয়তো রেণু, নয়তো দুধের মতো অমর খিদে । ঝিমলির বুকটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে।কাশের সব সাদা কি তবে ওর স্তনের.....!! দাঁড়িয়ে পড়ি। বুঝতে পারি অনেকক্ষণ ধরে বাথরুম চেপে রেখেছি আমি। তলপেটের নীচটা য় শক্ত হয়ে আসে, হাঁটতে ব্যাথা লাগে পিতৃ তর্পনের মাহেন্দ্রক্ষণে। 

খানিক এগোতেই সেই জাল ফেলার ছপাৎ শব্দ আর তারপরেই সারাবেলা জুড়ে রুহিঘ্রাণ। ঘুরতে বেরোলেও নল খাগড়ার টিপ্পনীতে গায়ে সরু সরু শুঁয়োপোকার লালা চিহ্ন। শুধু যেতে ভালো লাগে ঐ লাল বাড়িটায়।হলুদ কালো ডোরাকাটায় আমি একদিন একটা শঙ্খচূড় দেখেছিলাম ঐ লাল বাড়িটার উঠোনে। ভেঙে যাওয়া উঠোনের এক গর্তে বিদ্যুৎ গতিতে ঢুকে গেলো সেই শঙ্খচূড় টা। হলুদ রঙের বিষ তার। ঠোঁটের সামনে টা চকচক করে সবটা সময়। ঝিমলির দুই স্তনের মাঝখান দিয়ে বেয়ে উঠেছিলো সে। তারপর সুতীব্র চুমু দুই ভ্রুর মাঝখানে।যেখানটায় এখন কাশবন, সেখানে আগে আম জাম কাঁঠালের জঙ্গল ছিলো। ঝিমলিকে ঐখানে শুইয়ে দেওয়ার পর থেকেই সেখানে সাদা কাশের বন। বারোমাস।ঝিমলিও বারোমাস সেখানে শুয়ে থাকে।

আমার মনে আছে, ঝিমলির খোলা বুক জড়িয়ে আমি শুতে চেয়েছিলাম।ও কোনো দিন রাজি হয় নি।

আমি এখন ঐ হলুদ কালোয় মাখানো শঙ্খচূড়টাকে খুঁজছি। ভীষন ভাবে খুঁজছি। একবার তো দেখা পেয়েইছি।ওর সারা শরীরে নগ্ন ঝিমলি লেগে আছে। এখনও।ওর দেখা পেলে আমার নগ্ন শরীরে ওকে জড়িয়ে ধরে ওর থেকে ঝিমলিকে আলাদা করে দেবো। তারপর চলে যাবো কাশবনের ভেতরে। এখানে বারোমাস কাশ, বারোমাস নদী, জল, স্রোত, ভাঙন আর.. ঝিমলির -- থুড়ি, আমাদের শুয়ে থাকা।

____________________________________________