Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাশিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

#রকিং চেয়ার#সুস্মিতা#বিভাগ-গল্প৯.৯.২০২৩ রহস্য উপন্যাসটা বড্ড টানছে মালিনীকে। "খুনটা কে করল?" প্রত্যেকটা চরিত্রই সন্দেহজনক। খুনের মোটিভও আছে প্রত্যেকের কাছে। অফিসে বসেও কাজে মন বসছে না মালিনীর। কতক্ষণে যে বাড়ি ফিরতে পারব…

 


#রকিং চেয়ার

#সুস্মিতা

#বিভাগ-গল্প

৯.৯.২০২৩

 

 রহস্য উপন্যাসটা বড্ড টানছে মালিনীকে। "খুনটা কে করল?" প্রত্যেকটা চরিত্রই সন্দেহজনক। খুনের মোটিভও আছে প্রত্যেকের কাছে। 

অফিসে বসেও কাজে মন বসছে না মালিনীর। কতক্ষণে যে বাড়ি ফিরতে পারবে। আজ রাতের মধ্যেই শেষ করতে হবে উপন্যাসটা। জানতে হবে আসল খুনী কে? 

বাবার মতোই বই পড়ার নেশা হয়েছে মেয়েটার। বড় আলো জ্বালিয়ে রকিংচেয়ারে বসে দুলে দুলে বই পড়তেন মালিনীর বাবা। সেখানে এখন আর কেউ বসে না।


গতকাল রাত দেড়টা পর্যন্ত বাবার বিছানায় শুয়ে বইটা পড়ে, বাবার শোওয়ার ঘরেই সেটা রেখে এসেছে মালিনী। চারশো সতেরো নম্বর পাতায় নিজের হাতে বানানো পেজমার্ক দিয়ে। 

উপন্যাসের শেষটা জানার জন্য সারাদিন মনের ভেতরে ছটফটানি...।


রাত আটটার সময় অফিস থেকে বেরিয়েই বাড়ির দিকে দৌড় লাগলো মালিনী। পঁয়তাল্লিশ মিনিটের পথ আজ আর শেষ হতেই চায় না। কলকাতা শহরের অফিস ফেরত জ্যামে আরও দশ মিনিট সময় নষ্ট হল। বাসে জানলার ধারের সিটে বসে মালিনী তখনও রহস্য উপন্যাসের চরিত্রদের সঙ্গে মনেমনে  কথা বলছে। হাতড়ে বেড়াচ্ছে আসল খুনীকে।


বাড়ি পৌঁছতে রাত প্রায় ন'টা বেজে গেল।ফাঁকা ফ্ল্যাটে ঢুকতে বড্ড কান্না পায় মালিনীর। তার বইপড়ুয়া বাবা তিনমাস হল তাকে একেবারে একা করে দিয়ে চলে গিয়েছেন না ফেরার দেশে। এক সন্ধ্যায় হঠাৎই জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত বাবা এই উপন্যাসটাই পড়ছিলেন। বইটা আর শেষ করে যেতে পারেননি।


ফ্ল্যাটের দরজা খুলেই মালিনী সোজা এগিয়ে গেল বাবার ঘরের দিকে। ঘরের বড় আলোটা জ্বলতে দেখে নিজের ওপরেই একটু বিরক্ত হল সে- ইশ অফিসে বেরোনোর আগে আলোটা নেভাতে ভুল হয়ে গিয়েছিল তবে, সারাদিন শুধু শুধু...। মেহগনি কাঠের স্টাডিটেবিলের ওপর মোটা বইটা রাখা। 

সেটা হাতে নিয়েই এবার চমকে গেল মালিনী-"পেজমার্কটা পাল্টে গেল কিভাবে?" চারশো সতেরো নম্বর পৃষ্ঠা ওর স্পষ্ট মনে আছে। সারাদিন ওই সংখ্যাটা মাথার মধ্যে ঘুরেছে।    

ভীষণ অবাক লাগে মালিনীর। 


পাশে রাখা রকিং চেয়ারটা তখনও ছন্দময় গতিতে দুলছে।


*****