বাবলু বন্দ্যোপাধ্যায়। কোলাঘাটবর্ষাকালে স্বাভাবিকভাবেই মাঠ ঘাট আনাচ কানাচ জলে ডুবে যায়। বিশেষ করে গ্রামগঞ্জে খাল বিল নদী-নালা জলাশয় জলে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। মুশকিলে পড়ে সাপের বংশ। বিষধর থেকে নির্বিষ সাপেরা তাদের বাসা হারিয়ে …
বাবলু বন্দ্যোপাধ্যায়। কোলাঘাট
বর্ষাকালে স্বাভাবিকভাবেই মাঠ ঘাট আনাচ কানাচ জলে ডুবে যায়। বিশেষ করে গ্রামগঞ্জে খাল বিল নদী-নালা জলাশয় জলে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। মুশকিলে পড়ে সাপের বংশ। বিষধর থেকে নির্বিষ সাপেরা তাদের বাসা হারিয়ে উঠোনে বাকুলে গৃহস্থালী ঘর থেকে রাস্তাঘাটে আশ্রয় নেয়। সাপের উপদ্রব এবং অসাবধানাবশতায় সাপের ছোবলের ঘটনা ঘটে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটের শ্রমজীবী যুবক প্রলয় ঘোষ সাপ অন্ত প্রাণ। কোথাও সাপ বেরিয়েছে জানতে পারলে যত কঠিন কাজ থারুক না কেন সাপ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে চলে যায় সেই স্থানে। বহু সচেতনশীল মানুষ আশপাশের বিষধর সাপ বের হলে তাকে ডেকে আনে। কৈশোর বেলা থেকেই সর্প প্রেমিক। ওর কথাটা এইরকমই পৃথিবীটা কেবল মানুষের জন্য নয় জীবজগতের উপর ও নির্ভরশীল। সবাইকে বেঁচে থাকতে হবে। সাপ আক্রান্ত না হলে আক্রমণ করে না। প্রলয় সাপুড়েদের দেখে এবং নেটে এই বিষয়ে ইউটিউব দেখে সাপ ধরার পারদর্শী হয়ে উঠেছে। কোলাঘাটের আশপাশের গ্রামে কোথাও মাছ শিকারি মুরগি থেকে কারো ঘরের গাদা জঞ্জাল কারো আবার বাড়ির ভেতর থেকে সাপ উদ্ধার করে চলেছে। গত দু'মাসের প্রায় ১৭ টি বিষধর এবং লুপ্তপ্রায় প্রজাতির সাব উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে এসেছে। উদ্ধার করে নেওয়া আসার পর প্রথমেই খবর দেয় বন দপ্তরে। তবে অভিযোগ করেন কখনোই ওনারা সময় মত আসে না। দু চারদিন পর্যন্ত প্রলয় ওই সাপগুলো বাড়িতেই প্লাস্টিক জারে ভরে যত্ন করে রেখে দেয় এবং দেখাশুনা এবং খাওয়া দাওয়া সম্পূর্ণটাই নিজের হাতে করে। বেশ কিছুদিন পর বন দপ্তরের কর্মীরা এলে তাদের হাতে সাপগুলি তুলে দেয়। বেশ কয়েকদিন ধরে প্রায় ছয় ফুটের তেঁতুলে খরিস, গোখরো, চন্দ্রবোড়ার মত বেশ বড় মাপের বয়স্ক এবং ছোট সাপ রয়েছে। অনেক আহত সাপের চিকিৎসা করে সুস্থ করে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেয়। তবে এ বিষয়ে পারিশ্রমিকের দাবি করে না। প্রলয়ের কোথায় বিষধর সাপ দেখলেই কিছু মানুষ মেরে ফেলতে চায়, খুবই দুঃখজনক। কোলাঘাট নতুন বাজারের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সাপ ধরার লাঠি স্নেক স্টিকার, সম বেশ কিছু সরঞ্জাম কিনে দিয়েছে। ওই ক্লাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা রইল। মানুষের কাছে অনুরোধ করেছেন সাপ বেরোলে জানান মারবেন না উদ্ধার করে নিয়ে আসব প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে সবাই মিলে এগিয়ে আসুন। প্রলয়ের বাড়ি কোলাঘাট থানার আঁড়র গ্রামে।