ভাবের পাহাড় মালবিকা মজুমদার
যখন আকাশ ঘিরে মেঘের নাচন,ঋতুর দাপাদাপি।জলের ছাটে ভাঙে ঘুম বুকে স্বপ্ন একঝাপি। । সামলে রাখা আদখাওয়া রুটি, ভীষণ জল চুপচুপ।শিরায় শিরায় কান্না আর অযুতদুঃখ থাকে মজুত।কোন ইচ্ছে ই যে হয় না পূরণ,ওরা আক্ষেপ গ…
ভাবের পাহাড়
মালবিকা মজুমদার
যখন আকাশ ঘিরে মেঘের নাচন,
ঋতুর দাপাদাপি।
জলের ছাটে ভাঙে ঘুম বুকে স্বপ্ন একঝাপি। ।
সামলে রাখা আদখাওয়া রুটি,
ভীষণ জল চুপচুপ।
শিরায় শিরায় কান্না আর অযুত
দুঃখ থাকে মজুত।
কোন ইচ্ছে ই যে হয় না পূরণ,
ওরা আক্ষেপ গেলে রোজ।
ওদের আনতে নুন পান্তা ফুরোয়,
খুঁজে আনা কলমি শাকেই ভোজ।
ইচ্ছে ছিলো তাদের ও অনেক দেখবে সমুদ্র পাহাড়,নদী জল। চাঁদের নয় গো,মাটির সাথে টিকে থাকার ছল।
ওরা যুদ্ধ করে মেঘের সাথে,
জীবন কাটে পথের রথে।
ওরা ডোবার জলে সাঁতরে ভাবের নদী করছে পার।
ঢিপির উপর বেঁধে মাঁচা চড়ছে ভাবের পাহাড়।
ওদের স্বপ্নে আসে প্রতিদিন, রঙিন যত সাঁধ।
হবে না পূরণ জেনেই তারা রেখেছে সব বাদ।
দু মুঠো জুটলে পেটে ওরা চাঁদের বিছানা পাতে।
পৃথিবী টা হাতের মুঠোয়, ভেবে নেয় রোজ রাতে।
শুভ সকাল
২৯~০৮~২০২৩
🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳
রেড কার্পেট
মালবিকা মজুমদার
যাদের শিরদাড়ার সাব ওয়ে তে রোদ ঢোকেনি কোন দিন,
মজ্জায় মজ্জায় অনুগ্রহের তেলে চুপচুপ করে।
এক ঠান্ডা ঘর থেকে আরেক ঠান্ডা ঘরের মাঝে প্যারোডির রেড কার্পেট পেতে দেবো।
ওরা জলার ধারের গুগলির মতো,প্রতিদিন সংখ্যায় বাড়ছে।
অধঃস্তনের আলমারিতে আয়না বন্দক রেখে
বারুদে হোলি খেলতে যায়।
যেদিন দুয়ারে দুয়ারে ভাতার কল পৌছে যাবে,
হাত পাতলেই ভাতা পড়বে সে কলে।
সেদিন মনুষ্যত্ব বলে একটি বিলুপ্ত শব্দের সেমিনার হবে।
🥀🥀🥀🥀🥀🥀🥀🥀🥀🥀🥀🥀
অগ্নিলা -১
মালবিকা মজুমদার
---------------------
অগ্নিলা, এখন আর আমাদের কথা হয়না।
যোগাযোগ বলতে চেনা সংখ্যার সারি।
বহুদিন এক সাথে জীবনমুখি গান গাইনি ,
কতদিন হলো তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখিনি,
এতো লোক পৃথিবীতে ,
শুধু , তোমার জন্যই হাহাকার করে মরছি।
মাঝে মাঝে তোমাকে ছাড়া হৃদপিন্ড টা শরীর ছেড়ে দিতে চায়।
নিজেকে মনে হয় গাছের মতো,
চারদিক যেন শূন্যতার , ইজারা নিয়েছে ।
বাড়ির চার দেওয়াল উঠোন সব অপরিচিত লাগে।
আয়নায় প্রতিবিম্ব,জলে নিজের ছায়া নেই অগ্নিলা , তোমাকেই দেখছি।
দেখে আৎকে উঠি।
বাতাসে জলে নিজের সব জায়গায় তোমার জন্য দুঃখ মিশে আছে।
সব যেন শ্মশানের মতো ভয়ঙ্কর চুপ।
গলার ভিতরে কষ্ট দলা পাকিয়ে আছে।
অথচ ,কোন গল্পকথা নেই।
এই যে না থাকার হাহাকার, তুমি সেটা কি কখনও বুঝতে চেষ্টা করেছো!
আমার ভিতরে তুমি সম্পৃক্ত হয়ে ছিলে।
অথচ তোমার ভিতরে আমার কোনো অস্তিত্বই নেই।
তোমাকে ছাড়া কোন কিছুই সম্পূর্ণ নয়।
থাকলে তুমি জানতে, বাতাসের মতোই তুমি কতোটা জুড়ে আছো।
কেন বুকের ভিতর যন্ত্রণা হয়?
সবাইকে ছাড়া বাঁচা যায় , যে সব, সবকিছু তাকে ছাড়া বাঁচা যায় না।
কেন বোঝ না ? এমনি এমনি তুমি দূরে চলে যাওনি, বেয়াড়া অভিমান আমাকে নিয়ে যাচ্ছে।
অগ্নিলা, আমি তোমাকে, শুধু তোমাকেই আঁকড়ে থাকতে চেয়েছিলাম।
অবেলায় কি বেশি চেয়ে হারিয়ে ফেললাম ,জানিনা !
কিছুই জানিনা ।
এইসব আমার অসমাপ্ত গল্প ।
তোমার জন্য প্রতীক্ষায় আমার মতো অন্য কেউ থাক ।
তুমি অন্য কোন পথে এগিয়ে যাও ,
আমার এখন একমাত্র গন্তব্য মৃত্যু, আমি তার প্রতীক্ষা করছি।
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
মৃতের স্তুপ
মালবিকা মজুমদার
এখানে কাল বেলা সরে না কত কত বছর ধরে।
বহমান সময়ের হাতে রুদ্রবীণা
সময়ের জাহাজে মাস্তুলের ওপর বসে লুটেরা পাইরট।
মনে মনে আওড়ায় সেই অর্থহীন শব্দের কবিতা।
অনুগতরা শব্দের শেল নিয়ে ঘুরছে হাতে হাতে,
শ্রমের পাঁজরের সব রক্ত শোষন করবে।
ঐ দেখো বৃত্তবান ফেরিওয়ালা বিক্রির জন্য
লেখা আঁকা গান ছবি সব নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছে।
লোভের ঝুলি কাঁধে নিয়ে মানুষের ভালো করা যায়?
সেবা আর বানিজ্য যে একপাতে পরে না।
প্রাচীন সেই গুহাবাসীদের মতো
ভাষাহীন এপ,
অন্যের গ্রাস কেড়ে শুধু নিজের জন্য বেঁচে থাকার কৌশল জানে।
সংসার সমাজ জাতি দেশ কিছুই নেই।
স্বার্থপরতার নগ্ন জীবন।
সর্বহারার জন্য মিছিলে হাঁটার লোক নেই।
বুদ্ধিজীবী রা নিজেকে নিয়ে ভাবতে শিখে গেছে।
আজ কাল তাই আর মোমবাতি মিছিল হয় না...
যে কবিতা ইতিহাস গড়ে,
খিদের জ্বালায় সেসব লেখা ভুলে গিয়ে শীতঘুমে বারোমাস।
ভুলে গেছে আরো অনেক কিছুই
মনুষ্যত্ব ন্যয় নীতি।
ধ্বংষের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে।
ক্ষমতা ই একমাএ যেন টিকে আছে কুমিরের মতো মুখ হা করে পাড়ে শিকারের অপেক্ষায়।
বাকি সব মৃতের স্তুপ।